২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৮:২৭:৪৮ অপরাহ্ন
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও কর্মসংস্থান বাড়ানোই বাজেটের মূল লক্ষ্য
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৯-০৫-২০২৪
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও কর্মসংস্থান বাড়ানোই বাজেটের মূল লক্ষ্য

আগামী অর্থবছরের (২০২৪-২৫) বাজেটের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। সেই সঙ্গে সরকারের নির্বাচনি ইশতেহার বাস্তবায়নেরও বাজেট। তবে এ বিষয়ে বলার দায়িত্ব আমার নয়, এটি অর্থমন্ত্রীর বিষয়। আমি এতটুকু বলতে পারি, আগামীর বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বা উন্নয়ন বাজেট হচ্ছে সতর্কতার সঙ্গে সংকোচনমূলক। কেননা বর্তমান বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে সমন্বয় করে বাজেট তৈরি করা হয়েছে। এর ফলে এডিপির আকার খুব বেশি বাড়েনি বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. শহীদুজ্জামান সরকার। ভর্তুকি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের পরামর্শ গ্রহণ করতে পারি; কিন্তু আমরা অর্থনীতির স্বার্থে আমাদের মতো করেই সিদ্ধান্ত নেব। মঙ্গলবার যুগান্তরের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন যুগান্তরের স্টাফ রিপোর্টার-হামিদ-উজ-জামান

যুগান্তর : আগামী অর্থবছরের বাজেট কেমন হচ্ছে?
শহীদুজ্জামান সরকার : আগামী অর্থবছরের বাজেটের মূল লক্ষ্য হচ্ছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং নির্বাচনি ইশতেহার বাস্তবায়ন করা। এসব করতে গিয়ে আমাদের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, দীর্ঘমেয়াদি প্রেক্ষিত পরিকল্পনা এবং শতবর্ষের ডেল্টা প্ল্যানসহ সব ধরনের পরিকল্পনার সঙ্গে সমন্বয় করা হবে। তবে আগামী অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বা উন্নয়ন বাজেট হচ্ছে সতর্কতার সঙ্গে সংকোচনমূলক। কেননা বর্তমান বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ অবস্থা এবং বাস্তবতা বিবেচনা করে আমরা এডিপির আকার বাড়িয়েছি মাত্র ২ হাজার কোটি টাকা। 
যুগান্তর : এডিপি তৈরির ক্ষেত্রে কোন বিষয়কে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন?
শহীদুজ্জামান সরকার : এডিপি তৈরিতে সবার আগে গুরুত্ব পেয়েছে কর্মসংস্থান সৃষ্টি। বৃহত্তর অর্থে বলতে গেলে দারিদ্র্য বিমোচন। কেননা আমরা যা কিছুই করি, তার মূলেই রয়েছে দেশের মানুষের উন্নয়ন এবং তাদের অবস্থার পরিবর্তন করা। এজন্য সবার আগে তাদের দারিদ্র্য অবস্থা থেকে বের করে আনতে হবে। পাশাপাশি দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে লজিস্টিক সাপোর্ট বাড়াতে হবে। এই যেমন ধরুন, জনগণ ও পণ্যের চলাচল সহজ এবং দ্রুত করতে হবে। সেজন্য অবকাঠামো, রাস্তাঘাট ইত্যাদির উন্নয়ন করতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অবকাঠামো উন্নয়ন হলে দেশ এগিয়ে যাবে। 
যুগান্তর : বরাদ্দের ক্ষেত্রে গুরুত্বগুলো বলবেন? 
শহীদুজ্জামান সরকার : খাতভিত্তিক এডিপির সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে পরিবহণ ও যোগাযোগে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ রয়েছে শিক্ষা খাতে। তবে মন্ত্রণালয়ভিত্তিক সর্বোচ্চ বরাদ্দ পেয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। এছাড়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগ এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ বিভাগে।
যুগান্তর : প্রকল্প বাস্তবায়নে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে কোনো উদ্যোগ থাকবে?
শহীদুজ্জামান সরকার : এটা ঠিক যে সততা, নিষ্ঠা ও দুর্নীতির জায়গাগুলোয় আমরা এখনো কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারিনি। তবে জিকে শামীমের মতো একক ঠিকাদারের আধিপত্য আর থাকবে না। সিস্টেম সেটিকে নো করে দেবে। আমরা সরকারি ক্রয় আইন ও বিধিমালা সংশোধনের কাজ করছি। এছাড়া টেন্ডারবাজির যে চিত্র আগে ছিল, টেন্ডার বাক্সের ওপর পা তুলে বসে থাকা কিংবা আর কাউকে অংশ নিতে না দেওয়ার সেই দিনকে সিস্টেম নো করে দিয়েছে। এখন ইজিপিতে দরপত্র আহ্বান থেকে শুরু করে এ সংক্রান্ত সব কাজ করা হচ্ছে। দুর্নীতি কমাতেই এসব সিস্টেম কার্যকর করা হয়েছে। এরপরও যে একেবারেই দুর্নীতি কমে গেছে, সেটি বলা যায় না। আমরা চেষ্টা করছি। প্রধানমন্ত্রী প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে যাচ্ছেন সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য। এজন্যই তো তিনি ইজিপির মতো সিস্টেম এনেছেন। আবার আগে বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ হতো আমাদের মতো লোকদের মাধ্যমে। ফলে লাখ লাখ টাকা নিয়ে নিয়োগ দেওয়া হতো। সেটি বন্ধে প্রধানমন্ত্রী শিক্ষক নিয়োগের দায়িত্ব দিয়েছেন এনটিআরসিএকে। তিনি তো ভাবতে পারতেন আমার নেতাকর্মীরা ইনকাম করে খেয়ে বাঁচুক। তিনি সেটি ভাবেননি। বরং অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষকে দায়িত্ব দিয়েছেন। এগুলো দুর্নীতির বিরুদ্ধে বড় উদ্যোগের অংশ।

শেয়ার করুন