২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ০১:৪৭:৩২ পূর্বাহ্ন
বিএনপি-জামায়াতের পুরোনো মামলায় বাড়তি গতি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১২-০৭-২০২৩
বিএনপি-জামায়াতের পুরোনো মামলায় বাড়তি গতি

বিএনপি, জামায়াতসহ সমমনা দলগুলোর নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে হওয়া পুরোনো মামলার তদন্তে ফের গতি আনছে পুলিশ। এ জন্য পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পুলিশের বিশেষ ইউনিট ও জেলা পুলিশের কাছে মামলাসংক্রান্ত প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে। যদিও পুলিশ সদর দপ্তরের দাবি, মামলার বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া এবং তদন্তের অগ্রগতি জানতে চাওয়া একটি রুটিন ওয়ার্ক।

আওয়ামী লীগ বলছে, অভিযুক্ত বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীদের নামের তালিকা বিদেশের বিভিন্ন দূতাবাস ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনে জমা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে বিএনপির অভিযোগ, আওয়ামী লীগের হাতে আর কোনো অস্ত্র নেই বলে তারা পুরোনো মামলা সচল করে আন্দোলন দমন করতে চাইছে।

জানা গেছে, ২০১৩ সাল থেকে অগ্নিসন্ত্রাস, গুরুতর অপরাধ ও পুলিশ হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলার তদন্তের অগ্রগতি জানাতে জেলা পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। গত ২৪ জুন পুলিশ সদর দপ্তর এ-সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা দেয়। এতে অগ্নিসন্ত্রাস, পুলিশ হত্যা ছাড়াও মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীসংক্রান্ত কোনো মামলা তদন্তাধীন আছে কি না, তাও জানাতে বলা হয়েছে। এসব মামলার কতটির অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে, কতটি বিচারাধীন, কতগুলো তদন্তাধীন, তাও জানতে চেয়েছে পুলিশ সদর দপ্তরের ক্রাইম বিভাগ।

পুলিশ সদর দপ্তরের অপরাধ ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) জয়দেব ভদ্র আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একেক সময় একেক ধরনের মামলা নিয়ে আমরা বসে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি। কখনো ডাকাতির মামলা, কখনো ছিনতাই মামলা, কখনো চুরির মামলা। একই সভায় সবকিছু আলোচনা করা যায় না। তাই আলাদা আলাদা সভা করে নির্দেশনা দেওয়া হয়। অগ্নিসংযোগ, পুলিশ হত্যার পুরোনো মামলা নিয়েও সম্প্রতি আমাদের সভা হয়েছে। এটি রুটিন ওয়ার্ক।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ সদর দপ্তরের ওই নির্দেশনায়, পুলিশ হত্যা, বাসে পেট্রলবোমা মেরে যাত্রীদের হত্যা, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের বিষয়ে হওয়া মামলার তদন্ত দ্রুত শেষ করে অভিযোগপত্র দিতে বলা হয়েছে। কোনটি কী কারণে তদন্তে দেরি হচ্ছে, তাও জানাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া যেসব মামলা বিচারাধীন, সেগুলোতে সাক্ষী উপস্থিত করা এবং পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তাদের নির্দিষ্ট সময়ে সাক্ষ্য দিতে বলা হয়েছে, যাতে বিচার শেষ হয়। বিচার শেষ হওয়ার পর অভিযুক্ত ব্যক্তিদের তালিকা করা হতে পারে। এসব তালিকা বিভিন্ন বিদেশি দূতাবাস ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনে জমা দেবে আওয়ামী লীগ, যাতে বিএনপি ও জামায়াতকে ধ্বংসাত্মক দল হিসেবে প্রমাণ করতে পারে ক্ষমতাসীন দলটি।

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীতে এক রাজনৈতিক কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান বলেছেন, ‘যারা নির্বাচন হতে দেবে না, আওয়ামী লীগ তাদের লিস্ট (তালিকা) মার্কিন সরকারের কাছে দেবে। নির্বাচনে বাধা দিলে বিএনপির বিরুদ্ধেই মার্কিন ভিসা নীতি কার্যকর হবে।’

বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনকে সামনে রেখে বিরোধী দলকে মাঠছাড়া করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই পুরো মামলাগুলো সচল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ফৌজদারি এসব মামলায় বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ নেতা ও কর্মী অভিযুক্ত হলে তাঁরা নির্বাচনে অযোগ্য হবেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকারের হাতে আর কিছু নাই। জনসমর্থন হারানো আওয়ামী লীগ মামলা-হামলা-ষড়যন্ত্র দিয়ে ভোট চুরির প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চায়। এই উদ্যোগ আওয়ামী লীগের ভোট চুরির প্রকল্পেরই একটি অংশ।’

শেয়ার করুন