৩০ অক্টোবর ২০২৪, বুধবার, ১১:০৪:৫৪ অপরাহ্ন
সাফে স্বপ্নভঙ্গ বাংলাদেশের
  • আপডেট করা হয়েছে : ০১-০৭-২০২৩
সাফে স্বপ্নভঙ্গ বাংলাদেশের

শক্তিমত্তায় বাংলাদেশের চেয়ে বেশ এগিয়ে কুয়েত ফুটবল দল। কিন্তু পুরো ম্যাচজুড়ে দারুণ লড়াইয়ে সেটি ভুলিয়ে দিচ্ছিলেন জামাল ভূঁইয়ারা। নির্ধারিত ৯০ মিনিট পর্যন্ত একের পর এক আক্রমণে তারা কুয়েত রক্ষণের পরীক্ষা নিয়েছেন। দুর্দান্ত সব সেভ দিয়ে গোলবার সামলেছেন আনিসুর রহমান জিকো। কিন্তু ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে গড়াতেই বাংলাদেশ খেই হারায়। ১০৫ মিনিটের একমাত্র গোলটি বাংলাদেশকে সাফ থেকে বিদায় করে দিয়েছে।


এর আগে গোলশূন্য সমতার পর ম্যাচটি গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। প্রথমার্ধের নির্ধারিত ১৫ মিনিট শেষ হতেই চতুর্থ রেফারি দুই মিনিট ইনজুরি সময় দেন। যার প্রথম মিনিটেই গোল হজম করে বাংলাদেশ। সংঘবদ্ধ আক্রমণে বক্সের মধ্যে বল ঠেলে দেন কুয়েত মিডফিল্ডার। সেখানে কুয়েত ফুটবলার আব্দুল্লাহর মার্কিংয়ে ছিলেন পরীক্ষিত ডিফেন্ডার তপু বর্মণ। কিন্তু তিনি চার্জে আসেননি আবার ঠিকমতো ব্লকও করতে পারেননি। ফলে তপুর পায়ের ফাঁক দিয়ে আব্দুল্লাহর শট জড়ায় বাংলাদেশের জালে।



ম্যাচের একমাত্র গোলের পর কুয়েত ফুটবলারদের উদযাপন

গোলরক্ষক জিকো পুরো ম্যাচজুড়ে বেশকিছু অসাধারণ সেভ করেছেন। তবে এই গোলে জিকোর কোনো দায় নেই। নির্বাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা ছাড়া তার কিছুই করার ছিল না।


খেলা শেষ হয়েছে মিনিট কয়েক। তখনও বক্সে বসে রইলেন উইঙ্গার রাকিব। অন্য খেলোয়াড়রাও আনমনে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে। ১২০ মিনিট লড়াই করে কুয়েতের বিপক্ষে ০-১ গোলের হারের পর এমন চিত্র বাংলাদেশ দলের। ম্যাচ হারলেও হৃদয় জয় করেছেন জামাল-মোরসালিনরা।


নির্ধারিত ৯০ মিনিটে খেলা ছিল গোলশূন্য। অতিরিক্ত ত্রিশ মিনিটে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের ইনজুরি সময়ে গোলে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশের কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা দুটি পরিবর্তন করেন। স্ট্রাইকার সুমন রেজা নামার পর কয়েকটি আক্রমণও করে বাংলাদেশ। ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে রাকিবের একটি শট পা দিয়ে ঠেকান কুয়েতের গোলরক্ষক। সমতা আনতে ব্যর্থ হলে টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় নেয় বাংলাদেশ।


২০০৩ সালের পর বাংলাদেশ অতিরিক্ত সময়ে ম্যাচ খেলল। ২০০৩ সাফের সেমিফাইনালে ঢাকায় অতিরিক্ত সময়ের ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে জিতেছিল বাংলাদেশ। তখন ছিল গোল্ডেন গোল নিয়ম। মতিউর মুন্নার গোলে বাংলাদেশ ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে। সেই ২০ বছর পর বাংলাদেশ অতিরিক্ত সময়ে খেলে আজ জিততে পারেনি। অতিরিক্ত সময়ে অবশ্য সেই বাংলাদেশকেও দেখা যায়নি। ফিটনেস ও অতিরিক্ত সময়ে খেলার অনভিজ্ঞতাই এর মূল কারণ।



ম্যাচজুড়ে বেশ কিছু দারুণ সেভ করেছিলেন গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো

নির্ধারিত ৯০ মিনিট বাংলাদেশ দুর্দান্ত ফুটবলই খেলেছে। বিশেষ করে ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই বাংলাদেশ গোলের সুযোগ পেয়েছিল। গত দুই ম্যাচে গোল করা তরুণ ফুটবলার মোরসালিন রাকিবের বাড়ানো বলে গোলরক্ষককে একা পেয়েও প্লেসিং করতে পারেননি। এরপর কুয়েত কয়েকটি আক্রমণ করে। ডিফেন্ডার ইসা ফয়সাল একটি গোললাইন সেভ করেন প্রথমার্ধেই।


দ্বিতীয়ার্ধে সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। মোরসালিনের বাড়ানো বলে রাকিব বক্সে প্রবেশ করে গোলরক্ষককে পরাস্ত করে শটও নিয়েছিলেন। এবার বাধা হয়ে দাড়ায় ক্রসবার। 


কুয়েত র‌্যাংকিং এবং শক্তিমত্তায় এগিয়ে। মাঠের খেলাতেও সেটা প্রমাণ হয়েছে। অসংখ্য আক্রমণ ও গোলের সুযোগ তৈরি করেছে তারা। বাংলাদেশের গোলরক্ষক আনিসুর রহমান গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচে একটু গড়পড়তা পারফরম্যান্স করলেও সেমিফাইনালে ছিলেন পুরো উল্টো। কুয়েতের ফরোয়ার্ডদের বিপক্ষে নিজেই দাঁড়িয়েছিলেন প্রাচীর হয়ে। জিকোর দৃঢ়তাতেই ম্যাচটি মূলত অতিরিক্ত সময়ে গড়ায়।


সেমিফাইনাল ম্যাচটিতে হয়েছে স্নায়ুযুদ্ধও। ক্ষণে-ক্ষণে উত্তপ্ত হয়েছে দুই দলের ডাগআউট। বাংলাদেশের এক সহকারী কোচ লাল কার্ড ও আরেক সহকারী কোচ হলুদ কার্ড দেখেছেন। যার রেশ ধরে ম্যাচ শেষে রেফারিকে ঘিরে ধরেছিলেন বাংলাদেশের ফুটবলাররা। এ সময় দুই দলের কোচ-কর্মকর্তারা দুই দলের ফুটবলারদের বিবাদ ছোটাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে রেফারি আরেকটি লাল কার্ড দেখান।

শেয়ার করুন