০২ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৭:১৭:৩২ পূর্বাহ্ন
রথের মেলায় আনন্দের আমেজ
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-০৬-২০২৩
রথের মেলায় আনন্দের আমেজ

মেঘাচ্ছন্ন আকাশ। টিপটিপ বৃষ্টির মধ্যে দিয়ে শুরু হলো রথযাত্রা। ফুল পাতা দিয়ে সুসজ্জ্বিত রথে চেপে জগন্নাথদেব যাবেন মাসির বাড়ি। সাথে যাবেন ভাই বলরাম ও বোন সুভদ্রা ।


আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়ে থাকে। বৃষ্টিকøান্ত প্রকৃতিতে দিনটি সেজে ওঠে নিজস্ব ঢঙে, আপন ছন্দে। মূল অনুষ্ঠান হয় দুদিন। সোজারথ ও উল্টোরথ। তবে রথের অন্য এক বড় আকর্ষণ রথের মেলা।


রাজশাহীতে প্রত্যেক বছরের ন্যায় এইবারও শুরু হয়েছে রথযাত্রা। সাথে সাতদিন ব্যাপী রথের মেলা। মেলাটি বসে কল্পনা হলের মোড় থেকে সাগরপাড়া বটতলার মোড় পর্যন্ত।


মেলায় দেখা মিলছে কারুকাজ খচিত মাটির তৈরি হাঁড়ি-পাতিল, পুতুলসহ ছোটদের খেলনা। এছাড়াও পাওয়া যায় স্বল্পমূল্যের কাঠের আসবাবপত্র ও ঘর গোছানোর সামগ্রি।


মেলার মূল আকর্ষণ সুস্বাদু খাবার। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য জিলাপি, পাঁপড়, নিমকি, বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি, ফুচকা ইত্যাদি। মেলার মনোমুগ্ধকর পরিবেশের সাথে দেখা যায় দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়।


তবে এরই মাঝে মেলার কেনা-বেচায় বাগরা দিচ্ছে বৃষ্টি। বুধবার সন্ধ্যায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে মহানগরীর সাগরপাড়ায় বসা ঐতিহ্যবাহী এই রথমেলায় গিয়ে দেখা যায়, মানুষের আনাগোনা একেবারেই কম।


মেলার ঠিক মাঝামাঝি স্থানে আমিনুলের দোকান। সামানে পানি জমেছে। সেই পানি স্টিলের বাটি দিয়ে দোকানের সামনে থেকে ‘সেচে’ রাস্তার উপর ফেলছেন আমিনুলের ছেলে শামীম। পেছনে মন খারাপ করে বসে আছেন তিনি।


আমিনুল বলছিলেন, তিনি ১৩ বছর ধরে এই মেলায় আসেন। মেলা চলে আট থেকে নয় দিন পর্যন্ত। তাই পরিবার সঙ্গে নিয়ে আসেন। দোকানের মধ্যেই কোনোমতে রাত কাটান সবাই। দিনে চলে বেচাবিক্রি।


এখানে এক সপ্তাহ ব্যবসা করলে যা আয় হয় তা দিয়ে তিন-চার মাস কেটে যায় তার। তবে বৃষ্টিতে এবার বেচা-কেনায় কিছুটা প্রভাব পড়তে পারে বলে শঙ্কা করেন আমিনুল।


রাজশাহী নগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার ঘোষ জানান, রথের শুরুতে নগরীর চারটি মন্দিরে একযোগে পূজা অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলে হয় রথ যাত্রা। হিন্দু সম্প্রদায়ের সকলে মিলে টেনে নিয়ে যান এই রথ।


রথের দড়ি টানার ফলে মানুষের আয়ু বাড়ে ও বিভিন্ন সমস্যার সমাধান পেয়ে থাকে মানুষ। মেলায় রথের সামনে ঢাকঢোল, বাদ্য, কাঁসার ঘন্টা ও নারীদের উলু আর শঙ্খ ধ্বনির মধ্য দিয়ে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব সম্পন্ন হবে।


গত ২০ জুন থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত চলবে রথের এই মেলা। সেদিন উল্টো রথের মাধ্যমে শেষ হবে রথ।

শেয়ার করুন