২০ মে ২০২৫, মঙ্গলবার, ০২:৩৭:৫৫ পূর্বাহ্ন
বেঁচে আছেন লোকটি, ভেঙ্গে গেছে পা
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-০৫-২০২৫
বেঁচে আছেন লোকটি, ভেঙ্গে গেছে পা

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল এক ভিডিওতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি ট্রেনের দরজার বাইরে ঝুলে রয়েছেন। কেউ একজন ট্রেনের ভেতর থেকে তার হাত ধরে আছে। ঝুলে থাকা লোকটি প্রাণে বাঁচার জন্য আর্তনাদ করছিলেন। শেষ পর্যন্ত ভেতর থেকে হাত ছেড়ে দিলে লোকটিকে রেললাইনে পড়ে যেতে দেখা যায়।


খোঁজ নিলে ঘটনাটির ব্যাপারে জানা যায়, গত রোববার (১৮ মে) বেলা ১টার দিকে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার নসরতপুর রেলস্টেশন এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তির নাম মতিউর রহমান (৫২)। তার বাড়ি নওগাঁর রানীনগর উপজেলার পাড়ইল গ্রামে। গুরুতর আহত অবস্থায় বর্তমানে তিনি বগুড়ায় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।


মতিউর রহমানের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মতিউর রহমান একজন আদম ব্যবসায়ী। তার মাধ্যমে দুই বছর আগে সজীব নামের এক যুবক সৌদি আরবে যান। কিন্তু কাগজপত্রে সমস্যা থাকায় ইকামা (কাজের সুপারিশ সনদ) না পাওয়ায় সজীবের পরিবারের সঙ্গে মতিউর রহমানের বিরোধ চলছিল। ওই বিরোধের জেরে সজীবের নির্দেশে কয়েকজন যুবক গতকাল মতিউর রহমানকে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দিয়ে হত্যার চেষ্টা করেন। সজীবের বাড়ি বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার তালসন গ্রামে।


মতিউর রহমানের ছেলে আহসান হাবিব বলেন, আমার বাবা গতকাল দুপুরে বগুড়া থেকে দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস নামের একটি ট্রেনে সান্তাহারে আসতেছিলেন। আসার পথে নসরতপুর রেলস্টেশনে আসার আগে বাবার কামরায় থাকা ১০ থেকে ১২ যুবক বাবাকে মারধর করতে শুরু করেন। একপর্যায়ে চলন্ত ট্রেনের দরজা দিয়ে তাঁরা বাবাকে নিচে ফেলে দেন। ট্রেন থেকে রেললাইনে পড়ে গেলেও ভাগ্য বলে ট্রেনের চাকা তার শরীরের ওপর দিয়ে যায়নি। তবে আঘাত লেগে একটা পা ভেঙে গেছে।’


আহসান হাবিব জানান, তার বাবাকে উদ্ধার করে প্রথমে আদমদীঘি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর মতিউর রহমান এখন বগুড়ায় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় কেউ মামলা নিচ্ছে না বলে দাবি করেন আহসান হাবিব। তিনি বলেন, আদমদীঘি থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ সান্তাহার জিআরপি পুলিশ স্টেশনে যোগাযোগ করতে বলে। গতকাল রাতে সান্তাহার জিআরপি পুলিশ স্টেশনে গেলে সেখানেও কোনো মামলা নেওয়া হয়নি।


অভিযোগ অস্বীকার করে সৌদি প্রবাসী সজিবের চাচা জাহাঙ্গীর আলম জানান, আমার ভাতিজা সজিব মতিউরের মাধ্যমে সৌদিতে গেছে। কিন্তু মতিউর আমার ভাতিজার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সৌদিতে যে কোম্পানিতে কাজ করার জন্য পাঠাইছে তারা এখনো ইকামা দেয়নি। কিন্তু মতিউর আমার ভাতিজাকে ইকামা পাইয়ে দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। এখনো ইকামা দেওয়ার কথা বলে নানা তালবাহানা করতেছে। এটা নিয়ে মতিউরের সঙ্গে আমাদের বিরোধ চলতেছে। তবে তাকে ট্রেনে মারধর ও ফেলে দেওয়ার বিষয়ে আমাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নাই।


সান্তাহার রেলওয়ে জংশনের জিআরপি পুলিশ স্টেশনের পরিদর্শক হাবিবুর রহমান বলেন, ফেসবুকে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়তে আমরাও দেখেছি। তবে এ ঘটনায় জিআরপি পুলিশ স্টেশনে কেউ কোনো অভিযোগ দিতে আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


শেয়ার করুন