বাগেরহাটে সংসদীয় চারটি আসনের মধ্যে একটি কমিয়ে তিনটি আসন করার চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশের প্রতিবাদে হরতাল ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে ‘সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি’। এতে জেলার অন্তত ২০টি স্থানে গাছে গুঁড়ি ফেলে সড়ক অবরোধের খবর পাওয়া গেছে।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে এ কর্মসূচি শুরু হয়, যা চলবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।
হরতাল-অবরোধের অংশ হিসেবে বাগেরহাট কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে, খুলনা-ঢাকা মহাসড়কের দশানী, নওয়াপাড়া, কাটাখালি, মোল্লাহাট সেতু, বাগেরহাট-পিরোজপুর মহাসড়কের সাইনবোর্ড বাজার, খুলনা-মোংলা মহাসড়কের ফয়লা ও মোংলা বাসস্ট্যান্ডসহ জেলার অন্তত ২০টি স্থানে গাড়ি, গাছের গুঁড়ি ও বেঞ্চ ফেলে অবরোধ করা হয়।
সকাল সাড়ে ৮টার দিকে হরতাল সমর্থনকারীরা জেলা নির্বাচন অফিসের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। পরে মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেয়। এ সময় স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ডা. ফকরুল হাসানের গাড়ি আটকে দেওয়া হয়। তিনি পরে হেঁটে নিজ কার্যালয়ে প্রবেশ করেন।
পৌনে ৯টার দিকে জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল হাসান অফিসে প্রবেশ করতে গেলে তাকেও বাধা দেয়া হয়। পরে তিনি নিজের অফিসে প্রবেশ না করে জেলা ত্রাণ, দুর্যোগ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রবেশ করেন।
এ কর্মসূচিতে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম, সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজাফফর রহমান আলম, জামায়াতে ইসলামী বাগেরহাট আমির মাওলানা রেজাউল করিম, সেক্রেটারি শেখ মুহাম্মদ ইউনুস, মনজুরুল হক রাহাদ, বিএনপি নেতা ফকির তারিকুল ইসলামসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন ছিল। গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই জেলায় একটি আসন কমিয়ে তিনটি করার প্রাথমিক প্রস্তাব দেয়। তখন থেকেই বাগেরহাটের সর্বস্তরের মানুষ এর প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু করে। তারা নির্বাচন কমিশনের গণশুনানিতেও অংশ নেয়। তবে ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন শুধু সীমানা পরিবর্তন করে তিনটি আসনই বহাল রেখে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতাকর্মীরা, যারা মনে করছেন নির্বাচন কমিশন জনগণের দাবি উপেক্ষা করেছে। এরই প্রতিবাদে সোমবার সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয় সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি।