২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৯:৫০:৩৬ অপরাহ্ন
আ.লীগের বিশেষ বর্ধিতসভা, আসতে পারে একগুচ্ছ নির্দেশনা
  • আপডেট করা হয়েছে : ১০-০২-২০২৪
আ.লীগের বিশেষ বর্ধিতসভা, আসতে পারে একগুচ্ছ নির্দেশনা

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনোত্তর পরিস্থিতিতে দলের বিরাজমান কোন্দল নিরসন, আসন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করা, তৃণমূলকে শক্তিশালীকরণ ও মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি দেওয়া এবং দেশের বিরুদ্ধে অব্যাহত ষড়যন্ত্র মোকাবিলার জন্য গণভবনে তৃণমূল নেতাদের ডেকেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


শেখ হাসিনার সঙ্গে তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাদের নিয়ে বিশেষ এই বর্ধিতসভা হবে আজ। এ সভা থেকে আগামী ১৪ মার্চ অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি পদে নির্বাচনের বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দেওয়া হতে পারে। মনোনয়নবঞ্চিতদের আগামী দিনে দলের জন্য কাজ করার আহ্বানসহ পরে তাদের মূল্যায়ন করার আশ্বাসও দিতে পারেন দলীয় প্রধান।


জানা গেছে, এই সভায় আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটি কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য; জেলা, মহানগর, উপজেলা, থানা ও জেলা সদরে অবস্থিত পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক; জাতীয় সংসদের দলীয় ও স্বতন্ত্র সদস্য; জেলা ও উপজেলা পরিষদের দলীয় চেয়ারম্যান, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার দলীয় মেয়র এবং সহযোগী সংগঠনসমূহের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা উপস্থিত থাকবেন। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিশেষ বর্ধিতসভায় সংশ্লিষ্ট সকলকে যথাসময়ে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।


সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সারাদেশে ব্যাপক কোন্দল সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে নৌকার প্রার্থী ও দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে এখনো বিশৃঙ্খলা চলছে।


কোথাও কোথাও সহিংসতায় হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে। দলীয় কর্মসূচিতে পৃথক পৃথক আয়োজন হতেও দেখা গেছে। উভয় পক্ষের অভিযোগের স্তূপ দলের কেন্দ্র ও গণভবনে জমা হয়েছে। বিষয়গুলো সমাধানের লক্ষ্যেই মূলত এই সভা হবে।


দলের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আগামী স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না দেওয়া নিয়েও দলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে। একদল মনে করছে প্রতীক না দেওয়ায় তারা দলের একক সমর্থন ও সহযোগিতা পাবেন না। তাই তারা হতাশ। অন্যরা মনে করছে জনগণের রায় নিয়ে বিজয় নিশ্চিত হওয়ার সুযোগ এসেছে এবার। তাই তারা উচ্ছ্বসিত।


ময়মনসিংহের ভালুকায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রত্যাশী ইঞ্জিনিয়ার মো. মহিউদ্দিন স্থানীয় নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্তে খুবই খুশি। তার ভাষ্য, দলীয় প্রতীক না থাকলে এমপিদের প্রভাব বিস্তারের সুযোগ থাকবে না। তবে চট্টগ্রাম বিভাগের একজন আওয়ামী লীগের নেতার ভাষ্য, দলীয় প্রতীক না পেলে অন্য দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা অযোগ্য লোককে নির্বাচিত করে আওয়ামী লীগের তৃণমূলকে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করতে পারে।


তবে উপজেলার ভোটে নতুন করে আর বিভেদ চাইছে না আওয়ামী লীগ। বিশেষ করে সংসদ নির্বাচনে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে তৈরি হওয়া সংঘাতময় পরিস্থিতি এবার এড়াতে চাইছে ক্ষমতাসীন দলটি। এ লক্ষ্যে উপজেলা পরিষদসহ স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে দলীয় প্রতীক কাউকে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের আগেই দলের ভেতরকার দ্বন্দ্ব নিরসনেও নেওয়া হচ্ছে নানা কৌশল।


সভার বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, এ সভায় দলের সাংগঠনিক বিষয়গুলোই বেশি প্রাধান্য পায়। তা ছাড়া নির্বাচনপরবর্তী দলের অবস্থান জানা ও দলীয় কোন্দল মীমাংসায় উদ্যোগ গ্রহণ। এ ছাড়া সামনে উপজেলা, ইউনিয়ন ও সিটি করপোরেশন নির্বাচন রয়েছে। ওসব নির্বাচনে প্রতীক না থাকলেও দল থেকে করণীয় বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হবে।


রাজশাহী বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন এমপি বলেন, আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের সম্ভাবনা ও দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের বিষয়গুলো নিয়ে নেত্রী আলোচনা করবেন। একই নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নেও নির্দেশনা দেবেন।


জানা গেছে, সামনের দিনগুলোতে দেশের ৪৯২ উপজেলা পরিষদের মধ্যে ৪৮৫টিতে নির্বাচন হবে। আগামী ৪ মে প্রথম ধাপ এবং ২৫ মে চতুর্থ ধাপের ভোট হবে। এর আগে আগামী ৯ মার্চ কুমিল্লা সিটির মেয়র পদে উপনির্বাচন এবং ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের ভোট হবে। এ ছাড়া বেশ কিছু পৌরসভার নির্বাচনের তফসিলও ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলের করণীয় সম্পর্কে অবহিত করতেই তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে আজ বসবেন দলের সভাপতি।


শেয়ার করুন