২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ০৮:৫৭:১৯ অপরাহ্ন
রাজনীতিবিদেরা দুর্নীতিতে লিপ্ত হলে পুরো সমাজ অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে: হাইকোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৬-০৭-২০২৩
রাজনীতিবিদেরা দুর্নীতিতে লিপ্ত হলে পুরো সমাজ অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে: হাইকোর্ট

রাজনীতিবিদরা দুর্নীতিতে লিপ্ত হলে পুরো সমাজ অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট। দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর ৯ বছরের সাজা বহালের পূর্ণাঙ্গ রায়ে এমন পর্যবেক্ষণ দেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের বেঞ্চ। 


এর আগে টুকুর ৯ বছরের সাজা বহাল রেখে গত ৩০ মে রায় দেন হাইকোর্ট। ওই রায়ের ২৭৩ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি বুধবার প্রকাশিত হয়েছে। এই রায়ের অনুলিপি বিচারিক আদালতে যাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে টুকুকে আত্মসমর্পণ করতে হবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। 


হাইকোর্ট রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি নিতে হবে। অনেক রাজনৈতিক নেতা এবং হাইপ্রোফাইল ব্যক্তি বিভিন্ন দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে। রাজনীতিবিদরা জনগণ ও দেশের কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করার লক্ষ্যে রাজনীতিতে জড়িত হন। এটি জনগণ ও দেশের কল্যাণের জন্য এক ধরনের মহান ত্যাগ ও নিষ্ঠার কাজ। রাজনীতি টাকা উপার্জনের কোনো মাধ্যম হতে পারে না। বৈধ ব্যবসা এবং অন্যান্য পেশার আশ্রয় নিয়ে অর্থ ও সম্পত্তি অর্জনের অনেক উপায় রয়েছে।


আদালত বলেন, দুর্নীতি সমস্ত লিঙ্গ, বয়স এবং বর্ণের মানুষকে প্রভাবিত করে এবং এটি দরিদ্র এবং দুর্বল গোষ্ঠীকে সবচেয়ে বেশি আঘাত করে। দেশের জনগণ বিশেষ করে দায়িত্বশীল স্টেকহোল্ডারদের একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করা উচিত, যে তারা কেবল দুর্নীতির শিকারই নয়, এর বিরুদ্ধে সংগ্রামের মূল খেলোয়াড়ও। দুর্নীতিবাজরা তাদের সমালোচকদের চুপ করতে এবং চুরি করা সম্পদ লুকানোর জন্য একে অপরকে সাহায্য করে। তাদের বিরুদ্ধে একসঙ্গে কাজ করার সময় এসেছে। 


হাইকোর্ট বলেন, আপনি যদি বাংলাদেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে চান, তাহলে একসঙ্গে লড়াই করতে হবে। দুর্নীতিবাজদের আইনের আওতায় আনার জন্য একটি কার্যকর ও শক্তিশালী ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। হিসাব দেওয়ার দায়িত্ব থাকতে হবে এবং আইনের বিধান অনুসরণ করে ব্যবস্থা নিতে হবে। বাল্যকাল থেকেই শিশুদের সততা এবং অসততার মধ্যে পার্থক্য করতে শেখানো উচিত বলে উল্লেখ করা হয় রায়ে।


৪ কোটি ৯৬ লাখ ১১ হাজার ৯১৬ টাকার সম্পত্তির হিসাব ও আয়ের উৎস গোপন করার অভিযোগে দুদক ২০০৭ সালে সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী টুকুর বিরুদ্ধে মামলা করে। ওই বছরের ১৫ নভেম্বর বিচারিক আদালত এ মামলায় রায় দেন। রায়ে টুকুকে ৯ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে হাইকোর্ট ২০১১ সালের ১৫ জুন তাকে খালাস দেন। 


তবে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে দুদক আপিল করলে ২০১৪ সালে খালাসের রায় বাতিল করে পুনঃশুনানির আদেশ দেন আপিল বিভাগ। আপিল বিভাগের ওই আদেশ রিভিউ চেয়ে আবেদন করলে তা খারিজ হয়ে যায়। এরপর বিষয়টি হাইকোর্টে পুনরায় শুনানি হয়। শুনানি শেষে গত ৩০ মে বিচারিক আদালতের সাজা বহাল রেখে রায় দেন হাইকোর্ট।



শেয়ার করুন