খেলা শুরুর আগে গতকাল এক ধারাভাষ্যকারকে দেখে ব্যাটিং নক রেখে দৌড়ে ছুটে এলেন মুশফিকুর রহিম। এসেই তাঁকে জড়িয়ে ধরলেন। কিছুক্ষণ পর এলেন রঙ্গনা হেরাথ। হেরাথ যেতেই তাঁর কাছে ছুটে এলেন সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশ অধিনায়ক রসিকতায় মেতে উঠলেন ধারাভাষ্যকারের সঙ্গে। প্রেমাদাসার প্রেসবক্স থেকে তাঁকে পেছনে দেখে ঠিক বোঝা যাচ্ছিল না, তিনি আসলে কে?
একটু ঘুরে তাকাতেই চেনা গেল—শ্রীধরন শ্রীরাম। হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা দিতেই তিনি ফিরতি বার্তায় বললেন, ‘আপনাকেও তো আমি দেখেছি।’ জানালেন, এশিয়া কাপে তামিল ভাষায় ধারাভাষ্য দিচ্ছেন। বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের সঙ্গে এত সখ্য দেখে তাই প্রশ্নটা জেগেছে, কে এই ধারাভাষ্যকার। এবার একচোট হাসলেন শ্রীরাম, ‘কাম অন!’ সাকিবের সঙ্গে কী নিয়ে মজা করছিলেন, সেটিও বললেন, ‘তেমন কিছু নয়, সাধারণ কথাবার্তা। ওকে বললাম, বাংলাদেশের তরুণ খেলোয়াড়দের আমি অনেক পছন্দ করি; বিশেষ করে হৃদয়-শান্ত।’
ধারাভাষ্য হতে পারে শ্রীরামের খণ্ডকালীন কাজ। কোচিংয়ের সঙ্গে তিনি এখনো জড়িয়ে। কালই যেমন জানা গেল, তিনি আগামী আইপিএলে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ফ্র্যাঞ্চাইজি লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসে জাস্টিন ল্যাঙ্গারের সহকারী হিসেবে কাজ করবেন।
গত বছর এশিয়া কাপের আগে আকস্মিকভাবে পরামর্শক হিসেবে শ্রীরামকে বাংলাদেশ দলে অন্তর্ভুক্ত করেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তাঁর সঙ্গে সাকিবের ‘জুটি’ জমেও ছিল বেশ। শ্রীরামও বললেন, ‘হ্যাঁ, আমাদের সঙ্গে দারুণ বোঝাপড়া, একে অন্যকে ভালো পাই।’ বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে দুটি ম্যাচ জিতেছিল। পরে অবশ্য বিসিবির সঙ্গে তাঁর আলোচনা হয়েছিল লম্বা মেয়াদে কোচ হওয়ার। আইপিএল প্রতিশ্রুতিসহ আরও কিছু বিষয়ে ব্যাটে-বলে না মেলায় বিসিবির সঙ্গে অধ্যায়টি তাঁর আর দীর্ঘ হয়নি। তবে তাতে সাবেক শিষ্য আর সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্কে নিশ্চয়ই মরচে ধরে না।
তো কেমন উপভোগ করছেন এশিয়া কাপের ধারাভাষ্য? ‘দুর্দান্ত’—শ্রীরামের এককথায় উত্তর। বাংলাদেশ পারবে শ্রীলঙ্কার দেওয়া ২৫৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে? ইনিংস বিরতিতে শ্রীরাম আশাবাদীই ছিলেন, ‘অবশ্যই সম্ভব।’ সাবেক শিষ্যদের উপর শ্রীরামের আস্থা থাকলেও ভারতীয় কোচের আশাটা পূরণ করতে পারেননি সাকিব–মুশফিকরা।