৩৮তম বিসিএস নন-ক্যাডার পদে আবেদনকারীদের কেন ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা পদে নিয়োগের সুপারিশের নির্দেশ দেওয়া হবে না এই মর্মে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
সোমবার বিচারপতি জেএম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রুল জারি করেন। চার সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
ওই পদে রিট নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ৪০তম বিসিএস নন-ক্যাডার প্রার্থীদের ‘ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা’ পদে সুপারিশ ও নিয়োগ বন্ধের দাবিতে ১৯ সেপ্টেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ কর্ম-কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান এবং কমিশনের সচিবকে রেজিস্ট্রিকৃত ডাকযোগে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়।
কিন্তু নোটিশ উপেক্ষা করে ২০ সেপ্টেম্বর ৪০তম বিসিএস নন-ক্যাডার প্রার্থীদের ‘ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা’ পদে ১১৬৪ জনকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম-কমিশন (পিএসসি)।
গত ২১ আগস্ট বায়েজীদ হোসাইন, মো. মাহমুদুল হাসানসহ ২১ জনের পক্ষে রিটটি করা হয়।
গত বুধবার রিটের ওপর শুনানি হয়। সোমবার আদেশের জন্য দিন নির্ধারিত ছিল। দুপক্ষের শুনানি শেষে আজ আদালত রুল জারি করেন।
রিটকারীদের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব। তাকে শুনানিতে সহযোগিতা করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী বায়েজীদ হোসাইন, নাঈম সরকার ও সোলায়মান তুষার। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার কাজী মাঈনুল হাসান।
উল্লেখ্য, ৩৮তম বিসিএস পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি ২০১৭ সালের ২০ জুন প্রকাশিত হয়। ওই বিসিএসে সর্বমোট ৮ হাজার ৩৭৭ পরীক্ষার্থী প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী শূন্যপদে ক্যাডার সার্ভিসে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে; কিন্তু পদ স্বল্পতার কারণে ৬ হাজার ১৩৭ জন প্রার্থীকে ক্যাডার পদের সুপারিশ করা সম্ভব হয়নি।
প্রিলিমিনারি, লিখিত, মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কিন্তু পদ স্বল্পতার কারণে বঞ্চিত এসব নন-ক্যাডার প্রার্থীদের পিএসসি সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে চাহিদার ভিত্তিতে সুপারিশ করে থাকে। ভূমি মন্ত্রণালয় ২০২১ সালের ২৩ আগস্ট ৩৮তম বিসিএস নন-ক্যাডার থেকে ‘ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা (১২তম গ্রেড)’-এর ১ হাজার ৩৭৫টি পদে সুপারিশের জন্য কর্ম-কমিশনকে অনুরোধ জানায়; কিন্তু অভ্যন্তরীণ কিছু জটিলতার কারণে ওই নিয়োগ বিলম্বিত হয়।
মামলায় বলা হয়েছে, ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে সর্বশেষ ২০২২ সালের ২ নভেম্বর নন-ক্যাডার প্রার্থীদের মধ্য থেকে ওই পদগুলোতে নিয়োগের অনুরোধ জানানোর পরও পিএসসি এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
মামলায় আরও বলা হয়েছে, নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ (বিশেষ) বিধিমালা ২০২৩, সংশোধিত ‘বিধিমালা ২০১৪’ এবং ‘বিধিমালা ২০১০’ অনুযায়ী ৩৮তম বিসিএস নন-ক্যাডার সুপারিশের জন্য অপেক্ষমাণ প্রার্থীরা ওসব পদে নিয়োগ পেতে আইনগতভাবে উপযুক্ত।
এ বিষয়ে আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব বলেন, আশা করি পিএসসি তাড়াতাড়ি হাইকোর্টের রুলের জবাব দিবে ও ৩৮তম বিসিএসে অপেক্ষমাণ নন-ক্যাডার প্রার্থীদের সংশ্লিষ্ট পোস্টে নিয়োগের সুপারিশ করবে।