রাজধানী ঢাকাতে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমালের’ প্রভাবে দমকা বাতাসের সঙ্গে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। এ বৃষ্টিপাত সোমবার সারাদিন থাকতে বলে পূর্বাভাসে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন উপকূলীয় স্থান থেকে ঝোড়ো বাতাস ও বর্ষণের খবর পাওয়া যাচ্ছে।
রোববার ৯টার দিকে ‘রেমাল’ উপকূল অতিক্রম শুরু করে। এর তাণ্ডবে উপকূলীয় অঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি পড়ছে। বাদ যায়নি রাজধানীও। মধ্যরাত থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে রাজধানীতে। সঙ্গে বইছে দমকা বাতাসও। এতে কয়েক দিনের অব্যাহত গরম কমে কিছুটা শীতল অনুভূত হচ্ছে। আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, বৃষ্টি ঝরিয়ে সকালে দুর্বল হবে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। রোববার রাত থেকে বেশিরভাগ এলাকায় ঝড়বৃষ্টি হচ্ছে। সোমবার সারা দেশেই বৃষ্টি হবে। এমনকি মঙ্গলবারও বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।
সোমবার সকালে আবহাওয়ার ১৭ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ‘রেমাল’ উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করে বর্তমানে কয়রা, খুলনার নিকট অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমশ বৃষ্টিপাত বাড়িয়ে পরবর্তী ২-৩ ঘণ্টার মধ্যে কিছুটা দুর্বল হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।
আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটার এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এ সময় পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
এছাড়া কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদী বন্দরসমূহকে ৪ নম্বর নৌ-মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮ থেকে ১২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪-৮৮ মিমি/২৪ ঘণ্টা) থেকে অতি ভারী (২৮৯ মিমি / ২৪ ঘণ্টা) বর্ষণ হতে পারে। অতি ভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধ্বস হতে পারে।
বলা হলো।
এ সময় উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।