২২ নভেম্বর ২০২৪, শুক্রবার, ০২:২৮:৫৪ পূর্বাহ্ন
ভোট উৎসবমুখর করাই লক্ষ্য আওয়ামী লীগের
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৮-০২-২০২৪
ভোট উৎসবমুখর করাই লক্ষ্য আওয়ামী লীগের

দলীয় প্রতীক না থাকায় উদ্দীপনা । উপজেলা নির্বাচন  স্থানীয়রা কাউকে একক প্রার্থী করতে পারবে না উপজেলা নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। স্থানীয় সরকারের এই ভোটে দলীয় প্রতীক দিচ্ছে না আওয়ামী লীগ। অনেক আগেই দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যে কেউ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবে। বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো ভোটে অংশ নিচ্ছে না বিএনপি। এ অবস্থায় বিএনপিবিহীন ভোট যেন উৎসবমুখর হয় সে লক্ষ্যে এসব পদক্ষেপ নিয়েছে আওয়ামী লীগ। দলের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। স্থানীয় সরকারের ভোটে কেন্দ্র যেহেতু প্রতীক দিচ্ছে না, সে কারণে স্থানীয় আওয়ামী লীগ যাতে কাউকে সমর্থন না দেয় সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচনকে আমরা উৎসবমুখর করতে চাই। জনগণের যেন স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করে সেজন্য দলীয় সভায় প্রতীক তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দলীয়ভাবে যেহেতু প্রতীক দিচ্ছে না, সেহেতু স্থানীয় আওয়ামী লীগও কাউকে সমর্থন দিতে পারবে না। এমন নির্দেশনা দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের মাধ্যমে জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগকে জানিয়ে দেওয়া হবে। আমরা চাই প্রার্থী ও জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ।’ বিএনপি এবং তাদের রাজনৈতিক মিত্রদের বর্জনের মধ্যে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বাইরে দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ পান তৃণমূল আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা। কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে শঙ্কার মধ্যে আওয়ামী লীগ হাইকমান্ডের এ সিদ্ধান্ত সংসদ নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখে। এতে সারা দেশে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভেদ ছড়িয়ে পড়লেও নৌকা প্রতীকের সঙ্গে দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনকে মডেল হিসেবে দেখছে ক্ষমতাসীনরা।


এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘উপজেলা পরিষদ স্থানীয় সরকারের অংশ। এই নির্বাচন রাজনৈতিক দল ভিত্তিক হতে পারে, নাও হতে পারে। এতে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটবে না। আওয়ামী লীগের লক্ষ্য অধিকতর প্রার্থীর অংশগ্রহণের মাধ্যমে উৎসবমুখর পরিবেশে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা।’


জানা গেছে, ২০১৫ সালে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আইন প্রণয়নের পর থেকে স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করে আসছে রাজনৈতিক দলগুলো। উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে এবং পৌরসভা ও সিটি মেয়র পদে দলীয়ভাবে মনোনয়ন দেওয়ার নিয়ম এখনো বিদ্যমান। ভাইস চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর ও সদস্য পদে যার যার মতো করে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে সব ক্ষেত্রেই দলের মনোনীত প্রার্থীর বাইরেও আওয়ামী লীগের বিপুলসংখ্যক নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।


 


আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র বলছে, স্থানীয় সরকারব্যবস্থায় দলীয় প্রতীক যুক্ত করার পেছনে একটি রাজনৈতিক লক্ষ্য ছিল। তা হচ্ছে তৃণমূল পর্যায়ে দলীয় প্রতীক ছড়িয়ে দেওয়া। পাশাপাশি সব পর্যায়ে দলীয় জনপ্রতিনিধির ব্যবস্থা চালু করা। হয়েছিলও তাই। বর্তমানে প্রতীক দেওয়া হলে বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যা যেমন বাড়ে, তেমনি ভোটার উপস্থিতি নিয়ে টেনশন থাকে। সে কারণে এবার দলীয় প্রতীক দেওয়া হয়নি। বেশি মানুষের যেন অংশ গ্রহণ থাকে সেজন্য এবার কেন্দ্রীয়ভাবে কাউকে মনোনয়ন ও প্রতীক দেওয়া হচ্ছে না।


কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের পাশাপাশি তৃণমূল আওয়ামী লীগও চায় উৎসব মুখর পরিবেশে ভোট করতে। আগে যে কোনো একক প্রার্থী করা নিয়ে তৃণমূল নেতা-কর্মীরাও চরম হিমশিম খেতেন। এমপি-মন্ত্রীরাও নানা বিপাকে পড়তেন। এককভাবে কাউকে সমর্থন করা তাদের জন্য দুরূহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়াত। দলের একাধিক নেতা ও দলীয় এমপিরা জানিয়েছেন, উপজেলা পর্যায়ে আওয়ামী লীগের অনেক যোগ্য ও ত্যাগী নেতা রয়েছেন। একজনকে বেছে নেওয়া কঠিন হতো। অনেকেই অভিমান করতেন। এবার প্রতীক তুলে দেওয়ায় সে ব্যবস্থা থাকছে না। ফলে যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য সেই জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবেন।


শেয়ার করুন