টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে মাধ্যমিক স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৪৩ হাজার শিক্ষার্থীর ২০২৫ সালের নতুন শিক্ষাবর্ষের প্রায় পাঁচ লাখ নতুন বই পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পরেছে। প্রতি বছর অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে নতুন বই উপজেলা শিক্ষা অফিসে চলে আসলেও এ বছর এখন পর্যন্ত ২০২৫ সালের শিক্ষাবর্ষের কোন নতুন বই মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া যায়নি বলে জানা যায়। এতে শিক্ষা অফিসের পাশাপাশি শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা চিন্তিত।
নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে আর মাত্র এক সপ্তাহ বাকি। এই অল্প সময়ে নতুন বই কবে আসবে এবং তা শিক্ষার্থীদের হাতে কবে দিতে পারবে তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন উপজেলা শিক্ষা অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার মির্জাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, গত বছর ২০২৪ সালের শিক্ষাবর্ষে এই উপজেলায় প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য নতুন বইয়ের চাহিদা ছিল প্রায় চার লাখ। চলতি শিক্ষাবর্ষে ২০২৫ সালের নতুন শিক্ষাবর্ষে ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থী রয়েছে প্রায় ৪৩ হাজার। এই শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন শিক্ষাবর্ষে বইয়ের চাহিদা রয়েছে প্রায় পাঁচ লাখ। আবার দাখিল মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী রয়েছে প্রায় তিন হাজার। তাদের জন্যও কোন নতুন বই আসেনি। সব মিলিয়ে নতুন শিক্ষাবর্ষের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর নতুন বই হাতে পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পরেছে।
বংশাই স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আমজাদ হোসেন, কুড়িপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নুরুল ইসলাম নুরু, জামুর্কি নবাব স্যার আব্দুল গণি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সাদেক আলী মিয়া, আফাজ উদ্দিন সিনিয়র দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা মো. ফজলুল করিম, বাঁশতৈল হাজী ময়েজ উদ্দিন দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. আরিফ হোসেন ও মজদৈই উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. তোফাজ্জল হোসেনসহ অন্তত ২০ জন প্রধান শিক্ষক এবং সুপারও অভিযোগের পাশাপাশি শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
তাদের অভিযোগ, প্রতি বছর শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হতো। শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছিল উত্সাহ-উদ্দীপনা। ডিসেম্বর মাসের আজ ২৬ তারিখ। নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হতে আর মাত্র এক সপ্তাহ বাকী। এখন পর্যন্ত একটি নতুন বইও হাতে পাওয়া যায়নি। নতুন বই আসবে কিনা শিক্ষা অফিস থেকেও সু-নির্দিষ্ট ভাবে কিছু বলতে পারছেন না। বছরের প্রথম দিন থেকে শ্রেণীকক্ষে শিক্ষার্থীদের কোন বই দিয়ে পাঠদান করাবে তা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পরেছেন। ফলে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী নিয়ে তারা এখন চরম বিপাকে পরেছেন।
জানা গেছে, মির্জাপুর পৌরসভা ও মহেড়া, জামুর্কি, ফতেপুর, বানাইল, আনাইতারা, ভাতগ্রাম, ওয়ার্শি, ভাওড়া, বহুরিয়া, লতিফপুর, গোড়াই, আজগানা, তরফপুর ও বাঁশতৈল এই ১৪ ইউনিয়নে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫৪ টি এবং মাদ্রাসা রয়েছে ১৪ টি। মাধ্যমিক পর্যায়ের এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী প্রতি বছর বছরের প্রথম দিনে উত্সব মুখর পরিবেশে নতুন বই পেয়ে আসছে। নতুন বই পাওয়ায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যেও ছিল প্রাণ চাঞ্চল্য।স্কুলে স্কুলে হতো বই উত্সবসহ নানা অনুষ্ঠান। এ বছরের চিত্র পুরোপুরি ভিন্ন। চলতি বছর শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে নেই কোন প্রাণ চাঞ্চল্য ও উত্সাহ-উদ্দীপনা।