২৪ নভেম্বর ২০২৪, রবিবার, ০৪:৩৬:৩৬ পূর্বাহ্ন
ছয় মাস পর ২০০ কোটি ডলারের ঘরে রেমিট্যান্স
  • আপডেট করা হয়েছে : ০২-০২-২০২৪
ছয় মাস পর ২০০ কোটি ডলারের ঘরে রেমিট্যান্স

প্রবাসী আয়ে আরও গতি ফিরেছে। এর ফলে টানা ছয় মাস পর ফের ২০০ কোটি ডলারের ঘর অতিক্রম করেছে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স। সর্বশেষ চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ২১০ কোটি ডলারেরও বেশি, যা গত সাত মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এটি গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে সোয়া ৭ শতাংশ এবং আগের মাসের চেয়ে সাড়ে ৫ শতাংশ বেশি।

সব মিলে চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ শতাংশ। অথচ ছয় মাস পর্যন্ত এই প্রবৃদ্ধি ছিল ৩ শতাংশেরও কম। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন পর্যালোচনায় এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, জনশক্তি রপ্তানি বৃৃদ্ধিসহ নানা পদক্ষেপের ফলে বৈধ চ্যানেলে প্রবাসী আয় আবার বাড়ছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২৩ সালে রেকর্ড ১৩ লাখের বেশি কর্মী বিদেশে কাজের জন্য গেছেন। তার আগের দুই বছরও বিপুল সংখ্যক কর্মী বিদেশে গেছেন। তবে সেই অনুযায়ী রেমিট্যান্স আসছে না। বরং ডলারের অনানুষ্ঠিক দর বেশি থাকায় প্রবাসীদের মধ্যে অবৈধ পন্থা তথা হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাঠানোর প্রবণতা বেড়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী আয় বাড়ার কারণ, এখন আনুষ্ঠানিক দরের বাইরে গিয়েও অনেক ব্যাংক রেমিট্যান্স সংগ্রহ করছে।

সর্বশেষ রেমিট্যান্স কেনার আনুষ্ঠানিক দর আরও ৫০ পয়সা কমিয়ে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করে বাফেদা ও এবিবি। এর বাইরে ব্যাংকগুলো নিজস্ব তহবিল থেকে ২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রণোদনা দিতে পারে। সে হিসেবে ব্যাংকগুলো রেমিট্যান্সের ডলারের দাম সর্বোচ্চ ১১৪ টাকা ২৪ পয়সা পর্যন্ত দিতে পারে। কিন্তু অনেক ব্যাংক ১২০ থেকে ১২২ টাকা পর্যন্ত দামে রেমিট্যান্স কিনেছে। খোলাবাজারেও ডলারের দর এখন ১২২-১২৫ টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, বিদায়ী বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে প্রবাসীরা বৈধ চ্যানেলে দেশে রেমিট্যান্স পাঠান ১৯৮ কোটি ৯৮ লাখ ডলার, যা চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ ছিল। তবে চলতি বছরের জানুয়ারিতে এসে সেটি আরও ৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ২১০ কোটি ১০ লাখ ডলার। আর ২০২২ সালের জানুয়ারিতে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) রেমিট্যান্স এসেছে ১ হজার ২৮৯ কোটি ৯২ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ১ হাজার ২৪৪ কোটি ৮৮ লাখ ডলার। এই হিসাবে প্রথম সাত মাসে রেমিট্যান্স বেড়েছে প্রায় ৩ দশমিক ৬১ শতাংশ।

২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রবাসী আয়ে গতি খুব একটা ভাল ছিল না। গত অর্থবছরে রেমিট্যান্স আসে প্রায় ২ হাজার ১৬১ কোটি (২১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন) কোটি ডলার। এটি তার আগের অর্থবছরের চেয়ে মাত্র ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ বেশি ছিল। ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রবাসী আয়ের গতি ছিল আরও নিম্নমুখী। ওই অর্থবছরে প্রবাসীরা ২ হাজার ১০৩ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স দেশে পাঠান, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম ছিল। অথচ করোনার মধ্যেই ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবাসী আয়ে বড় রেকর্ড হয়েছিল। ওই অর্থবছরে প্রবাসীরা প্রায় ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে পাঠান, যা কোনো এক অর্থবছরে বাংলাদেশের ইতিহাসে এ যাবতকালের সর্বোচ্চ। এটি ২০১৯-২০ অর্থবছরের চেয়ে ৩৬ শতাংশ বেশি ছিল।

এ দিকে বছরের হিসাবে ২০২৩ সালে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স আসে ২ হাজার ১৯২ কোটি ডলার। এটি ২০২২ সালের তুলনায় মাত্র ৬৩ কোটি ডলার বা ২ দশমিক ৮৮ শতাংশ বেশি। ২০২২ সালে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ১২৯ কোটি ডলার।

শেয়ার করুন