২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৫:৫৫:০৬ অপরাহ্ন
মুশফিকদের চেনা ক্যান্ডি অচেনা হবে না তো
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৯-০৮-২০২৩
মুশফিকদের চেনা ক্যান্ডি অচেনা হবে না তো

পরনে তাঁর মাইকেল জর্ডানের বিখ্যাত ‘২৩’ নম্বর জার্সি। সঙ্গে সতীর্থ মেহেদী হাসান মিরাজ। ক্যান্ডির সৌন্দর্যে মুগ্ধ মুশফিকুর রহিম ছবিটা গতকাল পোস্ট করেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। এই মুগ্ধতা ছড়ানো ক্যান্ডি আর এই শহরের পাল্লেকেলে আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম মুশফিকের কাছে নতুন নয়।


মুশফিক প্রথম এই মাঠে পা রাখেন ২০১২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। ১১ বছরে এই মাঠে বাংলাদেশ তিনটি টি-টোয়েন্টি, দুটি টেস্ট আর একটি ওয়ানডে খেলেছে—প্রতিটিতেই দলে ছিলেন মুশফিক। এই দলের মুশফিকই একমাত্র সদস্য, যিনি পাল্লেকেলেতে বাংলাদেশের হয়ে প্রতিটি ম্যাচই খেলেছেন। মাঠটা তাঁরই সবচেয়ে ভালো চেনা থাকার কথা। আরও একটি কারণে এই মাঠ মুশফিকের কাছে ‘বিশেষ’—২০১৩ সালের মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বৃষ্টিভেজা ম্যাচে ডি-এলে দারুণ এক জয় এসেছিল, যেটি তাঁর অধিনায়কত্বে। ‘হুম, মনে আছে’—হোয়াটসঅ্যাপে সংক্ষিপ্ত এক বার্তায় এভাবেই মুশফিকের স্মৃতিরোমন্থন।


১০ বছর পর সেই পাল্লেকেলেতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আরেকটি লড়াই, তবে উপলক্ষ ভিন্ন। এবার এশিয়া কাপের মঞ্চ। দুই বছর আগে এই মাঠে রানের বন্যা দেখে আসা বিসিবির প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু আজকের পত্রিকাকে বললেন, ‘সেই পাল্লেকেলে আর নেই এখন। অনেক বদলে গেছে। ওখানে টেস্ট খেললাম না আমরা? তখন ব্যাটিং ট্র্যাক ছিল। তবে এবার একটু পরিবর্তন থাকবে। দেখুন, ওদের ঘরের মাঠে খেলা তো।’


ক্যান্ডির এই মাঠে নিয়মিত ভালো রান ওঠার রেকর্ড থাকলেও এবার সেটির ব্যত্যয় ঘটার যথেষ্ট কারণ আছে। বিসিবির আরেক নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন গত মাসে ‘এ’ দলের সঙ্গে গিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কায়। ইমার্জিং এশিয়া কাপ চলার সময় তিনি দেখেছেন, শ্রীলঙ্কায় এখন কী মাত্রায় ক্রিকেট হচ্ছে। করোনা মহামারির পর সৃষ্ট অর্থনৈতিক ক্রান্তিকাল কাটিয়ে উঠতে দেশটি এখন মরিয়া প্রতিটি খাত থেকে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ে। তাদের এই প্রচেষ্টার অংশ হয়েছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটও। তারা নিজেদের ক্রিকেট তো বটেই, অন্য দলকেও আহ্বান জানাচ্ছে তাদের মাঠ ব্যবহারের।


আর তাতেই মাত্রাতিরিক্ত ক্রিকেট হচ্ছে শ্রীলঙ্কায়। নির্বাচক হাবিবুলের ধারণা, পাল্লেকেলের উইকেট আগের মতো ব্যাটিংবান্ধব না-ও হতে পারে। তাঁর যুক্তি, ‘ওখানে অনেক বেশি খেলা হচ্ছে। বেশি বেশি ব্যবহার হচ্ছে উইকেটগুলোর। ইমার্জিং এশিয়া কাপের সময়েই শুনেছি, ওদের এক কিউরেটর বলছিলেন, এখন শ্রীলঙ্কায় অনেক বেশি ক্রিকেট হচ্ছে। বেশি ব্যবহারে উইকেট ক্লান্ত হয়ে যায়। সব খেলা নিচ্ছে ওরা। অনেক দল শ্রীলঙ্কায় যাচ্ছে। অন্য বোর্ডের নিরপেক্ষ সিরিজ, অনূর্ধ্ব-১৯, নারী দলের খেলা, অনুশীলন হচ্ছে সেখানে। আগে যে মাঠে মাসে ৫টা ম্যাচ হতো, সেখানে এখন হচ্ছে ১৫টা। উইকেট আগের মতো নেই। আসলে এত কম সময়ে এত বেশি ক্রিকেট আগে ওখানে হয়নি।’


অবশ্য এশিয়া কাপে সব যে ব্যবহৃত উইকেটে খেলা হবে, তা নয়। এশিয়া কাপের ভারত-পাকিস্তান কিংবা এমন গুরুত্বপূর্ণ বা বড় ম্যাচগুলোর জন্য কিছু উইকেট তারা আলাদা রেখেও দিচ্ছে। যেন ম্যাচগুলো জমজমাট হয়। সাকিব আল হাসান কদিন আগে যেমন বলছিলেন, লঙ্কান প্রিমিয়ার লিগের (এলপিএল) মূল উইকেটে তাঁরা খেলার সুযোগ পাননি। মুশফিকের মতো দলে যাঁদের আগেই পাল্লেকেলেতে পা পড়েছে, তাঁদের কাছে চেনা মাঠ অচেনা যেন না হয়, সেভাবেই তৈরি হয়ে নামতে হবে।


শেয়ার করুন