২০ জানুয়ারী ২০২৫, সোমবার, ০৬:১১:১৭ অপরাহ্ন
বিতর্কের মুখে পদত্যাগই করছেন ফাহিম?
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০-০১-২০২৫
বিতর্কের মুখে পদত্যাগই করছেন ফাহিম?

বিশাল প্রত্যাশা নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) দায়িত্ব নিয়েছিলেন ফারুক আহমেদ ও নাজমুল আবেদীন ফাহিম। অথচ কয়েক মাসের মধ্যেই বিতর্কিত কিছু কর্মকাণ্ডে নাজমুল আবেদীনের পদত্যাগের জোড়ালো দাবি উঠেছে। তার বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ গঠনতন্ত্রে ‘বিতর্কিত’ সংশোধনী প্রস্তাবনা। 


বোর্ডের স্বার্থসংশ্লিষ্ট যে গঠনতন্ত্র সেটা সংশোধন সভাপতি ফারুক আহমেদের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন মনে করেননি পরিচালক নাজমুল আবেদীন। অনেক বিষয়ে পর্যাপ্ত আলোচনা না করেই আগে সংবাদমাধ্যমে প্রচার করা নিয়েও বিসিবির মধ্যে চরম অসন্তোষ। শুক্রবার আলোচনায় বসে নাজমুল আবেদীনকে সরাসরি সরে যাওয়ার দাবি তোলেন ঢাকা ক্রিকেট ক্লাব অর্গানাইজার্স অ্যাসোসিয়েশন। 


প্রাথমিকভাবে নাজমুল আবেদীনও তাতে সায় দেন। নাজমুল আবেদীন আহ্বায়ক, তিনি নিজেই চার সদস্যের গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটি করেছেন। দুজন আইনজীবীর সঙ্গে রয়েছেন মন্ত্রণালয়ের দুজন প্রতিনিধি। 


অথচ ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তিকেই তিনি কমিটিতে রাখেননি। সেই সংশোধনে ঢাকার ক্লাবকে প্রায় নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হয়েছে বলে ক্লাব কর্মকর্তাদের অভিযোগ। গঠনতন্ত্রে মোট অনুচ্ছেদ ৪৫টি। গুরুত্বপূর্ণ ধারায় বড় পরিবর্তন এসেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন ক্লাব প্রতিনিধি ক্যাটাগরি-২ পুরোপুরি বিলুপ্ত করা হয়েছে। পরিচালনা পরিষদ ২৫ জন থেকে কমিয়ে ২১ জনে করার প্রস্তাব করা হয়েছে। 


পরপর দুবার পরিচালক হলে আর কেউই এই পদের জন্য নির্বাচন করতে পারবেন না। বড় কোপ পড়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন ক্লাবগুলোর ওপর। যারা কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ক্রিকেটারদের পেছনে, তাদের স্বার্থ এখানে সামান্যই এসেছে। এছাড়া সাবেক ক্রিকেটারের জায়গায় জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত শব্দ জোড়া দেওয়ায় অনেকেই উদ্দেশ্যেমূলক ভাবছেন। 


বিসিবির এক পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে যুগান্তরকে বলেন, ‘গঠনতন্ত্র সংশোধন অনেক বড় ব্যাপার। এখানে সবার সঙ্গে আলোচনার ব্যাপার আছে। একই সঙ্গে বোর্ড সভাতে অনুমোদনেরও প্রয়োজন। অথচ এসব প্রক্রিয়া কেউই জানে না কিন্তু সংশোধনী প্রস্তাবনা নাকি মন্ত্রণালয়ে চলে গেছে। এটা কেউই ভালো চোখে দেখছেন না।’


শুক্রবার বিসিবি সভাপতির সঙ্গে আলোচনায় বসার আগে নাজমুল আবেদীনের সঙ্গে বসেন ঢাকা ক্রিকেট ক্লাব অর্গানাইজার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। নাজমুল আবেদীন তাদের অনুরোধ করেন লিগ চালিয়ে যেতে। তখন অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা বলেন, তাহলে আপনি পদত্যাগ করেন। নাজমুলও সায় দেন। 


এর আগে যমুনা টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাজমুল আবেদীন সরাসরি ফারুক আহমেদকে দোষারোপ করে পদত্যাগ করার কথা বলেন। পরে অবশ্য বিসিবি সভাপতি তার সঙ্গে কথা বলে দূরত্ব মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এখন পর্যন্ত এককভাবে করতে যাওয়া কোনো কাজই ঠিকঠাক করতে পারেননি নাজমুল। 


পদত্যাগের বিষয়ে নাজমুলের সঙ্গে যোগযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। মোহামেডান ক্লাবের সিনিয়র কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘ক্লাবের কারণেই আজ বিসিবি এই অবস্থানে। একসময় ক্লাবের অর্থেই বিসিবি চলত। অথচ সেই ক্লাবকে বাদ দিয়েই গঠনতন্ত্র, এটা মেনে নেওয়া যায় না। নাজমুল আবেদীনকে পদত্যাগ করতেই হবে।’


এদিকে মেয়েদের বিপিএল নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়ার আগেই সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করায় বিসিবি অনেকটাই বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে। বিসিবিতে পরিচালক হওয়ার পর থেকেই একাধিক বিভাগের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য মুখিয়ে ছিলেন নাজমুল। এখনো ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের পুরো দায়িত্ব না পাওয়ায় তিনি অসন্তুষ্ট।


শেয়ার করুন