ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দলীয় সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে না। জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে সংসদ ভেঙে দেওয়া এবং নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকার গঠনসহ ১৫ দফা দাবিতে দলটি আন্দোলন করছে। এসব দাবি ছাড়াও সংবিধান সংশোধন, ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচনীব্যবস্থাসহ রাষ্ট্র সংস্কারের ১৯ দফা প্রস্তাব করেছে দলটি। দলের নেতারা বলছেন, জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে তাঁরা অংশ নেবেন। সে লক্ষ্যে আন্দোলনের পাশাপাশি দলটি নির্বাচনের প্রস্তুতিও নিচ্ছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন সংসদ নির্বাচন ঘিরে ইসলামী আন্দোলন ইতিমধ্যে প্রার্থী বাছাই শুরু করেছে। ৩০০ আসনে দলের প্রায় ৯০০ জন মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতার সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। বিভাগওয়ারি সাক্ষাৎকারের পর্ব শেষ হয়েছে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে ইসলামী আন্দোলন নির্বাচনে যাবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সারা দেশে প্রার্থী বাছাই কার্যক্রম শেষ। এবার আমরা ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেব।’
দলের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা জানান, গত দুই মাসে ইসলামী আন্দোলন ছয় শতাধিক থানা ও উপজেলায় প্রতিনিধি সম্মেলন করেছে। দলের সাংগঠনিক কাঠামো এবং মাঠের আন্দোলন জোরদার করাই এসব সম্মেলনের লক্ষ্য। এ ছাড়া অক্টোবর-নভেম্বর মাসজুড়ে ইউনিয়ন পর্যায়ে সদস্য সম্মেলন করার পরিকল্পনা রয়েছে। কেন্দ্রীয় পর্যায়েও ছাত্র-যুবক, শ্রমিকদের সংগঠিত করার চেষ্টা করছে দলটি। চলতি মাসে রাজধানীতেও কয়েকটি সমাবেশ করা হয়েছে।
জানা যায়, প্রতিষ্ঠার পর ১৯৯৬ সালে দলটি এককভাবে ২০টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ১১ হাজার ১৫৯টি ভোট পায়। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সঙ্গে ইসলামী জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে ২৩টি আসনে ভোট পায় ৫ হাজার ৯৪৪। তবে ২০০৮ সালে এককভাবে অংশ নিয়ে ১৬৭টি আসনে ৬ লাখ ৫৮ হাজার ২৫৪ ভোট পায়। ১০ বছরের ব্যবধানে ২০১৮ সালে ২৯৯টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ১২ লাখ ৫৫ হাজার ৩৭৩ ভোট পেয়েছে দলটি। সেই ধারাবাহিকতায় এবার ৩০ আসনেই তাঁরা লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এ প্রসঙ্গে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা প্রতিটি আসনে তিন থেকে চারজনের সাক্ষাৎকার নিয়েছি। সব মিলিয়ে প্রায় ৯০০ জন হবে। এদের মধ্য থেকে ৩০০ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘বর্তমান কাঠামোতে আমরা নির্বাচনে যাব না। যদি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়, তবে অংশ নেব।’