২৪ নভেম্বর ২০২৪, রবিবার, ০৮:১৯:৫০ পূর্বাহ্ন
চূড়ান্ত ধাপেও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির চিন্তা বিএনপির
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩০-০৮-২০২৩
চূড়ান্ত ধাপেও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির চিন্তা বিএনপির

নভেম্বরের শুরুতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল হতে পারে—এটা ধরে নিয়ে চলমান এক দফার আন্দোলনের চূড়ান্ত ও শেষ ধাপে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে বিএনপি। এর অংশ হিসেবে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে রাজধানী-কেন্দ্রিক কর্মসূচি দিতে চায় বিএনপিসহ সমমনা দল ও জোটগুলো। শেষ ধাপেও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দেওয়ার পরিকল্পনা বিএনপির। তবে দলের নেতারা বলছেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় ভিন্ন কৌশলের বিষয়টিও পরিকল্পনায় রাখা হয়েছে।


বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে দীর্ঘদিন আন্দোলন করছে বিএনপিসহ সমমনা দল ও জোটগুলো। গত ১২ জুলাই সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের দাবিতে এক দফার আন্দোলন শুরু করে দলগুলো। এবার আন্দোলনকে শেষ ধাপে নিতে চায় তারা।


গতকাল মঙ্গলবার পুরান ঢাকার সূত্রাপুরে ‘গুমের শিকার’ দলীয় নেতা-কর্মীদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করার পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘গণতান্ত্রিক কর্মসূচি অনুসরণ করে বর্তমান সরকারকে আমরা বিদায় দেব। সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের নির্বাচিত সরকার এ দেশে ফিরিয়ে আনব।’


এক দফার আন্দোলনে শরিক গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা হাসনাত কাইয়ুম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অহিংস আন্দোলনের একটা নতুন ধারা এবার সৃষ্টি হয়েছে। এই ধারা বজায় রেখেই আগামী দিনের কর্মসূচি পালনের পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, এর মাধ্যমেই এবার নতুন ধরনের এক বিজয় অর্জিত হবে।’


বিএনপির একাধিক সূত্র বলছে, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্য এখন বিদেশে অবস্থান করছেন। সিঙ্গাপুরে থাকা মির্জা ফখরুল ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের সেপ্টেম্বরের শুরুতে দেশে ফেরার পর আন্দোলনের চূড়ান্ত ধাপ নিয়ে শেষ পর্যায়ের আলোচনা শুরু হবে। তবে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন সেপ্টেম্বরে ফিরবেন কি না, নিশ্চিত নয়। যোগাযোগ করা হলে গতকাল আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘শারীরিক অবস্থা এখন অনেকটা ভালোর দিকে। সেপ্টেম্বরেও এখানে থাকতে হতে পারে।’ সিঙ্গাপুরে দলের মহাসচিবের সঙ্গে তাঁর দেখা ও আলাপ হয়েছে বলে জানান তিনি।


বিএনপির নেতারা বলছেন, এইচএসসি পরীক্ষার কারণে ১৫ সেপ্টেম্বরের পর ছাড়া বড় কোনো কর্মসূচি পালন করা সম্ভব নয়। তাই ১৫ সেপ্টেম্বরের পর থেকে অবস্থান, ঘেরাওসহ বড় কর্মসূচি দেওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। তবে পরিস্থিতি অনুযায়ী অবরোধ, এমনকি হরতালের প্রস্তাবও আছে। এর আগে ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানসহ কিছু রুটিন কর্মসূচি পালিত হবে।


বিএনপির নেতারা আরও বলছেন, চূড়ান্ত ধাপের আন্দোলনে তাঁরা ছাত্র, পেশাজীবী, শ্রমজীবী, সংস্কৃতিকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে চান। সমমনা দলগুলোর সঙ্গে এ বিষয়ে আগেই আলোচনা হয়েছে। ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে দলগুলো কাজ করছে। ১৯৯০-এর আদলে সর্বদলীয় ছাত্র পরিষদ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আগামী সপ্তাহে সাংস্কৃতিক কর্মীদের নিয়ে একটা প্ল্যাটফর্ম করার পরিকল্পনা রয়েছে। একই সঙ্গে শ্রমজীবী ও পেশাজীবী সংগঠনগুলোকেও সমন্বয়ের চেষ্টা চলছে।


বিএনপি বলছে, হামলা, মামলা ও গ্রেপ্তারকে এই আন্দোলনের পথে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন তাঁরা। আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস সামনে রেখে গতকাল নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, গত ২৮ জুলাই থেকে বিএনপির কর্মসূচি ঘিরে সারা দেশে ১ হাজার ৬২০ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসব কর্মসূচিতে হামলায় অন্তত ১ হাজার ২৫০ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। এই সময়ে ১৩ হাজার ৪৩০ জনকে বিভিন্ন মামলায় আসামি করা হয়েছে। 


পরে গুম প্রতিরোধ দিবসে আজ বুধবার ঢাকা মহানগরসহ দেশের সব জেলা ও মহানগরে মুখে কালো কাপড় বেঁধে কালো ব্যানারসহ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেন রিজভী।


শেয়ার করুন