০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ১১:২৯:১২ অপরাহ্ন
বিএনপির এই আন্দোলন দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার পতন করা সম্ভব না : লিটন
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৩-০৯-২০২৩
বিএনপির এই আন্দোলন দিয়ে আওয়ামী  লীগ সরকার পতন করা সম্ভব না : লিটন

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের পুনঃনির্বাচিত মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, শুধুমাত্র পোশাক শিল্প রপ্তানির উপর নির্ভরশীল না থেকে আরো অনন্ত ১০টি আইটেম রপ্তানি করার ক্ষেত্র তৈরির চেষ্টা করছে সরকার। বর্তমানে বাংলদেশ উন্নত বিশ্বেও ওষুধ রপ্তানি করছে।


বাংলাদেশ জাহাজ নির্মাণ করছে, এখন হয়তো এই খাতটি বড় হয়নি তবে আগামীতে আরো অনেক বড় জাহাজ তৈরি করবে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী ফ্রিল্যান্সিং খাতকেও গুরুত্ব দিয়েছেন। ইতোমধ্যে অনেক ফ্রিল্যান্সার তৈরি হয়েছে দেশে। রাজশাহীতে অনেকে ফ্রিল্যান্সিং করে ডলার আয় করছেন। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হয়েছে। এভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছেন তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


রাজশাহী মেডিকেল কলেজ অডিটোরিয়ামে জাতীয় শ্রমিক লীগ, রাজশাহী জেলা ও মহানগরের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন-২০২৩ এর প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।


শুরুতে জাতীয় সঙ্গীতের সাথে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা এবং ব্যানার-ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়। সম্মেলনে উদ্বোধক ছিলেন জাতীয় শ্রমিক লীগের কার্যকরী সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আলাউদ্দিন মিয়া। সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য এবং যুব মহিলা লীগের সদস্য ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় শ্রমিক লীগ, রাজশাহী মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলহাজ্ব মো. ওয়ালী খান।


আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করানোর জন্য দেশি-বিদেশী নানা চক্রান্ত চলছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা তাঁর মধ্যে তো পিতার একটা দৃঢ়তা আছে, আমরা লক্ষ্য করছি একটা একটা করে বাধা তিনি কাটিয়ে আসছেন, বাধা কেটে যাচ্ছে। আমার মনে হয়, বিএনপি যতই বলুক তারা আর পনের দিন পরে বিরামহীন আন্দোলন করবে, এই বিরামহীন আন্দোলন তারা গত ৭ বছর ধরে করছে, এখনো তারা একথাটি কেন বলছে, তাদের বলতে লজ্জা করছে না কেন? তবে এই আন্দোলনে যে সরকার পতন হয় না, অন্তত আওয়ামী লীগ সরকারকে পতন করা যায় না, এটি তাদের বোঝা উচিত ছিল। সে কারণে কারো মধ্যে দ্বিধা রাখবেন না, সবাই জাগ্রত থাকবেন, শেখ হাসিনার ডাকে যা করণীয় করতে হবে।


আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আমাদের রপ্তানি আয়ের বড় খাত তৈরি পোশাক শিল্প। গার্মেন্টস মালিকেরা চাইলে তাদের শ্রমিকদের মজুরি বাড়াতে পারেন। কিন্তু তারা তা করেন না। সেই মালিকদের রয়েছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট। আমরা দেখেছি তাদের কাছে অনেক সরকারও ছিল অসহায়। একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে দেখলাম দৃঢ়তা, যিনি তাদেরকে ডেকে এনে বলেন, মাসে প্রত্যেক শ্রমিককে নূন্যতম এই নির্দিষ্ট পরিমান মজুরি দিতে হবে, আমার জানামতে বর্তমানে নূন্যতম মজুরি ৮ হাজার ৫০০ টাকা। এটিও যথেষ্ট নয়, আরো বেশি হওয়া দরকার এবং সেখানে যারা চাকরি করেন সেটিও নিশ্চয়তাও দরকার।


রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, জাতির পিতার অসমাপ্ত কাজ একটা একটা করে পূরণ করছেন তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আপনাদের দেখতে হবে বাবার সঙ্গে মেয়ের কর্মের যে ধারাটা, যে ধারাবাহিকতা মাঝে ২১ বছরের জন্য ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। জিয়াউর রহমান নামক এক দস্যু, এক দুর্বৃত্ত, সে এসে রাজনীতিকে গণমুখী করার নাম করে লুটপাট করে, হত্যার রাজনীতি করে বাংলাদেশর অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়ে চলে গেছে। তারপরে এরশাদ সাহেবের কথা নাই বললাম। নেত্রী শেখ হাসিনা এসেছিলেন বলেই আজকে বাংলাদেশ এভাবে এগিয়ে যাচ্ছে।


সম্মেলনের উদ্বোধক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আলাউদ্দিন মিয়া বলেন, দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনপ্রিয় ব্যক্তি, মানুষ তাকেই ক্ষমতায় দেখতে চায়।। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় না নিয়ে এসে আমরা আর ঘরে ফিরব না। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আমরা আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের বিজয়ী করে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রত্যয় ব্যক্ত করছি। রাজশাহী জেলা ও মহানগরে যারা নেতৃত্বে আসবেন, তারা সবাই আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন।


তিনি আরো বলেন, আমি বিএনপির মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে বলতে চাই আওয়ামী লীগকে ভয় দেখিয়ে লাভ নাই। বাংলার মানুষ এখন অনেক সচেতন। বাংলার মানুষ মনে করে শেখ হাসিনা সরকার, বারবার দরকার।


সম্মেলনের প্রধান বক্তা ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়ন ও মানুষের কল্যানে কাজ করে যাচ্ছেন। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার দেশের শ্রমজীবী মানুষের জীবন-মান উন্নয়ন ও কল্যাণে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। চা শ্রমিকদের মজুরি বাড়িয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।


তিনি আরো বলেন, শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে সব সময় কাজ করে শ্রমিক লীগ। রাজশাহী জেলা ও মহানগর শ্রমিক লীগে যারা নেতৃত্বে আসবেন, তারা শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করতে কাজ করে যাবেন বলে প্রত্যাশা করি।


জাতীয় শ্রমিক লীগ, রাজশাহী জেলার সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. আবদুল্লাহ খানের সঞ্চালনায়  সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো.মোস্তাক হোসেন, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মো. আব্দুস সোহেল, জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান আকন্দ, সহ-সভাপতি এ্যাড. মো. হুমায়ুন কবির, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহাম্মদ, দপ্তর সম্পাদক এটিএম ফজলুল হক, মহিলা বিষয়ক প্রমিলা পোদ্দার, কার্যকরী সদস্য মো. আমজাদ আলী খান। সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষে দ্বিতীয় অধিবেশন জাতীয় শ্রমিক লীগ, রাজশাহী জেলা ও মহানগরের বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে নতুন কমিটি গঠন করা হয়।


নতুন নেতৃত্ব পেলেন যারা: জাতীয় শ্রমিক লীগ, রাজশাহী মহানগরের সভাপতি পদে মাহাবুব আলম (জি.পি.ও) এবং সাধারণ সম্পাদক পদে আকতার আলী (রেলওয়ে) সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া সম্মেলনে সহ-সভাপতি পদে জহুরুল ইসলাম ও সেলিম রেজা বায়রুন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে রাশেদুজ্জামান রাশেদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে আফজাল হোসেনের নাম ঘোষণা করা হয়।

আর জাতীয় শ্রমিক লীগ, রাজশাহী জেলার সভাপতি পদে আব্দুল্লাহ খান পুনরায় সভাপতি নির্বাচিত হয়েছে। আর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন আবু বক্কর। সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দের নাম ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।


শেয়ার করুন