রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডের মেঝে ময়লায় ভরা। তেলাপোকার আনাগোনা। অপরিচ্ছন্ন শৌচাগার। দুর্গন্ধে নাকে-মুখে কাপড় গুঁজে চলাচল করছেন রোগী ও স্বজনেরা। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, শয্যাসংখ্যার দ্বিগুণ রোগী হওয়ায় এমন হচ্ছে। সমাধানের চেষ্টা চলছে।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা গেছে, কোনো শয্যা খালি নেই। মেঝেতেও গাদাগাদি করে শুয়ে আছেন রোগী। ওয়ার্ডের রোগীর শয্যাগুলোতে তেলাপোকার ছড়াছড়ি। সেগুলো রোগীর শরীরে ও খাবারে ওঠানামা করছে। যেখানে-সেখানে ময়লা, অপরিচ্ছন্ন শৌচাগার। মেঝেতে ঘুরে বেড়াচ্ছে বিড়ালছানা। রোগী ও স্বজনেরা অভিযোগ করছেন, বারবার বলার পরও এসবের কোনো প্রতিকার হচ্ছে না।
ওই ওয়ার্ডে ভর্তি রোগী জাপান মিয়ার স্বজন বেদানা বেগম অভিযোগ করে বলেন, অসুস্থ রোগীর অনেক সময় মুখ হাঁ থাকলে তেলাপোকা ঢুকে যায়। হাসপাতাল থেকে দেওয়া খাবার খাওয়ার উপযোগী নয়। বিড়ালের উপদ্রব তো আছেই।
হাসপাতালের বেডে শুয়ে তেলাপোকা মারছিলেন মিঠাপুকুরের রতন মিয়া। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘ভাই, রোগীর আগে হাসপাতালের সেবা জরুরি। ১০ দিন থাকি তেলাপোকার যন্ত্রণায় শুয়ে থাকতে পারছি না। পানি নাই, টয়লেট নষ্ট। খুব কষ্টে আছি।’
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের রোগীর শয্যার তাকে রাখা জিনিসপত্রে তেলাপোকার উপদ্রব। ছবি: আজকের পত্রিকা
অন্তত ১৫ জন রোগী ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এসব দুর্ভোগের পাশাপাশি চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের কাছে জিম্মি তাঁরা। বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ট্রলিতে করে রোগী নিচে নামানো-ওঠানো বাবদ সর্বনিম্ন ২০০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা আদায় করেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে হুমকি দেন, করেন হয়রানি।
জানতে চাইলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. ইউনুস আলী বলেন, ‘ওয়ার্ডের সমস্যার কথাগুলো ওয়ার্ড মাস্টাররা আমাদের জানালে ব্যবস্থা নিই। টয়লেট নষ্টের বিষয়টি গণপূর্তকে অবহিত করা হবে। অন্য সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।’ চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া অবৈধ। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।