মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) ৫৭৯ কর্মকর্তাকে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের অনুমোদন দিয়ে নীতিমালা চূড়ান্ত করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
তবে অস্ত্র ব্যবহারের বিষয়ে নীতিমালায় বলা হয়েছে, ‘একমাত্র সর্বশেষ পন্থা’ হিসেবে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা যাবে। গত ২৪ নভেম্বর নীতিমালাটি চূড়ান্তকরণের জন্য মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
নীতিমালায় বলা হয়েছে— সংস্থাটির উপপরিচালক, সহকারী পরিচালক, পরিদর্শক ও উপপরিদর্শক পদমর্যাদার কর্মকর্তারা ৯ মিমি সেমি অটোমেটিক টি-৫৪ পিস্তল পাবেন। মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা, আসামি গ্রেফতার ও আলামত উদ্ধার, আত্মরক্ষা বা সরকারি সম্পত্তি রক্ষার ক্ষেত্রে ‘একমাত্র সর্বশেষ পন্থা’ হিসেবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা গুলিবর্ষণের সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
তবে আদেশ দাতাকে অধিদপ্তর বা নির্বাহী তদন্তে গুলি করার যৌক্তিকতা প্রমাণ করতে হবে। গুলি করার আদেশ দেওয়ার আগে যতদূর সম্ভব বলপ্রয়োগ (যেমন লাঠিপেটা ও অস্ত্রের বাঁট দিয়ে আঘাত) করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করা যাবে না।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, তাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, মাঠপর্যায়ে দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অস্ত্র দেওয়া। কারণ, মাদকবিরোধী অভিযান খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, পুলিশ বিভাগ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর অস্ত্র নীতিমালার সঙ্গে সংগতি রেখে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (কর্মকর্তা-কর্মচারী) অস্ত্র সংগ্রহ নীতিমালা-২০২৪ প্রণয়ন করা হয়েছে। নীতিমালা জারির তারিখ থেকে এটি কার্যকর হবে।
অস্ত্র পাচ্ছেন যারা: নীতিমালায় বলা হয়েছে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মোট জনবল ৩ হাজার ৫৯ জন। এর মধ্যে ৯০ জন উপপরিচালক, ৯৩ জন সহকারী পরিচালক, ১৮৬ জন পরিদর্শক এবং ২১০ জন উপপরিদর্শক রয়েছেন। তারা আগ্নেয়াস্ত্র বহন এবং ব্যবহারে অনুমতি পাচ্ছেন। তাদের জন্য অগ্রাধিকারভিত্তিতে অস্ত্র সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু করা হবে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের বিষয়ে নীতিমালায় বলা হয়েছে, সেনাবাহিনী বা বিজিবি বা আনসার বা পুলিশ বিভাগের সহযোগিতায় সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণ একাডেমিতে অধিদপ্তরের অগ্রাধিকারভুক্ত কর্মকর্তা–কর্মচারীদের অস্ত্র পরিচালনার প্রশিক্ষণ দিতে হবে। পরে অধিদপ্তরের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের মধ্য থেকে দক্ষ প্রশিক্ষক তৈরি করে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
অস্ত্রসংক্রান্ত নীতিমালায় বলা হয়েছে, গুলি করার প্রয়োজন হলে প্রথমে কারও দিকে তাক না করে আকাশের দিকে ফাঁকা গুলি ছুড়তে হবে। পাশাপাশি ঘোষণা দিতে হবে, এরপর সরাসরি তাক করে গুলি করা যাবে।
ন্যূনতম বলপ্রয়োগ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এক থেকে দুটি গুলি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা গেলে এর বেশি গুলি করা যাবে না। ফাঁকা গুলির মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে একজন মাদক কারবারির কোমরের নিচে, হাঁটু অথবা পায়ে একটি গুলি করা যাবে।