কোভিড পরবর্তী সময়ে বিশ্ব যখন হাঁফ ছেড়ে উঠতে শুরু করেছে, তখন মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এইচএমপিভি। সম্প্রতি চীনে শিশুদের মধ্যে হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস (এইচএমপিভি) নামে সংক্রমণটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। ইতোমধ্যে ভারতেও কয়েকজনের শরীরে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে। ভাইরাসটি সর্দি-কাশির মতো উপরের শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের পাশাপাশি ফুসফুসের গুরুতর সংক্রমণের কারণ হতে পারে। তবে এবারই প্রথম নয়, ২০০ বছর আগেও ভাইরাসটি আক্রমণ চালিয়েছিল। সবশেষ ২০০১ সালেও দেখা দিয়েছিল।
অন্য পাঁচটি ফ্লু ভাইরাসের মতেই এইচএমপিভি ভাইরাসের উপসর্গ। প্রায় ২০০ বছর আগে বিজ্ঞানীরা এটি আবিষ্কার করে। ২০০১ সালে দ্বিতীয়বারের মতো ভাইরাসটিকে দেখা যায়। তখন খুব বেশি গবেষণা হয়নি। বিশেষজ্ঞরাও খুব বেশি গুরুত্ব দেননি। তৈরি হয়নি ভ্যাকসিনও। প্রায় ২৪ বছর পর আবারও ছড়িয়ে পড়েছে ভাইরাসটি। করোনা পরবর্তী সময়ে যা মানুষের মনে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।
এইচএমপিভি হচ্ছে একটি আরএনএ ভাইরাস। সাধারণ শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাস। বিজ্ঞানীদের মতে, সারা বছরই এই ভাইরাসের অস্তিত্ব থাকে। তবে মৌসুম বদলের সময়ে বিশেষ করে শীত ও বসন্তে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে। এর চরিত্র অনেকটা করোনা ভাইরাসের মতো। এই ভাইরাসও হাঁচি-কাশির মাধ্যমেই রোগ ছড়ায়। শ্বাসযন্ত্রেই এটি সবার আগে আক্রমণ করে। কিছুকিছু ক্ষেত্রে ভাইরাসটি প্রাণঘাতীও।
করোনার মতো আরএনএ (রাইবো-নিউক্লিক অ্যাসিড) ভাইরাস হলেও ২০০১ সালে যখন প্রথম আত্মপ্রকাশ হয়েছিল তখনও এইচএমপিভি ততটাও প্রভাব ফেলেনি। সর্দি-কাশি থেকে জ্বর সহ মৃদু থেকে তীব্র উপসর্গ দেখা দিলেও মৃত্যু হয়নি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এইচএমপিভই-র বহিঃপ্রকাশ এতটা জটিল নয়। এই ভাইরাসের সংক্রমণে শুকনো কাশি, জ্বর, হালকা নিউমোনিয়ার উপসর্গ দেখা দিতে পারে। সিওপিডি রোগীরা সংক্রামিত হলে শ্বাসকষ্ট বাড়তে পারে, ব্রঙ্কাইটিসের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। বয়স্কদের শরীরে এই ভাইরাসের প্রভাব বেশি পড়তে পারে। তবে আপাতত সেই ঝুঁকি নেই বলে মত বিশেষজ্ঞদের।