সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ও নওগাঁ-২ (পত্নীতলা ও ধামইরহাট) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকারসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, হত্যাচেষ্টা, হয়রানি ও হুমকির অভিযোগে মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বিকালে নওগাঁর আমলী আদালত-৪-এ মামলাটি করেন পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর পৌরসভার হরিরামপুর দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা শামসুল হক নামের এক ব্যক্তি।
বাদীর আইনজীবী মনসুর আলী বলেন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামান সরকারকে এক নম্বর আসামি করে মোট পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলার বিবাদী করা হয়েছে। অন্যরা হলেন, নজিপুর পৌরসভার সদ্য সাবেক মেয়র ও পত্নীতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল কবির চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ অরুণ, নজিপুর পৌরসভার সরদারপাড়া মহল্লার বাসিন্দা রেজাউল মামুদ স্বপন ও মোজাহারুল ইসলাম। আদালত বাদীর অভিযোগ গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অভিযোগে বাদী উল্লেখ করেন, পত্নীতলা উপজেলা নজিপুর পৌরসভার হরিরামপুর মৌজায় শামসুল হক ক্রয় সূত্রে ১৫ শতক জমি প্রাপ্ত হয়ে ২০১৬ সাল থেকে ভোগদখল করে আসছিলেন। ওই বছরেই সম্পত্তিটিতে তিনটি টিনের ঘর নির্মাণ করেন শামসুল হক।
ক্রয় সূত্রে জমিটি প্রাপ্ত হওয়ার পর থেকেই নজিপুর সরদারপাড়া রেজাউল মামুদ ও মোজাহারুল ইসলাম ওই সম্পত্তি তাদের বলে দাবি করে জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা করতে থাকে। বৈধ কাগজপত্রের অভাবে জমিটি দখল করতে ব্যর্থ হওয়ার পর তারা নওগাঁ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবকে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামান সরকার ও নজিপুর পৌরসভার মেয়র রেজাউল কবির চৌধুরীর ছত্রছায়ায় প্রায় ১ কোটি টাকা মূল্যের ওই সম্পত্তি বেদখল করার চেষ্টা অব্যাহত রাখে। একপর্যায়ে বাদী শামসুল হক বিরোধ নিরসনে সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামান সরকারের কাছে গেলে তিনি ওই জমির দখল বুঝে দেওয়ার জন্য তার কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ অবস্থায় শামসুল হক ওই জমির ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলা করলে পত্নীতলা সহকারী জজ আদালত বিরোধপূর্ণ ওই জমির ওপর স্থিতিবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেন।
চাঁদার টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় প্রতিমন্ত্রী শহিদুজ্জামান সরকারের নির্দেশে পত্নীতলা থানা পুলিশ শামসুল হক ও তার ছেলেকে প্রায় ৮ ঘন্টা আটকে রেখে নির্যাতন চালায়। মিথ্যা মামলা ও হত্যার হুমকি দিয়ে জোরপূর্বক স্ট্যাম্পে এবং সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই ঘটনার পর থেকে রেজাউল মামুদ ও মোজাহারুল ইসলাম অবৈধভাবে দখল করে ভোগদখল করে আসছেন। ক্ষমতার পালাবদল ঘটার অপেক্ষায় থাকা বাদী শামসুল হক আজ মঙ্গলবার বিকেলে নওগাঁর আমলী আদালত-৪-এ মামলাটি দায়ের করেন।