২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ০২:৩০:১৮ অপরাহ্ন
ওষুধেও মরছে না ৯ শতাংশ জীবাণু: গবেষণায় তথ্য
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৮-০৯-২০২৩
ওষুধেও মরছে না ৯ শতাংশ জীবাণু: গবেষণায় তথ্য

দেশে প্রায় ৯ শতাংশ জীবাণু সব ধরনের ওষুধ (অ্যান্টিবায়োটিক) শতভাগ প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ওষুধপ্রতিরোধী হয়ে উঠেছে ‘সিউডোমোনাস’। এই জীবাণুটি মূলত হাসপাতালে পাওয়া যায়। এরপরই আছে ই-কোলাই। বাংলাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালের নমুনা নিয়ে বছরব্যাপী পরিচালিত এক গবেষণায় এই ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে।


গবেষণায় দেখা গেছে, ১ হাজার ১৪৯টি নমুনার মধ্যে ৮ দশমিক ৬১ শতাংশ নমুনার জীবাণু সব ধরনের ওষুধপ্রতিরোধী হয়ে উঠেছে।যেসব নমুনায় এই জীবাণু পাওয়া গেছে, তার ৩৯ দশমিক ৫ শতাংশই ক্ষতস্থানের নমুনা। অন্যদিকে একাধিক ওষুধপ্রতিরোধী জীবাণু পাওয়া গেছে ২০ বছরের নিচে রোগীর মধ্যে ২৯ দশমিক ২ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ রোগী ৫১ দশমিক ৪ শতাংশ। এসব রোগীর মধ্যে ৭১ দশমিক ৮ শতাংশের অ্যান্টিবায়োটিক বা জীবাণুপ্রতিরোধী ওষুধ গ্রহণ করার ইতিহাস আছে। তাদের মধ্যে ৩৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ রোগীই চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করেছেন।


বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জীবাণুর ওষুধপ্রতিরোধী হয়ে ওঠার অর্থ হলো অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতিরোধক্ষমতা ফুরিয়ে যাওয়া। এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে, এমন জীবাণুর কারণে মানবজীবন হুমকিতে পড়তে পারে। সাধারণ রোগেও মানুষের মৃত্যু হবে। চারপাশে প্রচুর ওষুধ থাকার পরও জীবন বাঁচানোর মতো ওষুধ মিলবে না।


ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ এই গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে। গবেষণার বিষয়বস্তু ও উদ্দেশ্য হলো বিভিন্ন ধরনের ক্লিনিক্যাল নমুনা থেকে প্রাপ্ত ওষুধপ্রতিরোধী রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া আলাদা করে তার জিনরহস্য উন্মোচনের মাধ্যমে অ্যান্টিবায়োটিক বা জীবাণুপ্রতিরোধী ওষুধের যৌক্তিক ব্যবহারের গুরুত্ব তুলে ধরা।


২০২২ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৩ সালের মে পর্যন্ত পরিচালিত গবেষণায় ৮টি সরকারি মেডিকেল কলেজ ও ৪টি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ১৩ হাজার ৩৫০টি প্রাথমিক নমুনা সংগ্রহ করা হয়।


গবেষণার কো-ইনভেস্টিগেটর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারের সহকারী অধ্যাপক ডা. সানজিদা ইরিনা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গবেষণায় সব ধরনের ওষুধপ্রতিরোধী জীবাণু পাওয়া গেছে সিউডোমোনাস। এর পরই রয়েছে ই-কোলাই। এই গবেষণায় সবচেয়ে বেশি নমুনা নেওয়া হয়েছে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট থেকে। আমরা এখানে সেটাই দেখাতে চেয়েছি যে জীবাণুগুলো শতভাগ ওষুধপ্রতিরোধী হয়ে উঠেছে।’


গবেষণায় দেখা গেছে, অণুজীব সবচেয়ে বেশি ২৫ দশমিক ৪১ শতাংশ ছিল সিউডোমোনাসে। জীবাণুগুলোর মধ্য থেকে আয়ন টরেন্ট জিনোম সিকোয়েন্স দিয়ে দৈব চয়নের মাধ্যমে ৩২টি জীবাণুর টার্গেট জিনোম সিকোয়েন্সিং সম্পন্ন করা হয়। গবেষণায় এমন ৩০ ধরনের ওষুধপ্রতিরোধী জীবাণুর জিন পাওয়া গেছে, যেগুলো সব ধরনের ওষুধপ্রতিরোধী হয়ে উঠেছে। এর অধিকাংশই বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো স্বাস্থ্য বিভাগে শনাক্ত করা হয়েছে।


শেয়ার করুন