ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ‘ঘ’ ইউনিটে মেধা তালিকায় ৫ম স্থান পেয়েও জালিয়াতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগে বাদ পড়া সেই ছাত্রীকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আইন বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। এনিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। আইন অনুষদে ওই ছাত্রী জালিয়াতির মাধ্যমে চান্স পেয়েছে বলে অভিযোগ উঠলেও বিষয়টি নিয়ে কোন যাচাই করা হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই ছাত্রী রাবির অন্য ইউনিটে পরীক্ষায় ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করতে পারেন নি। এমনকি ফেল করেছে সে। অন্যদিকে ঢাবিতে ৯ লাখ টাকার চুক্তিতে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির মাধ্যমে চান্স পেলেও সন্দেহ হওয়ায় পরে তার আবারো পরীক্ষা নেয়া হয়। ওই পরীক্ষায় সে কোনমতে পাস করেন। এতে জালিয়াতির বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ঢাবিতে ভর্তির সুযোগ দেয়া হয়নি। সেই ছাত্রীই জালিয়াতির মাধ্যমে রাবিতে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, রাবির আইন অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৫৫ দশমিক ৫০ নম্বর পেয়ে ৪৪তম মেধা স্থান অর্জন করে তাজরিন আহমেদ খান মেধা নামের ওই ছাত্রী। মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মেধা তালিকায় প্রথম ধাপে গত ৮ ডিসেম্বর ভর্তি হয় সে।
অথচ আইন অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিটের চেয়ে তুলনামূলক সহজ আরও তিনটি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল তাজরীন। এর মধ্যে দু’টি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ফেল করেছে সে। বিজনেস স্টাডিজ অনুষদভুক্ত ‘ডি’ ইউনিটের অ-বাণিজ্য শাখায় (রোল: ৫২০০৪) ১০০ এর মধ্যে পেয়েছে মাত্র ১৪ দশমিক শূণ্য ৬। কৃষি অনুষদভুক্ত ‘জি’ ইউনিটে (রোল: ২১৪৭১) পরীক্ষায় পেয়েছে ৩৩ দশমিক ২৫ নম্বর। আর রাবির ভর্তি পরীক্ষায় সবচেয়ে সহজ প্রশ্নপত্র হয় যে কলা অনুষদভুক্ত ‘এ’ ইউনিটে, সেখানে তালিকায় ২২৯৭ তম হয়েছে সে। ‘এ’ ইউনিটে ভর্তির জন্য ৭ বার তালিকা দেয়া হলে তাজরীন মেধা তালিকায় আসতে পারেনি।
সূত্রমতে, ঢাবির ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় তাজরীন আহমেদ খান মেধা ৫ম ও তার আত্মীয় নুর মাহফুজা দৃষ্টি (নিপু) ৭৮তম স্থান অর্জর করেন। কিন্তু জালিয়াতি করে মেধা তালিকায় স্থান পাওয়ার অভিযোগ ওঠে তাদের দু’জনের বিরুদ্ধে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঢাবি কর্তৃপক্ষ তাদের দু’জনের পুনরায় পরীক্ষা নেয়। এতে নুর মাহফুজা দৃষ্টি ফেল করলেও মেধা কোনো মতে পাস করে যায়। তবে পাস করলেও ভর্তি যোগ্যতা অর্জন করতে ব্যর্থ হয় তাজরীন।
ঢাবির ভর্তি পরীক্ষায় নয় লক্ষ টাকার বিনিময়ে চান্স পাওয়া, পরে অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুনরায় পরীক্ষা নেয়া। তাতেও বাদ পড়ে রাবির আইন বিভাগে ভর্তি হওয়ায় বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তারা ওই ছাত্রীর পুনরায় পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
খোদ আইন বিভাগের ডীন ও ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি কমিটির সভাপতি প্রফেসর আবু নাসের মো. ওয়াহিদ ওই ছাত্রীর ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তবে তথ্য প্রমাণের অভাবে তাকে নাকি ধরা যায়নি।