২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৭:৪৬:৪২ অপরাহ্ন
‘স্বপ্নের সেতু দিয়ে স্বপ্ন যাবে বাড়ি’
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৫-০৬-২০২২
‘স্বপ্নের সেতু দিয়ে স্বপ্ন যাবে বাড়ি’

বাংলাদেশের ধমনী প্রমত্ত পদ্মা অক্ষয় রূপ নিয়ে নিজের বিশালত্ব, সৌকর্য, শৌর্য ও সৌন্দর্যের এক মূর্ত প্রতীক। আমাজনের পর বিশ্বের দ্বিতীয় খরস্রোতা নদী পদ্মাকে বশীকরণ করে জেগে উঠেছে স্বপ্নের সেতু। যে সেতু বিশ্ববাসীকে জানান দিচ্ছে বাংলাদেশের অহং, আবেগ ও আভিজাত্যের জৌলুশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনমনীয় নেতৃত্ব, দৃঢ় সংকল্প ও স্থির প্রতিজ্ঞায় স্বপ্ন এখন বাস্তব। আজ দ্বারোদ্ঘাটন। স্বপ্ন সত্যি করার উন্মেষলগ্নে গোটা জাতির মতো আনন্দে উদ্বেল দক্ষিণবঙ্গের বিপুল জনগোষ্ঠী। সেই আনন্দে যুক্ত হলেন পদ্মাপারের ক্রীড়াবিদরাও-

বাংলাদেশ দলে দক্ষিণ-পঞ্চিমাঞ্চলের ক্রিকেটারদের দাপট ছিল বরাবর। জাতীয় দল ও তার আশপাশে এই অঞ্চলের ক্রিকেটারই বেশি। বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা, যশোর, কুষ্টিয়া থেকে ঢাকায় আসার কষ্ট ঘুচল তাদের। পদ্মা সেতু নিয়ে উচ্ছ্বসিত মাশরাফি মুর্তজা, সাকিব আল হাসানরা। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে কাল দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নামা অধিনায়ক সাকিব আল হাসান পদ্মা সেতু নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন-

হাবিবুল বাশার

আমার তো ইচ্ছে ছিল প্রথমদিনই যাওয়ার। আমরা যারা ওই অঞ্চলের বাসিন্দা তাদের জন্য এটা অনেক বড় পাওয়া। অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। আগে বাড়িতে যেতে

৮-১০ ঘণ্টা সময় লাগত। এখন ৫-৬ ঘণ্টা কম লাগবে। খুবই রোমাঞ্চিত, অপেক্ষায় যানবাহন চলাচল শুরু হওয়ার। আশা করি, শিগগিরই যাব। এমনি দেখতে গিয়েছি পদ্মা সেতু। কিন্তু পদ্মা সেতুতে গাড়ি চালিয়ে যাব, এজন্য আমি ভীষণ রোমাঞ্চিত।

মাশরাফি মুর্তজা

দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য পদ্মা সেতু কতটা জরুরি, ওই পথে চলাচলের অভিজ্ঞতা ছাড়া তা আসলে বোঝা কঠিন। দুটি ঈদের কথা উল্লেখ না-ই করলাম, শীতকালে যে কী অবস্থা হয়, তার ওপর নানা সময়ে নিুচাপ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে তো কথাই নেই, সারারাত ফেরি বন্ধ। সবচেয়ে বেদনাদায়ক ব্যাপার হয়, যখন কোনো মুমূর্ষু রোগী নদী পার হওয়ার অপেক্ষায় থাকে। প্রতিটি মিনিট তখন মনে হয় অনন্তকাল। ঘাটেই রোগী মারা গেছে, ঢাকায় এনে চিকিৎসা করানো যায়নি, এরকম নজির আছে অনেক। আরও কত সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। সেই যন্ত্রণাময় দিন শেষ হতে চলেছে। অনেক প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে, প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে পদ্মা সেতু এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়। কোটি কোটি মানুষের কাছে এটা স্বপ্নের চেয়েও বড় কিছু। অনেকে কখনো কল্পনাও করতে পারেননি, জীবদ্দশায় পদ্মার ওপর সেতু দেখতে পাবেন। এটা স্রেফ ইট-সিমেন্টের সেতু নয়, এই অঞ্চলের মানুষের কাছে এটা অনেক আবেগ-অনুভূতির প্রতিশব্দ।

আবদুর রাজ্জাক

আমার জন্য বিশাল প্রাপ্তি। ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। অনেকেই বলছেন স্বপ্নের সেতু, আমার কাছে মনে হচ্ছে স্বপ্নের চেয়েও বেশি কিছু। এখনই ইচ্ছা করছে বাড়ি যাই। অনুভব করতে পারছি এই সেতু কত উপকারে আসবে আমাদের এই অঞ্চলের মানুষের জন্য। ঈদে পদ্মা সেতু দিয়ে বাড়ি যাব।

সাকিব আল হাসান

এবার বাড়ি ফেরার আনন্দ অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে একদম আলাদা হবে। তাই না? এবার স্বপ্নের সেতু দিয়ে স্বপ্ন যাবে বাড়ি!

তুষার ইমরান

দক্ষিণাঞ্চলের সব মানুষ অপেক্ষায় পদ্মা সেতু উদ্বোধনের। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেরিঘাটে বসে থাকার দিন শেষ। ইচ্ছা করলেই এখন যে কোনো সময়ে ঢাকায় যাওয়া-আসা করা যাবে। আমাদের জন্য আরও ভালো হবে যখন নড়াইলের কালনা ব্রিজ চালু হবে। যশোর থেকে ঢাকা যেতে সময় আরও কম লাগবে তখন।

‘আমাদের জন্য আশীর্বাদ’

সাবিনা খাতুন (সাতক্ষীরা)

জাতীয় নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক

স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হলো। এই সেতু আমাদের জন্য আশীর্বাদ। আগে ঢাকা থেকে সাতক্ষীরা যেতে ৮-১০ ঘণ্টা লেগে যেত। এখন চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা সময় বাঁচবে। আমাদের অনেক উপকার হলো। প্রধানমন্ত্রীকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আমাদের কষ্ট লাঘবের জন্য।

এমএ আরদুজ্জামান মুন্সি (বাগেরহাট)

জাতীয় কাবাডি দলের অধিনায়ক

স্বপ্নের পদ্মা সেতু এখন বাস্তব। এরচেয়ে আনন্দের আর কিছুই হতে পারে না। অনেক ভালো হয়েছে আমাদের দক্ষিণাঞ্চলবাসীর জন্য। আগে ঢাকায় আসতে বিড়ম্বনার শিকার হতে হতো। এখন আর হবে না। এটা মহা আনন্দের বিষয় আমাদের জন্য।

সোনম সুলতানা সোমা (নড়াইল)

জাতীয় টিটি খেলোয়াড়

দারুণ খবর আমাদের জন্য। পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে নড়াইল যাব। সেতু উদ্বোধন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু বাদ সাধল বার্মিংহাম ও সলিডারিটি গেমস। এই দুটি গেমসের জন্য ক্যাম্প করতে হচ্ছে। দেশে ফিরেই আমি বাড়ি যাব পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে।

শিরিন আক্তার (সাতক্ষীরা)

সাবেক দ্রুততম মানবী

এটুকু বলতে পারি, আমরা হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছি। আগে কত কষ্ট সয়ে আমাদের ঢাকায় আসতে হতো। ফেরি চলত না অনেক সময়। আবার আবহাওয়া খারাপ হলে আটকে পড়তাম ঘাটে। এসব বিড়ম্বনা আর সইতে হবে না। খুব ভালো লাগছে। এখন অপেক্ষায় আছি কবে বাড়ি যাব পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে।

তিথি রায় (নড়াইল)

স্বর্ণজয়ী কুস্তিগীর

খুব ভালো লাগছে। পদ্মা সেতু হয়েছে। স্বপ্নের সফল বাস্তবায়ন হলো। আর লঞ্চ বা ফেরিতে করে নদী পার হতে হবে না। আমাদের জন্য ব্রিজ হয়েছে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে ঋণী।

হেমায়েত মোল্লা (বাগেরহাট)

চ্যাম্পিয়ন ক্যারম খেলোয়াড়

খেলার প্রয়োজনে আমাকে প্রায়ই ঢাকায় আসতে হয়। কখনো লঞ্চে আবার কখনো ফেরিতে। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হতো ফেরি ঘাটে। সেই সমস্যা থেকে মুক্তি পেলাম। ধন্যবাদ প্রধানমন্ত্রীকে স্বপ্নের পদ্মা সেতু তৈরি করে দেওয়ার জন্য।

মোস্তাইন বিল্লাহ (খুলনা)

সোনাজয়ী ভারোত্তোলক

আমাদের দক্ষিণাঞ্চলবাসীর দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হলো। এই দিনটির অপেক্ষায় ছিলাম। কত কষ্ট করে আমাদের যাতায়াত করতে হতো, তা বলে বোঝানো যাবে না। ধন্যবাদ প্রধানমন্ত্রীকে। আমাদের সময় বাঁচবে, কষ্টও হবে না।

দুলাল হোসেন (পটুয়াখালী)

উশুর সাধারণ সম্পাদক

গত বছর ঈদে বাড়ি যাওয়ার সময় ফেরি ঘাটে নয় ঘণ্টা বসেছিলাম পরিবার নিয়ে। প্রতি বছর এই যন্ত্রণা ভোগ করতে হতো। এবার যন্ত্রণা লাঘব হলো। সময় বাঁচবে অনেক। ধন্যবাদ প্রধানমন্ত্রীকে স্বপ্নের পদ্মা সেতু আজ বাস্তবে রূপ নিয়েছে উনার জন্যই।

শেয়ার করুন