লক্ষ্মীপুরে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ যুবদল কর্মী সজিব হোসেন নিহত হয়েছেন। এ সময় জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হাসান মাহমুদ ইব্রাহিমসহ ৫০ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছে দুই শতাধিক নেতা–কর্মী বলে দাবি বিএনপির।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে শহরের রামগতি সড়কের আধুনিক হাসপাতালের সামনে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষ হয়।
পরে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে শহরের বিভিন্ন স্থানে। বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে নেতৃত্বে দিয়েছেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া। নিহত যুবদল কর্মী সজিব হোসেন সদর উপজেলা চরশাহী ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য বলে জানিয়েছেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব সাহাবুদ্দিন সাবু।
পুলিশ ও বিএনপির নেতা–কর্মীরা জানায়, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার বেলা তিনটার দিকে জেলা বিএনপির উদ্যোগ শহরের গোডাউন রোডের বিএনপি নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর বাসভবনের সামনে থেকে পদযাত্রা বের করে বিএনপির নেতা–কর্মীরা। পদযাত্রাটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ঝুমুর স্টেশনের দিকে যাচ্ছিলেন। মিছিলটি রামগতি সড়কের আধুনিক হাসপাতালের সামনে গেলে পুলিশ বাধাঁ দেয়। এতে নেতা–কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়।
এ সময় জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হাসান মাহুমদ ইব্রাহিম, যুবদল কর্মী সজিব হোসেনসহ অন্তত ৫০ নেতা–কর্মী গুলিবিদ্ধসহ আহত হয় দুই শতাধিক নেতা-কর্মী। এ ছাড়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সহেল রানা ও সদর থানার ওসি মোসলেহ উদ্দিনসহ ৫০ পুলিশও আহত হয়। একপর্যায়ে দুইটি মোটরসাইকেলসহ দুইটি হাসপাতালসহ কয়েকটি দোকান ভাঙচুর করা হয়।
সড়কে আগুন জালিয়ে বিক্ষোভ করে নেতা–কর্মীরা। পরে আহতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর গুলিবিদ্ধ যুবদল কর্মী সজিব হোসেন মারা যায়। অন্য আহতদের সদরসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ঘটনার পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী জানান, বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে বিনা উস্কানীতে পুলিশ বাধা দেয় এবং এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে যুবদল নেতা সজিব হোসেন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। দুইশর বেশি নেতা-কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন গুরুতর। তবে পাখির মতো গুলি করে নেতা-কর্মীদের হত্যা করে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। আন্দোলন চলবে। হাসিনার পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরে যাবে না বিএনপি।
এদিকে পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ বলেন, ‘বিএনপির নেতা–কর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা করে। পরে পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি চালায়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সোহেল রানা ও সদর থানার ওসি মোসলেহ উদ্দিনসহ ৩০ পুলিশ সদস্য আহত হয়। আহতদের সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে সজিব নামে এক যুবক নিহত হয়।’