২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৯:৪২:৪৯ অপরাহ্ন
অভিযানের খবর পেয়ে পালালেন আড়তদাররা
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৫-০১-২০২৪
অভিযানের খবর পেয়ে পালালেন আড়তদাররা

ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযানে আসছেন-এ খবর পেয়ে আড়তের শাটার ফেলে পালিয়ে যান চাল ব্যবসায়ীরা। বুধবার নতুন বাজার এলকায় এ ঘটনা ঘটে। এদিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় একসঙ্গে তিনটি সংস্থা অভিযান পরিচালনা করে। একটি দোকানে মেয়াদোত্তীর্ণ বিস্কুট পাওয়ায় নগদ এক লাখ টাকা জরিমানা করে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। অভিযানে নেতৃত্বদানকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ সব তথ্য জানা গেছে।


খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন মহাখালী কাঁচাবাজারে মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তিনি টিম নিয়ে চালের আড়তে ঢুকে পড়েন। প্রথমে টিম কাঁচা বাজারের মেসার্স জাকির ট্রেডার্সে যায়। সেখানে বিভিন্ন ধরনের চালের ক্রয় রসিদ খতিয়ে দেখা হয়। এ সময় মিনিকেট চাল প্রতি কেজি ৭০ দশমিক ৮০ টাকায় ক্রয় করে ৭২ টাকা বিক্রির বিষয়টি তাদের নজরে আসে। পরে এ বিষয়ে দোকানিকে সতর্ক করা হয়।


আজাদ ট্রেডার্সে বেশি দামে চাল কেনার রসিদ পাওয়া যায়। দোকানি আবুল কালাম আজাদ জানান, পাশের আড়ত থেকে তিনি চাল কিনেছেন। পরে সেই রসিদের কপি নিয়ে আড়তে যান খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ভ্রাম্যমাণ আদালত।


কিন্তু নতুন বাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি আড়ত বন্ধ করে রাখা হয়েছে। হঠাৎ আড়ত বন্ধের কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা যায়, সকালেও খোলা ছিল। ভ্রাম্যমাণ আদালত দাম মনিটরিং করতে আসছেন-এ খবর পেয়ে আড়ত বন্ধ করে সটকে পড়েন আড়তদাররা। আড়ত বন্ধ থাকলেও ভেতরে ফ্যান-লাইট চলছে। অনেক আড়তদার শাটার বন্ধ করলেও তালা লাগানোর কথা বেমালুম ভুলে গেছেন।


ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন গণমাধ্যমকে বলেন, বাজারে দেখলাম চালের দাম স্থিতিশীল আছে এবং কিছুটা কমের দিকে। আশা করছি এই দাম কয়েক দিনের মধ্যে আরও কমবে। তিনি বলেন, আড়তে আসলাম যাচাইয়ের জন্য। কিন্তু এসে দেখলাম আড়ত বন্ধ। কেন তারা বন্ধ করে রেখেছেন, সেটি বলতে পারছি না।


অযৌক্তিকভাবে চালের দাম বাড়ানো হয়েছে : জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এএইচএম সফিকুজ্জামান এদিন এক মতবিনিময় সভায় বলেন, সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে চালের দাম বাড়ানো হয়েছে। যখন দাম বাড়ানো হয়, তখন ধানের দাম কম ছিল। এখন হয়তো ধানের দাম কেজিতে দুই টাকা বেড়েছে। অথচ সেই আগে কেনা ধানের চাল বাড়তি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। আর ধানের দুই টাকার বিপরীতে চালের দাম বাড়ানো হয়েছে ৮-১০ টাকা। চালের গুদামে গেলে দেখা যায়, সারি সারি বস্তা বস্তা সাজানো। আমার প্রশ্ন, চালের দাম বাড়ার সঙ্গে ব্যবসায়ীরা কি মিলের শ্রমিকের বেতন বাড়িয়েছেন? পরিবহণ খরচ কি বেড়েছে? বাড়েনি। তাহলে চালের দাম কেন রাতারাতি বাড়াতে হলো? আইন মেনে ব্যবসা না করলে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


রাজধানীর কাওরান বাজারের টিসিবি ভবনে জাতীয় ভোক্তা-অধিদপ্তর সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কার্যালয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি। আসন্ন রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে বিভিন্ন দপ্তর, সংস্থা ও ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহণে মতবিনিময় সভা হয়।


বেকারিকে এক লাখ টাকা জরিমানা : নানা অনিয়মের প্রমাণ মেলায় রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের এক বেকারিকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। বুধবার সংস্থাটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, মঙ্গলবার নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আক্তারুজ্জামানের নেতৃত্বে পশ্চিম আশ্রাফাবাদ এলাকায় হৃদয় বেকারিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়।


প্রতিষ্ঠানটির ফ্রিজে এবং স্টোরে লেবেলবিহীন প্রচুর খাদ্য মজুত দেখা যায়। প্রতিষ্ঠানটির মালিক প্রিমিসেস লাইসেন্স, খাদ্যকর্মীদের স্বাস্থ্য সনদ ও পানি পরীক্ষার সনদ দেখাতে পারেননি। এসব অপরাধে নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩ এর বিধান অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটিকে এক লাখ টাকা জরিমানা করে তাৎক্ষণিকভাবে আদায় করা হয়।


শেয়ার করুন