গত ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে দেশের রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল নির্বাচন পদ্ধতি। নির্বাচিত দলীয় সরকারের অধীনে হবে, না কি নির্দলীয় সরকারের অধীনে-এ নিয়ে বহুবার উত্তাপ ছড়িয়েছে দেশের রাজনীতি। এমন বিতর্কের অবসান হয়েছিল ১৯৯৬ সালে। তখন প্রবল বিক্ষোভের মুখে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন ব্যবস্থা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করে ক্ষমতাসীন বিএনপি। কিন্তু ২০১১ সালে আওয়ামী লীগ সংবিধান থেকে এই নির্বাচন পদ্ধতি বাতিল করে দেয়।
তবে নতুন কথা হচ্ছে, সংবিধানে ‘ফিরছে’ নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা। তবে সেটি ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ নামে ফিরবে, না কি ‘নির্বাচনকালীন সরকার’ হয়ে আসবে– তা এখনও স্পষ্ট নয়। এছাড়া সংবিধান সংস্কার প্রক্রিয়া গঠিত কমিটির মাধ্যমে হবে, না কি আদালতের রায়ে ফিরবে– সেটিও অস্পষ্ট। এ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোরও রয়েছে নানান মত।
রোববার (২০ অক্টোবর) তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায় রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদনের জন্য বিএনপি আদালতে গেলে আগামী বৃহস্পতিবার শুনানির দিন ধার্য করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে এই শুনানি হবে। তবে অন্য দলগুলো এই দাবির পক্ষে একমত পোষণ করলেও রিভিউ আবেদনের সঙ্গে তারা সম্পৃক্ত নন। সংবিধান সংস্কারে বর্তমান সরকার গঠিত কমিশন এ বিষয়ে সরকারের কাছে সুপারিশ করবে বলে তারা মনে করছেন।
তবে বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহ্দীন মালিক মনে করেন, আদালতের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার সুযোগ নেই। কারণ, এটি বাতিল হয়েছিল জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী বিল পাসের মাধ্যমে। যদিও পঞ্চদশ সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করে আদালতে একটি রিট করা আছে। এই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল হলে ফিরে আসতে পারে।
এর আগে দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে চারটি সংসদ নির্বাচন হয়। তবে সে সময়ও এই ব্যবস্থার বেশ কিছু দুর্বলতা চিহ্নিত করেছিল রাজনৈতিক দলগুলো। এমনকি তত্ত্বাবধায়ক প্রধান কে হবেন– তা নিয়ে আদালতের রায়ে সাবেক প্রধান বিচারপতির পদকে বাদ দেওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।