চা বলতে সুগন্ধযুক্ত ও স্বাদবিশিষ্ট এক ধরনের উষ্ণ পানীয়কে বোঝায়; যা চা-পাতা পানিতে ফুটিয়ে বা গরম পানিতে ভিজিয়ে তৈরি করা হয়। চা গাছের বৈজ্ঞানিক নাম ক্যামেলিয়া সিনেনসিস। চায়ের ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো টি (tea)। গ্রিকদেবী থিয়ার নামানুসারে এরূপ নামকরণ করা হয়েছিল। চীনে ‘টি’-এর উচ্চারণ ছিল ‘চি’। পরে হয়ে যায় ‘চা’।
পানির পরেই চা বিশ্বের সর্বাধিক উপভোগ্য পানীয়। এর একধরনের স্নিগ্ধ, প্রশান্তিদায়ক স্বাদ রয়েছে এবং অনেকেই এটি উপভোগ করেন। প্রস্তুত করার প্রক্রিয়া অনুসারে চা-কে পাঁচটি প্রধান শ্রেণিতে ভাগ করা যায়।
চীন দেশই চায়ের আদি জন্মভূমি। বর্তমানে এটি বিশ্বের সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য পানীয়রূপে গণ্য করা হয়। ১৬৫০ খ্রিস্টাব্দে চীনে বাণিজ্যিকভাবে চায়ের উৎপাদন শুরু হয়। ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশরা সিলেটে সর্বপ্রথম চায়ের গাছ খুঁজে পায়। এরপর ১৮৫৭ সালে সিলেটের মালনীছড়ায় শুরু হয় বাণিজ্যিক চা-চাষ।
চায়ের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় হলো লেবু চা। এই চা কেবল সুস্বাদুই নয়, রয়েছে অনেক উপকারিতাও। চলুন জেনে নেওয়া যাক-
১. ইমিউনিটি বুস্টার
লেবু ভিটামিন সি, ভিটামিন বি ৬, পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতো পুষ্টির একটি দুর্দান্ত উৎস। এসব উপাদান ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে এবং অ্যালার্জি ও সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চা পাতায় ফ্ল্যাভোনয়েড এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে; যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।
২. ত্বক ভালো রাখে
লেবু চা ত্বকের জন্য একটি সুপারফুড হিসেবে কাজ করে। এর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য শরীরে প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করে। লেবু চা ত্বকের রোগ যেমন ব্রণ এবং একজিমা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এবং ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।
৩. ওজন নিয়ন্ত্রণ
আপনি যদি কয়েক কেজি ওজন কমাতে চান তবে লেবু চা হতে পারে একটি উপকারী পানীয়। এটি শরীরকে ডিটক্স করতে সাহায্য করে এবং হজমে সাহায্য করে। এছাড়াও এতে বেশ কিছু অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে; যা শরীরকে ফিট রাখে।
৪. স্ট্রেস কমায়
এই চায়ে রয়েছে প্রচুর ফ্ল্যাভোনয়েড, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, কপার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট; যা মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। এক কাপ উষ্ণ লেবু চা আপনার মেজাজ উন্নত করতে, স্ট্রেস কমাতে এবং আপনাকে আরও আরামদায়ক বোধ করতে সাহায্য করতে পারে।
৫. অ্যাসিডিটির বিরুদ্ধে লড়াই করে
হজমের সবচেয়ে পরিচিত সমস্যার মধ্যে একটি হলো অ্যাসিডিটি। লেবু চা এটি নিয়ন্ত্রণে খুব কার্যকর। অ্যাসিডিটি প্রশমিত করতে লেবু যেকোনো চায়ে যোগ করা যেতে পারে, তবে দুধ মেশানো হলে সেই চায়ে লেবু মেশাবেন না। লেবুতে প্রচুর খাদ্য তালিকাগত ফাইবার রয়েছে; যা অন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং বিপাক নিয়ন্ত্রণ করে।