রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত সিটি হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর রানীনগর এলাকায় অবস্থিত সিটি হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান কার্যক্রম আনুষ্ঠানিভাবে শুরু করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন।
প্রসঙ্গত, এখন থেকে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সিটি হাসপাতালে সাধারণ রোগীদের সেবা, প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা, প্রসব পূর্ব সেবা, প্রসব সেবা, নরমাল ও সিজারিয়ান ডেলিভারী সেবা, প্রসব পরবর্তী সেবা, ফ্যামিলি প্ল্যানিং সেবা, শিশু স্বাস্থ্য সেবা, চক্ষুসেবা, কিশোর-কিশোরী স্বাস্থ্যসেবা, চর্মরোগীদের সেবা, পুষ্টি সেবা, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সেবা, সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ, অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ, রোগ নিরূপন সেবা, ডেন্টাল সেবা, স্বল্প খরচে প্যাথলজিক্যাল সেবা ও এ্যাম্বুলেন্সসেবা প্রদান করা হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন স্বাস্থ্যসেবায় সারাদেশের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য অবস্থানে রয়েছে। ইপিআই কার্যক্রমে জাতীয়ভাবে পরপর ১০বার দেশসেরা হয়েছি। এই অর্জন ধরে রেখে সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম আরো বৃদ্ধি করতে চাই।
রাসিক মেয়র বলেন, সিটি হাসপাতালটি আরো উন্নত সেবার আশায় বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় দেয়া হয়েছিল। তবে সেখানে আশানুরূপ ফল না আসায় পুনরায় সিটি কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনায় অবকাঠামো সংষ্কার করে পুনরায় চালু করা হলো। চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নে ইতোমধ্যে চিকিৎসক, ফার্মাসিষ্ট ও মেডিকেল টেকনিশয়ান নিয়োগ দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আরো চিকিৎসক ও অন্যান্য স্টাফ নিয়োগ দেয়া হবে।
সিটি হাসপাতালটি গরীব-অসহায় মানুষের স্বাস্থ্য সেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছি। এছাড়া সিটি হাসপাতাল সংলগ্ন রাস্তাটি প্রশস্ত করা এবং পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল ও কলেজে পরিণত করতে একটি প্রকল্প সমাজকল্যান মন্ত্রণালয়ে দাখিল করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ১৮৬৭ কোটি টাকার রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প পাস হয়েছে। রাজশাহীতে একটি পুর্নাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা করতে আমরা এটি করতে পারবো।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, মানুষের কঠিন সময়ে চিকিৎসকরা যতটা কাছাকাছি থেকে সেবা প্রদান করতে পারে, অন্য পেশার কেউ সেটি পারেন না। করোনাকালীন সময়ে সেই প্রমাণ আমরা পেয়েছি। সে সময় চিকিৎসকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের সেবা দিয়েছে।
ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা আরো বলেন, সিটি হাসপাতালে স্বল্প খরচে ভালোভাবে চিকিৎসা সেবা পাবে জনগণ। আমার স্বপ্ন রাজশাহীতে অতি উন্নত ও আধুনিক মানের একটি হাসপাতাল হবে। রাজশাহীর মানুষকে ঢাকা বা দেশের বাহিরে গিয়ে যাতে চিকিৎসা নিতে না হয়। একজন চিকিৎসক হিসেবে নগরপিতার নিকট আমি এই দাবি করছি।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন সিটি কর্পোরেশনের ২৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তরিকুল আলম পল্টু, জোন কাউন্সিলর উম্মে সালমা বুলবুলি, মতিহার থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান ও প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আঞ্জুমান আরা বেগম।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাসিকের সচিব মোঃ মশিউর রহমান, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর শিরিন আরা, ২৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানী মাসুম, রাসিকের সিটি হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. তারিকুল ইসলাম বনি, মেডিকেল অফিসার (জরুরী) ডা. তামান্না বাসার, ডা. উম্মুল খায়ের ফাতিমা সহ স্থানীয় গণ্যামান্য ব্যক্তিবর্গ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন রাসিকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোস্তাফিজ মিশু।