লেবাননের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত হয়েছেন আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের প্রধান নওয়াফ সালাম।
সোমবার দেশটির পার্লামেন্টের ১২৮ জন আইনপ্রণেতার মধ্যে ৮৪ জন সালামকে প্রধানমন্ত্রী করার পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন।
সালামের প্রধানমন্ত্রী হওয়া প্রভাবশালী শিয়া রাজনৈতিক সংগঠন হিজবুল্লাহর জন্য একটি বড় ধাক্কা। রয়টার্সের এক খবরে বলা হয়েছে, হিজবুল্লাহর অভিযোগ, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। সালামকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেওয়া লেবাননের সাম্প্রদায়িক উপদলগুলোর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্যে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
ইরান সমর্থিত শিয়া মুসলিম গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ গত বছর ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া প্রতিবেশী দেশ সিরিয়ায় মিত্র বাশার আল আসাদের পতনের পর লেবাননের রাজনীতিতে এ প্রভাব পড়েছে।
পার্লামেন্টের সংখ্যাগরিষ্টতা অর্জনের পর প্রেসিডেন্ট যোসেফ আউন, সালামকে সরকার গঠনের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য তলব করেছেন, লেবাননের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে এমন তথ্য জানানো হয়।
এদিকে সালাম, পার্লামেন্টের খ্রিস্টান ও দ্রুজ উপদল এবং বিশিষ্ট সুন্নি মুসলিম এমপিদের সমর্থন পেয়েছেন। সুন্নি এমপিদের মধ্যে হিজবুল্লাহর মিত্র ও বিরোধীরাও রয়েছেন। তাছাড়া সালাম দেশের বাইরে আছেন। মঙ্গলবার দেশে ফেরার কথা রয়েছে তার।
অন্যদিকে শিয়াদের জন্য সংরক্ষিত আসনগুলোর এমপি ও হিজবুল্লাহ ও তাদের শিয়া মিত্র দল আমল মুভমেন্টের এমপিরা কারও নাম প্রস্তাব করেনি বা সালামের পক্ষেও সমর্থন দেয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, তারা সালাম সমর্থিত সরকারে যোগ না দেওয়ার বিষয়টিকে ইঙ্গিত দেওয়া হচ্ছে।
বলা হচ্ছে, শিয়া ব্লক যদি লেবাননের মন্ত্রিসভার থাকে তাহলে সাম্প্রদায়িক বিভেদের সম্ভাবনা বাড়তে থাকবে। হিজবুল্লাহ চায়, দায়িত্বে থাকা প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি তার পদে থাকুক।
হিজবুল্লাহর জ্যেষ্ঠ আইনপ্রণেতা মোহাম্মদ রাদ অভিযোগ করেছেন, তাদের বিরোধীরা বর্জন ও বিভক্তকরণের জন্য কাজ করছেন। তিনি বলছেন, ‘গত সপ্তাহে হিজবুল্লাহ জোসেফ আউনকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করার জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল এখন ওই হাতই কাটা পড়ল। যাই হোক, সহাবস্থানের সঙ্গে মতভেদকারী কোনো সরকারের বৈধতা নেই’।
হিজবুল্লাহর এ নেতা বলছেন, ‘জাতীয় স্বার্থ নিয়ে উদ্বেগের জন্য’ হিজবুল্লাহ শান্তভাবে এবং বিজ্ঞতার সঙ্গে কাজ করবে।
এর আগে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সেনাবাহিনীর কমান্ডার জেনারেল যোসেফ আউন নির্বাচিত হন। এই পদে তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবেরও সমর্থন পেয়েছেন। এতে ধারণা করা হচ্ছে, যেখানে দেশটিতে ইরান ও হিজবুল্লাহ প্রভাব বিস্তার করেছিল সেখানে এখন সৌদি আরবের প্রভাব পুনরায় জন্ম হচ্ছে।
এদিকে দুই বছরের বেশি সময় ধরে লেবাননের কোনো রাষ্ট্রপ্রধান ও পূর্ণ ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো মন্ত্রিসভা ছিল না।