আবাসিক ও শিল্প গ্রাহকদের জন্য প্রিপেইড মিটার সিস্টেমের মাধ্যমে গ্যাস বিতরণ ও ব্যবহারের দক্ষতা উন্নয়নে বংলাদেশের জন্য ৩০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তার অনুমোদন দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। বাংলাদেশী মুদ্রায় এ অর্থের পরিমাণ প্রায় ৩ হাজার ২১০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১০৭ টাকা ধরে)। গ্যাস বিতরণের সঙ্গে মান শৃঙ্খলে মিথেন নির্গমন কমাতে সহায়তা এই অর্থ ব্যয় করা যাবে।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে প্রধান কার্যালয়ে এই অর্থ অনুমোদন করে বিশ্বব্যাংক। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে সংস্থার ঢাকা অফিসও। বিশ্বব্যাংক জানায়, গ্যাস খাতে দক্ষতা উন্নয়ন এবং গ্যাস সঞ্চালনে কার্বন হ্রাস, ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্কে প্রাকৃতিক গ্যাস লিকেজ ও ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলা করতে এই অর্থ সহায়ক হবে। এছাড়া আবাসিক ও শিল্প ব্যবহারকারীদের ব্যবহারে অপচয় কমবে এবং নেটওয়ার্ক মনিটরিং ক্ষমতা শক্তিশালী করবে। এ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগে ১২ লাখের বেশি প্রিপেইড গ্যাস মিটার স্থাপন করা হবে। তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের আবাসিক গ্রাহকদের ৫৪ শতাংশ, রাজশাহী বিভাগের জন্য এক লাখ ২৮ হাজার এবং ঢাকায় ১১ লাখ প্রিপেইড মিটার স্থাপন করা হবে। যার আওতায় পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের (পিজিসিএল) সব আবাসিক গ্রাহক চলে আসবেন। এর আওতায় বৃহত্তর শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য ৫০টি স্মার্ট মিটার চালু করা হবে।
সংস্থাটি আরও জানায়, গ্যাস প্রবাহ পর্যবেক্ষণ উন্নত করতে ও গ্যাসের লিকেজ কমাতে পিজিসিএল’র নেটওয়ার্কে একটি সুপারভাইজরি কন্ট্রোল অ্যান্ড ডেটা অ্যাকুইজিশন এবং জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম ইনস্টল করা হবে। এর মাধ্যমে গ্যাসের লিকেজ শনাক্ত এবং মেরামত করার জন্য গ্যাস নেটওয়ার্কে আরও ভালো পর্যবেক্ষণের সঙ্গে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানো সম্ভব হবে। বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানোর লক্ষ্য রয়েছে। প্রকল্পটি আবাসিক ও শিল্পে প্রাকৃতিক গ্যাসের অপচয় কমাতে এবং গ্যাসের পাইপলাইনে লুকায়িত মিথেন নির্গমন কমাতে সাহায্য করবে।
বাংলাদেশের গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের সবচেয়ে বড় উৎস তেল ও গ্যাস খাত। এ প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র এনার্জি স্পেশালিস্ট সামেহ আই মোবারেক বলেন, প্রিপেইড গ্যাস মিটার এবং উন্নত মনিটরিং সিস্টেম প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার সবটুকু ব্যবহার, মিথেন লিকেজ প্রশমিত করতে সহায়তা করবে। একই সঙ্গে গৃহস্থালী এবং শিল্প ব্যবহারকারীদের জন্য গ্যাসের বিল কমাতে সহায়তা করবে। প্রকল্পটি প্রাকৃতিক গ্যাসের মান শৃঙ্খল বরাবর কার্বন-ডাই-অক্সাইড এবং মিথেন নির্গমন উৎস শনাক্ত করতে প্রযুক্তিগত সহায়তা দেবে।