‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান: নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে অমর একুশে বইমেলা। ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে ধারণ করে বাংলা একাডেমির আয়োজনে মাসব্যাপী চলবে এই প্রাণের উৎসব। এবারের বইমেলার উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বইমেলা উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বাংলা একাডেমির আব্দুল করীম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজমের উপস্থিতিতে মেলা কমিটির সদস্য সচিব সরকার আমিন লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
তিনি জানান, এবারের বইমেলার বিন্যাস আগের মতোই থাকছে, তবে মেট্রোরেলের কারণে প্রবেশ ও বাহিরপথে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। চারটি প্রবেশপথ থাকবে—টিএসসি, দোয়েল চত্বর, এমআরটি বেসিং প্ল্যান্ট এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট। খাবারের স্টলগুলো সুনিয়ন্ত্রিতভাবে বিন্যস্ত করা হয়েছে, নামাজের স্থান, ওয়াশরুমসহ অন্যান্য পরিষেবা আগের মতোই থাকবে। শিশুদের জন্য এবারও থাকছে আলাদা ‘শিশু চত্বর’, যেখানে তারা অবাধে ঘুরতে ও বই সংগ্রহ করতে পারবে।
বইমেলায় অংশ নেওয়া প্রকাশনা সংস্থাগুলো ২৫ শতাংশ ছাড়ে বই বিক্রি করবে। প্রতিদিন বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে সেমিনার এবং সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। ৮ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি ব্যতীত প্রতি শুক্র ও শনিবার থাকবে ‘শিশুপ্রহর’। শিশু-কিশোরদের জন্য থাকছে চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি ও সংগীত প্রতিযোগিতা। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচনের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।
নিরাপত্তার বিষয়ে বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মেলা প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ পুলিশ, র্যাব, আনসার ও গোয়েন্দা সংস্থা তৎপর থাকবে। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তিন শতাধিক ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়েছে। পুরো মেলা এলাকা পলিথিন ও ধূমপানমুক্ত থাকবে।
প্রকাশিত বইয়ের গুণগতমানের বিচারে দেওয়া হবে বিভিন্ন পুরস্কার। এর মধ্যে রয়েছে ‘চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার’, ‘মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার’, ‘রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার’ এবং ‘কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার’।
এবারের মেলায় ৭০৮টি প্রকাশনা সংস্থা অংশ নিচ্ছে, যার মধ্যে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে থাকবে ১৯৯টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৬০৯টি। এছাড়া থাকবে ৩৭টি প্যাভিলিয়ন ও ১৩০টি লিটল ম্যাগাজিন স্টল।
বইমেলা প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। ছুটির দিনে মেলা শুরু হবে সকাল ১১টায়। ২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস উপলক্ষে মেলা শুরু হবে সকাল ৮টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।