২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, শুক্রবার, ০৪:৪১:৫০ পূর্বাহ্ন
বিরূপ প্রভাব পড়বে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৬-০৫-২০২৪
বিরূপ প্রভাব পড়বে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে

দেশে আশঙ্কাজনক হারে কমছে শিল্পোৎপাদন। এর বিরূপ প্রভাব পড়বে বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ও সার্বিক অর্থনীতিতে। বিষয়টি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে উদ্যোক্তা ও অর্থনীতিবিদদের। বিশ্লেষকরা বলছেন, অব্যাহত উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে অভ্যন্তরীণ চাহিদা কমার পাশাপাশি রপ্তানি পণ্যের সরবরাহও কমেছে।


এর মধ্যে বাড়তি চাপ তৈরি করেছে সরকারের আমদানি নিয়ন্ত্রণ এবং গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি। চলতি অর্থবছরে মূলধনী যন্ত্রপাতি (ক্যাপিটাল মেশিনারি), কাঁচামাল এবং শিল্পের মধ্যবর্তী পণ্য আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়ায় এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে দেশের শিল্পোৎপাদন ও কর্মসংস্থানে।

গত সোমবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত তথ্যে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরে দেশের শিল্পোৎপাদনের প্রবৃদ্ধি ৬.৬৬ শতাংশে নেমে এসেছে, যা কভিড-১৯ মহামারি শুরুর পর থেকে সর্বনিম্ন। গত বছর এ খাতের প্রবৃদ্ধি ছিল ৮.৩৭ শতাংশ।


এর আগের দুই অর্থবছরে শিল্পোৎপাদনে প্রবৃদ্ধির হার ছিল যথাক্রমে ৯.৮৬ শতাংশ ও ১০.২৯ শতাংশ। সে বিবেচনায় চলতি অর্থবছরের প্রবৃদ্ধিতে তীব্র পতন দেখা যাচ্ছে।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য বলছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১১.৬৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পর করোনা মহামারির কারণে লম্বা সময় ধরে লকডাউনের ফলে শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি নেমে আসে ৩.৬১ শতাংশে। ২০২০-২১ অর্থবছরে ঘুরে দাঁড়িয়ে শিল্প খাতে ১০.২৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের পরের বছর থেকেই এ খাতে প্রবৃদ্ধি কমছে।


এ হিসাবে শিল্প খাতে চলতি অর্থবছরে চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন প্রবৃদ্ধি হচ্ছে।

শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি কমে আসার পেছনে বিনিয়োগ পরিবেশের অভাবকে দায়ী করছেন শিল্প উদ্যোক্তা ও অর্থনীতিবিদরা। তাঁরা বলছেন, গ্যাস ও বিদ্যুতের সরবরাহ কমে আসার বিপরীতে দাম বাড়ছে। অন্যদিকে ব্যাংকিং খাতে তারল্য সংকটের মধ্যেই সরকারের অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ বেড়ে যাওয়ায় ব্যক্তি উদ্যোক্তারা বিনিয়োগের প্রয়োজনীয় ঋণ পাচ্ছেন না।


পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছর জিডিপির অনুপাতে বিনিয়োগের হার আগের বছরের ৩০.৯৫ শতাংশ থেকে তিন বেসিস পয়েন্ট বেড়ে ৩০.৯৮ শতাংশে উঠেছে।


তবে একই সময়ে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ ০.৬৭ শতাংশ কমেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ জিডিপির ২৩.৫১ শতাংশে নেমে এসেছে, যা আগের অর্থবছরে ছিল ২৪.১৮ শতাংশ। পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে জিডিপির ২২.০৭ শতাংশ বিনিয়োগ হয়েছিল ব্যক্তি খাতের হাত ধরে। এর পরের বছর এই হার বেড়ে দাঁড়ায় ২৩.৭০ শতাংশ। এর পরের বছরগুলোতে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ জিডিপির ২৪ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশে ওঠানামা করেছে। এ হিসাবে চলতি বছর জিডিপিতে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগের অবদান গত ৯ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে এসেছে।


পর্যালোচনায় আরো দেখা গেছে, শিল্প খাতের সবচেয়ে বড় উপখাত ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে চলতি বছর ৬.৫৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে, যা আগের বছর ছিল ৮.৮৯ শতাংশ। ২০২০-২১ অর্থবছরে ১১.৫৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পর থেকেই এ খাতে প্রবৃদ্ধি কমছে।


শেয়ার করুন