২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ০২:০৬:০৯ অপরাহ্ন
রমজানে শ্রমিকের প্রতি সদয় হোন
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৮-০৩-২০২৪
রমজানে শ্রমিকের প্রতি সদয় হোন


রমজানুল মুবারক

রমজানে শ্রমিকের প্রতি সদয় হোন

 মাওলানা তোফায়েল গাজালি 
 ১৮ মার্চ ২০২৪, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ
রমজানে শ্রমিকের প্রতি সদয় হোন

ইসলাম মানবতার ধর্ম। সাম্য, শান্তি ও ন্যায়-ইনসাফের প্রতীক ছিলেন আমাদের প্রিয় নবি (সা.)। মনিব-চাকর, মালিক ও শ্রমিকের মাঝে কোনো তফাৎ নেই ইসলামে। মালিক যা খাবে, যা পরবে; তার অধীনস্থদের তা খাওয়াবে, তা পরাবে। নবিজি (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তোমাদের শ্রমিক ভাইদের তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন। তোমাদের অধীনে যদি কোনো শ্রমিক ভাই থাকে; তোমরা তাকে তাই খাওয়াবে, যা তোমরা নিজে খাবে। তাদেরকে তাই পরাবে, যা তোমরা নিজে পরবে। তার ওপর সাধ্যের বাইরে কাজ চাপিয়ে দিয়ো না। তাকে দিয়ে কোনো কষ্টের কাজ করাতে চাইলে, সেই কাজে তুমিও তাকে সাহায্য করবে।’ এটা হবে খাঁটি মুমিন হিসাবে তোমার পরিচয়। মাহে রমজান হলো শ্রমিক ও নিজের অধীনস্থদের প্রতি সহমর্মিতা ও ভ্রাতৃত্ববোধ প্রকাশের মাস। সদয় হওয়ার মাস। খেটে খাওয়া পরিশ্রমী মানুষগুলো রোজা রেখে সারাটা দিন খেটে যায়। কঠিন ও কষ্টের কাজগুলো সম্পাদন করে। সেই মানুষদের কষ্টগুলো আপনাকেও অনুভব করার প্রয়োজন রয়েছে। যেসব শ্রমিক রোজা রেখে সিয়াম সাধনার সঙ্গে কায়িক প্রশ্রিমে আয়-উপর্জন করে-মালিকের উচিত তাদের প্রতি সদয় হওয়া। মাহে রমজানের সম্মানে তাদের কাজের বোঝা কমিয়ে দেওয়া। তাদের দিয়ে পারতপক্ষে সহজ কাজগুলো সম্পাদন করা। এটা হলো ইসলামের বিধান।

নবিজি (সা.) বলেন, ‘মাহে রমজানে তোমরা তোমাদের অধীনস্থদের প্রতি সদয় হও। তাদের ওপর কাজের চাপ কমিয়ে দাও। মহান আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করে দেবেন। জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেবেন।’ সাহাবায়ে কেরাম নবিজির কথাগুলো পুরোপুরি মেনে চলেছেন। অন্যদের এর ওপর আমলের উপদেশ দিয়েছেন।

নৈতিক অবক্ষয়ের কারণে আমাদের সমাজ-চিত্র নবিজির বাণীর পুরো উলটো। সমাজে দেখা যায়-অধিকাংশ মালিক ঘাম ঝরানো শ্রমিকের প্রতি সামান্যতম সহানুভূতিও দেখায় না। বরং পুরোটা মাস ঈদের আয়োজনে লাভবান হওয়ার আশায় শ্রমিকের প্রতি জুলুম করেন। অনেক মালিককে শ্রমিকের প্রতি এমন কঠোর হতে দেখা যায় যে, শ্রমিকের সিয়াম সাধনায় বাধা সৃষ্টি করে। ইবাদত-বন্দেগিতে সময় দেওয়ার কারণে অনেককে চাকরিচ্যুত করে। অথচ এ ধরনের মালিকের প্রতি আল্লাহ ও তার রাসূলের পক্ষ থেকে অভিশাপ রয়েছে। সাহাবি হজরত আলি (রা.) বলেন, নবিজির সর্বশেষ বাণী ছিল দুটি কথা-একটি হলো ‘(১) নামাজ-নামাজ। (২) অপরটি হলো তোমরা তোমাদের অধীনস্থদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করো।’ যারা মাহে রমজানে শ্রমিকের প্রতি কঠিন আচরণ করে। নির্দয় ব্যবহর করে। তাদের প্রতি আল্লাহও কঠিন হয়ে যাবেন। রহমতের পরিবর্তে রাগান্বিত হবেন। মাগফিরাতের পরিবর্তে পাপের বোঝা ভারী করবেন। নাজাতের পরিবর্তে পাকাড়াও করবেন।

শেয়ার করুন