মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা স্তরে গণযোগাযোগ বা যোগাযোগ সাক্ষরতা বিষয় অন্তর্ভুক্ত প্রসঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বরাবর এক উন্মুক্ত আবেদন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক অধ্যাপক। আজ মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাঁর নিজস্ব প্রোফাইলে তিনি এ বিষয়ে পোস্ট করেন।
ওই শিক্ষকের নাম ড. মুসতাক আহমেদ। তিনি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
উন্মুক্ত আবেদনে তিনি লিখেন, বাংলাদেশে বহু বছর আগে থেকে মানবীয় যোগাযোগ, গণযোগাযোগ, গণমাধ্যম সাক্ষরতা পঠন-পাঠন শুরু হয়েছে। ১৯৬২ সালের আগস্ট মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে পঠন-পাঠন শুরু হয়। এরপর বিষয়টি সম্প্রসারিত হয় রাবি, চবি, জাবি, জবি, কুবি, খুবি, বেরোবি, ববি, ইবিতে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, মিডিয়া স্টাডিজ, ফিল্ম ও টেলিভিশন স্টাডিজ বিভাগে পঠন-পাঠন চলার মধ্য দিয়ে। বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সবগুলোতেই এ বিষয়ে অধ্যয়ন অনুশীলন চলছে। সেই হিসেবে প্রতিবছর দুই হাজারের বেশি গ্রাজুয়েট জ্ঞানের এসব শাখা থেকে বেরিয়ে সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিজেদের নিয়োজিত করছে এবং দৃশ্যমান হচ্ছে দেশ ও বিদেশে তাদের সফলতার বিভিন্ন দিক।
তিনি আরও লিখেন, ‘আজকের সময়ে তথ্যই হলো শক্তি, তথ্যই হলো সম্পদ, তথ্যই হলো জ্ঞান। তথ্যসমৃদ্ধ মানুষ আজ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে সকল কিছু। যার কাছে তথ্য নেই ; সে নিঃস্ব। এজন্য আমরা বলি যে দেশ যত বেশি তথ্যসমৃদ্ধ, সে দেশ তত উন্নত। গণযোগাযোগের বিভিন্ন শাখার মূল কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে তথ্য ও বার্তা নিয়ে অনুশীলন। আর যোগাযোগ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা কিন্তু তথ্য আদান-প্রদানের কাজটিই করে। তথ্য সংরক্ষণের হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে। তথ্য ছড়িয়ে দেয়ার কাজটিই করে। যার জন্য যে তথ্য লাগে, গণমাধ্যম থেকে সে বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়।’
এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন গুজব সম্প্রসারণে যোগাযোগ অক্ষরজ্ঞান না থাকাকে উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, ‘যোগাযোগের বিভিন্ন উপায় সম্প্রসারিত হওয়ার গুজব, মিথ্যা, অপতথ্য ছড়িয়ে দিচ্ছে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীগুলো। এর মূলে রয়েছে যোগাযোগ করতে না জানা, যোগাযোগের মাধ্যমে আচরণ পরিবর্তনের প্রক্রিয়া না বোঝা, যোগাযোগঅ অক্ষরজ্ঞান না থাকা। একটা মানুষ তার কথা বলা, বাচনিক অবাচনিক অভিব্যক্তি প্রযোগের মাধ্যমে নিজের আত্মার সৌন্দর্য ফুটে তুলতে পারে। সবমিলিয়ে যে উপসংহারে আসা যায় তা হলো মানুষকে, নাগরিককে যোগাযোগে দক্ষ করে তুলতে না পারলে পরিবার থেকে রাষ্ট্র সর্বত্র এই লোকগুলো অশান্তি সৃষ্টি করবে, বিশৃঙ্খলা দৃশ্যের পূনরাবৃত্তি ঘটাবে, হয়ে উঠবে অসহিষ্ণু। আর এজন্যই পাঠ্য বইয়ে, জাতীয় শিক্ষা ক্যারিকুলামে যোগাযোগ সাক্ষরতা বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে বলে দাবি করেন এ অধ্যাপক।’