পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেছেন, চীন উন্নয়নের জন্য আর্থিক সহায়তা করে। ঋণ দেয়। আর কিছু শক্তিশালী রাষ্ট্র আছে যারা শুধু ভয় দেখায়, উপদেশ দেয় এবং সতর্ক করে। আমরা তাদের বলেছি, উপদেশ, সতর্ক ও ভয় দেখানোর পাশাপাশি কিছু টাকা-পয়সা দাও। আমাদের উন্নয়নে কাজে আসবে।
বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান। এ সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলি সাবরীন উপস্থিত ছিলেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিক স্যাংশন দেওয়ার কোনো আশঙ্কা আছে কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা স্যাংশন দেবে কিনা জানি না। তবে আমি তাদের বলেছি, তোমরা স্যাংশন দিয়ে কোথাও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছ তা আমাদের দেখাও। কম্বোডিয়া, নাইজেরিয়া কিংবা হাঙ্গেরিতে কি গণতন্ত্র এসেছে? তারা কোনো জবাব দেয়নি।
তিনি বলেন, এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেখানেই যান, অনেক দেশের সরকার প্রধান তার সঙ্গে বৈঠক করতে চান। তারা আমাদের কাছে জিনিসপত্র বিক্রির প্রস্তাব নিয়ে আসেন। আমরা এখন একটু বৈচিত্র্য আনতে চাই। আগে আমরা বোয়িং থেকে উড়োজাহাজ কিনতাম। এখন এয়ারবাস থেকে কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ নিয়ে তাদের মধ্যে এখন গন্ডগোল। বোয়িং এখন অর্ধেক দামে আমাদের উড়োজাহাজ দিতে চায়।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে একটি পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্টের বিষয়ে জানতে চাইলে মোমেন বলেন, এটা যিনি লিখেছেন তিনি আহাম্মক ছাড়া কিছুই নন।
ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বের সুবিধাজনক স্থানে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের ৮৩ ভাগ বাণিজ্য হয় আমাদের দেশের পাশ দিয়ে। সুতরাং তাদের দৃষ্টি সেখানে পড়েছে। আমরা কারও লেজুড়বৃত্তি করতে চাই না। এটাও একটি অপরাধ। তারা এটা সহ্য করতে পারছে না।
তিনি আরও বলেন, বিদেশিরা সংঘাতমুক্ত নির্বাচনের নিশ্চয়তা আছে কিনা জানতে চেয়েছে। আমরা বলেছি সংঘাতমুক্ত নির্বাচনের গ্যারান্টি দিতে পারছি না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গত ৫টি সিটি করপোরেশন নির্বাচন তো সংঘাতমুক্ত ছিল। কেউ সংঘাত করলে তো তার দায় আমরা নিতে পারব না।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন পর্যবেক্ষক না পাঠানো সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা পর্যবেক্ষক পাঠালে ভালো। না পাঠালেও সমস্যা নেই। আমাদের নিজেদের ওপর আত্মবিশ্বাস আছে। তাদের আর্থিক সংকট থাকলে আমরা কী করতে পারি?
ইউরোপীয় পার্লামেন্টে যে রেজুলেশন পাশ হয়েছে তা ভুল হয়েছে বলে তারা ইতোমধ্যে স্বীকার করেছে। তাদের কাছে মেসেজ পাঠানো হয়েছে-ঢাকায় কথায় কথায় গুলি করে মানুষ মারা হয়, এখানে কোনো সরকার নেই। তারা তথ্য ক্রসচেক না করেই রেজুলেশন পাশ করেছে।