নাগরিকদের মেন্টালিটির পরিবর্তন হলেই রাষ্ট্র সংস্কার সার্থক হবে বলে মন্তব্য করেছেন ভলান্টারি অর্গানাইজেশন স্বপ্নবাজ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও তরুণ সাংবাদিক আমানুল্লাহ আমান। আজ শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজশাহীর পবায় এক অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এ সময় আমানুল্লাহ আমান বলেন, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের তথ্যমতে, ২০০৯ সালে দুর্নীতি ক্যাটাগরিতে সারাবিশ্বে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, এক নম্বর স্থান অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এই খ্যাতি কী আমরা চেয়েছিলাম? দেশটা দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছিল। এমন দুর্নীতি করা হয়েছিল, সাবেক অবৈধ প্রাইম মিনিস্টার হাসিনার পিওন ৪০০ কোটি টাকার মালিক এবং স্বয়ং তিনি নিজেই এটা স্বীকার করেছেন। দুর্নীতিতে বাংলাদেশের বর্তমান র্যাংকিং দশম। সুখী দেশের তালিকায় তলানির দিকে থাকলেও, দুর্নীতিতে ছিল ওপরের সারিতে।
তরুণ এ সাংবাদিক বলেন, প্রত্যেকটা সেক্টরে মানে রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। দুর্নীতি নেই কোথায়? একটা অফিস খুঁজে পাওয়া মুশকিল যে, এই অফিসে কোনো দুর্নীতি হয়নি বিগত স্বৈরশাসকের আমলে। দুর্নীতিতে বাংলাদেশ চারবার ১৩তম, দুইবার ১৪তম, একবার করে ১২,১৫,১৬ ও ১৭তম হয় বলে তথ্য বেরিয়েছে। আমাদেরকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। কোনো অন্যায়, অনিয়ম, অপরাধ ও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয়া যাবে না। এসবের বিরুদ্ধে সবসময় আমাদের বজ্রকণ্ঠ রাখতে হবে। অন্যায়ের সঙ্গে, দুর্নীতির সঙ্গে কোনো আপোষ করা চলবে না। আমরা এটাকে 'জিরো ফিগারে' দেখতে চাই। সম্পদ আমাদের, দেশ আমাদের; যা আছে দেশের সম্পদ, আপামর জনসাধারণের। আকাঙ্খার বাংলাদেশ গড়তে সকল অনিয়ম ও লুটপাট-দুর্নীতিকে শেকড়সহ মূলোৎপাটন করতে হবে।
আমানুল্লাহ আমান আরও বলেন, আমাদের পরিবর্তন ঘটাতে হবে মনমানসিকতার। সুস্থ মানসিকতা আনতে হবে। দেশে সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে, রিফর্ম চলছে বিভিন্ন সেক্টরে। আমাদের চিন্তাভাবনা মনমানসিকতা সুস্থ জায়গায় নিয়ে আসতে পারলে তবেই এটা সার্থক হবে। পরিবর্তন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঐক্য এবং প্রতিরোধ, এটা শুধু প্রশাসনের কাজ নয়, এটা শুধু দুর্নীতি দমন কমিশন বা সরকারের কাজ নয়; এটা আপনি, আমি, আমরা আমাদের সবারই দায়িত্ব যে, আমরা কেউ দুর্নীতির সঙ্গে আপোষ করবো না। প্রতারণা, আত্মসাৎ এগুলোর সঙ্গে কমপ্রোমাইজ করবো না।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন কলেজের প্রফেসর, এসোসিয়েট প্রফেসর, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।