বাণিজ্যমেলা মানেই পুরো প্রাঙ্গণ কানায় কানায় পরিপূর্ণ থাকবে। স্টলগুলোর সামনে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় থাকবে। চারদিকে উৎসবের আমেজ বিরাজ করবে। তবে শুরুর দিন থেকেই এমন কিছু দেখা না গেলেও দশম দিনে মেলা যেন তার নিজস্ব রূপ ফিরে পায়।
এদিন (শুক্রবার) ছুটি থাকায় ক্রেতা দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো মেলাপ্রাঙ্গণ। কোথাও পা ফেলার জায়গা ছিল না। বেচাবিক্রি হয়েছে বেশ ভালো। এ কারণে ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি দেখা গেছে।
সকাল থেকেই ক্রেতাদর্শনার্থী মেলায় আসতে শুরু করেন। সকালে ক্রেতাদর্শনার্থী কিছুটা কম থাকলেও বিকালে পুরো মেলা দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে। ব্যবসায়ীরাও তাদের স্টলগুলোকে নানা রঙের বাতি জ্বালিয়ে রাঙিয়ে তুলেছেন। ছুটির দিনে মেলা সকাল ১০ থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকে।
এদিন বেশির ভাগ স্টলেই ছিল উপচে পড়া ভিড়। তবে সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা গেছে গৃহস্থালি, ইলেকট্রনিক্স, প্রশাধনী স্টলগুলোতে। এছাড়া শিশু পার্ক ও রেস্তোরাঁগুলোতে বসার কোনো জায়গা ছিল না। মেলার ভেতরে শিশু পার্কেও দাঁড়ানোর জায়গা ছিল না। বেশি লোকের সমাগম হওয়ায় রেস্তোরাঁগুলোতে খাবারের দাম বেশি নেওয়া হয়।
ক্রেতাদর্শনার্থীদের আগমন বেশি হওয়ায় তিনশ ফুট, এশিয়ান বাইপাস ও গাজীপুর বাইপাস সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন ক্রেতাদর্শনার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।
রোমান নামে কাপড় ব্যবসায়ী বলেন, এতদিনে মেলা জমে উঠল। আগে ক্রেতার চেয়ে দর্শনার্থী বেশি হলেও আজ মেলায় অনেক বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতাসমাগম দেখে ভালো লাগছে।
সুজন নামে এক জুতা ব্যবসায়ী বলেন, ‘লোক সমাগম দেখে ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটেছে। এত টাকা দিয়ে মেলায় স্টল বরাদ্দ নিয়েছি। বিক্রি না হলে লোকসানের সম্মুখীন হতে হতো। গত সপ্তাহে ছুটির দিনেও বিক্রি হয়েছিল। তবে দ্বিতীয় সপ্তাহের ছুটির দিনে বিক্রি অনেক ভালো হচ্ছে। আমরা বিভিন্ন ছাড় দিচ্ছি। ছাড় পেয়ে ক্রেতারাও কিনছেন নিজেদের পছন্দের পণ্য।’
রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে আমিনুল ইসলাম পরিবার নিয়ে মেলায় বেড়াতে এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমি বেসরকারি একটি ব্যাংকে চাকরি করি। ছুটির দিন তাই স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে মেলায় এসেছি। অনেক ভিড়। কোথাও পা ফেলার জায়গা নেই।’
এদিকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত অফার লুফে নিতে বাণিজ্যমেলায় যমুনার প্যাভিলিয়নে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।
যমুনা ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড অটোমোবাইল লিমিটেডের ম্যানেজার রাজিব সাহা বলেন, ছুটির দিন হওয়ায় ক্রেতাদের বেশ সারা পাচ্ছি। রাইসকুকার, রেফ্রিজারেশন, মাইক্রোওভেন, ইলেকট্রনিক ওভেন, গ্যাস বার্নার, কারিকুকার, ইনফারেন্সকুকার, রুমহিটার, ভেন্ডার, মিক্সারভেন্ডার, জুসার-এসব গৃহস্থালি পণ্য আমরা বিশেষ ছাড়ে বিক্রি করছি। এছাড়া যমুনা ইলেকট্রনিক্সের রেফ্রিজারেটর (ডাবল ডোর ও সিঙ্গেল ডোর) বিশেষ মূল্যে দেওয়া হচ্ছে। স্মার্ট টিভি ও গুগল টিভিসহ সব পণ্য যমুনার নিজস্ব ফ্যাক্টরিতে তৈরির কারণে সহজে ও কম দামে গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দিতে পারছি।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর সচিব ও বাণিজ্যমেলা পরিচালক বিবেক সরকার বলেন, মেলার সব স্টল নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। ছুটির দিন হওয়ায় মেলা কানায় কানায় পরিপূর্ণ ছিল। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সদস্য মোতায়েন রাখা হয়েছে। ক্রেতাদর্শনার্থীদের আসা যাওয়ার জন্য ২০০টির অধিক বিআরটিসির শাটল বাস রয়েছে।