২২ নভেম্বর ২০২৪, শুক্রবার, ০১:০৪:০৪ পূর্বাহ্ন
৪৫তম বিসিএস লিখিত: সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৮-১১-২০২৩
৪৫তম বিসিএস লিখিত: সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

সাধারণ বিজ্ঞান ৬০, কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তিতে ২৫, ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক প্রযুক্তি ১৫ নম্বর মিলে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা হয়। তিনটি বিষয়ের গুরুত্ব সমান। অনেকে ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক প্রযুক্তি অংশ কঠিন মনে করে ছেড়ে দেন। অথচ একটু পরিশ্রম করলে এই অংশে পূর্ণ নম্বর তোলা যায়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সব প্রশ্ন ঠিকঠাক লিখে আসতে পারলে ১০০-তে ৮০-৯০ পাওয়া সম্ভব।


প্রয়োজনীয় বই

■    নবম-দশম শ্রেণির সাধারণ বিজ্ঞান 

■    একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি 

■    সায়েন্স আওয়ার/আলফা 


প্রশ্ন ও সিলেবাস বিশ্লেষণ

বিজ্ঞানের জন্য ১০ থেকে ৪৪তম বিসিএসের প্রশ্নগুলো ভালোভাবে পড়া অত্যন্ত জরুরি। এ বিষয়ে প্রশ্ন রিপিটের হার বেশি; বিশেষ করে কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক প্রযুক্তি পার্টে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ প্রশ্নই রিপিট হয়। সিলেবাস বিশ্লেষণ করে পড়তে হবে। বারবার আসা প্রশ্নগুলো বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। 


বিজ্ঞানভিত্তিক সাম্প্রতিক ঘটনা

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বিজ্ঞানভিত্তিক ঘটনা থেকেও কিছু প্রশ্ন আসতে পারে। যেমন বিগত বিসিএস পরীক্ষাগুলোতে করোনাভাইরাস, মাঙ্কি পক্স, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, সিংক হোল, ই-কমার্স, ফেসবুক কমার্স—এ রকম বিষয় থেকে প্রশ্ন এসেছে। এ ক্ষেত্রে যাঁরা নিয়মিত পত্রিকা বা কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স পড়েন, তাঁরা এগিয়ে থাকবেন। ৪৫তম বিসিএসের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি টপিক হলো পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন, ডেঙ্গু জ্বর, স্মার্ট বাংলাদেশ প্রভৃতি। 


নোট করে বুঝে পড়া

বিজ্ঞানে মুখস্থ করার চেয়ে বুঝে পড়া উপকারী। মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের অনেকের বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় বুঝতে অসুবিধা হয়। এ বিষয়গুলো ভালোভাবে বুঝতে ইউটিউব বা অনলাইন কোর্সের সহায়তা নেওয়া যায়। নোট খাতায় সব প্রশ্ন তোলার প্রয়োজন নেই। গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলোই নোট খাতায় তুলবেন। এতে পরীক্ষার আগে প্রস্তুতি নিতে সহজ হবে। কনটেন্টগুলো নোট খাতায় বাক্য আকারে লিখে সময় নষ্ট না করে বোঝার মতো পয়েন্ট করে লেখাই শ্রেয়।


উত্তর হবে ‘টু দ্য পয়েন্টে’

বিজ্ঞানে অতিরিক্ত কথাবার্তা ও বাহুল্যতার কোনো প্রয়োজন নেই। প্রশ্নে যেটুকু চেয়েছে শুধু সেটুকুই লিখতে হবে। বিজ্ঞানের প্রশ্নগুলোর নম্বর কম থাকে। অতিরিক্ত লিখতে গেলে ১০০ নম্বর লিখে শেষ করা সম্ভব হয় না। যদি প্রশ্নে আসে—৩টি অ্যাসিড ও ৩টি ক্ষারের নাম লিখুন? তবে ১ /২ / ৩ নিয়ে শুধুই নামগুলো লিখবেন, বাড়তি কথাবার্তার দরকার নেই। যেসব প্রশ্নে কোনো কিছুর গুরুত্ব বা প্রয়োজনীয়তা বা করণীয় চায় সেই সব প্রশ্নে যা নম্বর তার দ্বিগুণ পয়েন্ট লিখবেন। যেমন ২.৫ নম্বরের পরিবেশ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা এলে ৫টি পয়েন্টে মূলভাবগুলো লিখবেন। ১ / ২ পাতা ভরে বর্ণনামূলক লিখলে শিক্ষক বিরক্ত হবেন এবং ভালো নম্বর পাবেন না। কোনো কিছুর সংজ্ঞা চাইলে শুধুই সংজ্ঞা ও দুই-একটি উদাহরণ দেবেন। 


পয়েন্ট আকারে উত্তর লিখুন

বিজ্ঞানে তিন পার্টের বেশির ভাগ প্রশ্নই পয়েন্ট করে লিখতে পারবেন। এভাবে লিখলেই শিক্ষকের পড়তে সুবিধা হয় এবং ভালো নম্বর পাওয়া যায়। প্রশ্নের উত্তরে কতগুলো পয়েন্ট দেবেন তা নম্বরের ওপর নির্ভর করে। যেসব প্রশ্ন পয়েন্টে লেখা যায় না, সেগুলো জোর করে পয়েন্টে আনার প্রয়োজন নেই। 


চিত্রভিত্তিক উপস্থাপনা

গ্রাফ-চার্ট-ডায়াগ্রাম ও চিত্রভিত্তিক উপস্থাপনা খাতার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে এবং শিক্ষকের কাছে ভালো ইমপ্রেশন তৈরি করে। যেসব প্রশ্নের উত্তর বর্ণনা বা পয়েন্টের বাইরে ডায়াগ্রাম বা চিত্র দিয়ে দেখানো যায়, সেগুলো অবশ্যই চিত্র দিয়েই উত্তর করবেন। যেমন ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার কীভাবে কাজ করে বা সিপিইউ কীভাবে কাজ করে বা সফটওয়্যার তৈরির ধাপগুলো লিখুন বা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রক্রিয়া বর্ণনা করুন—এ রকম প্রশ্নে বিস্তৃত বর্ণনা না দিয়ে চিত্রভিত্তিক উত্তর করলে ভালো নম্বর পাওয়া যায়।


তিন পার্টের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় 

সাধারণ বিজ্ঞান: এখানে ১১টি অধ্যায় থেকে প্রশ্ন হয়। ৯ সেট প্রশ্নের মধ্যে ৮টির উত্তর করতে হবে (৮ x ৭.৫)। কিছু গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় থেকে পূর্ণ সেট (৭.৫ মার্ক) প্রশ্ন হয় এবং বাকি ২-৩টি অধ্যায় মিলিয়ে ১টি সেট করা হয়। গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়গুলো হলো—আলো, শব্দ, অ্যাসিড-ক্ষার ও লবণ, বায়ুমণ্ডল, খাদ্য ও পুষ্টি, রোগ ও স্বাস্থ্য, আমাদের সম্পদ।


কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি নামে ২টি ভাগ রয়েছে। ৫ নম্বরের ৫টি প্রশ্ন (৭-৮টি থেকে) অথবা ২.৫ নম্বরের ১০টি প্রশ্ন (১২-১৩টি থেকে) উত্তর করতে হয়। গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো হলো—কম্পিউটারের ইতিহাস, সিপিইউ ও মাইক্রোপ্রসেসর, অপারেটিং সিস্টেম, ইনপুট ও আউটপুট ডিভাইস, সফটওয়্যার, ডেটাবেইস, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ও টপোলজি, প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ, ইন্টারনেট প্রটোকল, নেটওয়ার্কিং ডিভাইস (রাউটার, গেটওয়ে, হাব, রিপিটার), মাল্টিমিডিয়া, প্রটোকল, স্যাটেলাইট, আইএসপি, গুরুত্বপূর্ণ ইন্টারনেট কোম্পানি-ওয়েবসাইট, স্মার্ট বাংলাদেশ। 


ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক প্রযুক্তি

এই পার্টে সাধারণত ৫-৬টি প্রশ্নের মধ্য থেকে ৩টি প্রশ্নের (৫ নম্বর) উত্তর করতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো হলো—ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক কম্পোনেন্টের উদাহরণ, ওহমের সূত্র ও কার্শফের সূত্র, রোধ ও ভোল্টেজের সংজ্ঞা ও প্রকারভেদ, সার্কিট ব্রেকার, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সঞ্চালন-প্রক্রিয়া, এসি ও ডিসি কারেন্ট, ট্রান্সফরমার, আইপিএস ও ইউপিএস, ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার, পারমাণবিক ও পানিবিদ্যুৎ উৎপাদন-প্রক্রিয়া, বৈদ্যুতিক মোটর, আইসি, রাডার।


শেয়ার করুন