দেশের ডলার সংকটের মধ্যেই সুবাতাস বয়ে আনলো প্রবাসী আয়। চলতি বছরের প্রথম দুই মাস টানা দুই বিলিয়ন ডলারের ঘর ছুঁয়েছে অর্থনীতির অন্যতম খাত রেমিট্যান্স। সদ্য শেষ হওয়া ফেব্রুয়ারি মাসে বিভিন্ন দেশে কর্মরত প্রবাসীরা মোট ২১৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি এক ডলার সমান ১১০ টাকা ধরে) যা ২৩ হাজার ৮২৬ কোটি টাকা।
রেমিট্যান্স বাড়াকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। তারা জানান, ডলারের জোগান ও চাহিদার ওপর নির্ভর করে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণ করে আসছে। এ দুটি সংগঠন মূলত বাণিজ্যিক ব্যাংক সংশ্লিষ্ট। বৈধপথে রেমিট্যান্স আনতে ব্যাংকগুলো অবশ্য এখন সরকারের আড়াই শতাংশ প্রণোদনার পাশাপাশি নিজেরাও প্রণোদনা দিচ্ছে। অন্যদিকে প্রবাসীদের বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে সচেতনতা বৃদ্ধি করছে ব্যাংকগুলো। এসব কারণে বৈধপথে রেমিট্যান্স আসা বাড়ছে বলে জানান তারা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের তথ্য বলছে, চলতি বছরের দ্বিতীয় মাস ফেব্রুয়ারিতে মোট ২১৬ কোটি ৬০ লাখ ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে। এটি তার আগের মাস জানুয়ারি থেকে ৬ কোটি ডলার বেশি এসেছে। বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে এসেছে ২১০ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স। গত বছরের একই মাসের চেয়ে ৪৪ কোটি ডলার বেশি এসেছে। গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৫৬ কোটি ডলার। সে হিসাবে গত বছরের একই মাসের তুলনায় প্রায় ৩৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ বেশি এসেছে।
২০২৩ সালের শুরু থেকে প্রত্যাশা অনুযায়ী রেমিট্যান্স না এলেও বছরটির শেষ দিকে ঊর্ধ্বমুখী ছিল। ২০২৩ সালের পুরো সময়ে ২ হাজার ১৯০ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে, যা আগের বছর ২০২২ সালে ছিল ২ হাজার ১৩০ কোটি ডলার। সে হিসাবে ২০২৩ সালে প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল প্রায় ৩ শতাংশ।
অন্যদিকে ২০২০ সালে হুন্ডি বন্ধ থাকায় ব্যাংকিং চ্যানেলে সর্বোচ্চ সংখ্যক রেমিট্যান্স এসেছিল। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ২ হাজার ১৬১ কোটি মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স। এটি এ যাবৎকালের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে করোনাকালীন ২০২০-২১ অর্থবছরে সর্বোচ্চ দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে।