আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে কোমল পানীয়ের সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হতে পারে। এতে স্থানীয় উৎপাদনে খরচ আরও বাড়বে। ফলে ক্রেতাদের বেশি দামে কোমল পানীয় খেতে হবে। বর্তমানে স্থানীয় পর্যায়ে ২৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক এবং ১৫ শতাংশ মূসকসহ প্রায় ৪৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ রাজস্ব পরিশোধ করতে হয়। আগামী অর্থবছরের বাজেটে সম্পূরক শুল্ক ১০ শতাংশ বাড়ানো হতে পারে বলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে।
খাতসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বেভারেজ একটি বিকাশমান খাত। এ খাতে বিদেশি ও স্থানীয় বিনিয়োগ বাড়ছে। সম্পূরক শুল্ক বাড়ালে শিল্পের বিকাশ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। একই সঙ্গে অতিরিক্ত এই করের কারণে দেশীয় বাজারে পানীয়ের দাম বৃদ্ধি পাবে।
জানা গেছে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) রাজস্ব আয় বাড়ানোর শর্তপূরণে মরিয়া এনবিআর। কর-জিডিপি অনুপাত বাড়াতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের পরতে পরতে থাকবে রাজস্ব আয় বাড়ানোর ছক। স্থানীয় শিল্পের কর অবকাশ ও ভ্যাট
অব্যাহতির সুবিধা সংকুচিত করে আনা, কোমল পানীয়তে শুল্ককর বৃদ্ধি এবং সিগারেটের সম্পূরক শুল্ক ও মোবাইল ফোনে কথা বলা ইন্টারনেটের ওপর সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা আসতে পারে। ফলে ভোক্তা পর্যায়ে এসব পণ্য ও সেবার দাম বাড়তে পারে।
অন্যদিকে রাজস্ব আয় বাড়াতে জনস্বাস্থ্যে ঝুঁকি বিবেচনায় প্রতিবছরের ন্যায় এবারও সিগারেটের সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হবে। মোবাইল ফোনে কথা বলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারে সম্পূরক শুল্ক ৫ শতাংশ বাড়ানো হতে পারে। খুচরা পর্যায়ে ভ্যাট আদায় নিশ্চিত করতে ব্যাপকভাবে ইএফডি (ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস) মেশিন স্থাপনের রূপরেখা থাকবে। এ ছাড়া ২০২৫ সালের জুন নাগাদ যেসব স্থানীয় শিল্পের ভ্যাট অব্যাহতির মেয়াদ শেষ হবে, সেগুলোর নতুন করে সুবিধা দেওয়া হবে না।
একইভাবে বাজেটে আয়কর খাতে কর অবকাশ সুবিধা কাটছাঁট করা হবে। বিত্তবানদের কাছ থেকে আয়কর আদায় বাড়াতে ব্যক্তিশ্রেণির সর্বোচ্চ করহার ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা হতে পারে। করজাল বাড়াতে নতুন কর অঞ্চলগুলোর কার্যক্রম জোরদারের পরিকল্পনা থাকবে। শুল্ক খাতে আগামী বাজেটে নতুন শুল্ক আইন বাস্তবায়নের ঘোষণা থাকবে।
এ ছাড়া অযাচিত অব্যাহতির পরিমাণ কমিয়ে আনা, বকেয়া শুল্ক আদায় কার্যক্রম জোরদার, আদালতে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি, শুল্ক আদায় প্রক্রিয়ায় অটোমেশন এবং কাস্টমস রিস্ক ম্যানেজমেন্টে কার্যকর রূপরেখা থাকবে। নীতিসংস্কারসংক্রান্ত কর্মপরিকল্পনাগুলো প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর অনুমোদনসাপেক্ষে আগামী অর্থবছরের বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে।