১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বুধবার, ০১:৪২:০৭ পূর্বাহ্ন
নেপালে বিক্ষোভের মুখেও সোশাল মিডিয়া বন্ধ রাখায় অটল প্রধানমন্ত্রী
স্টাফ রিপোর্টার :
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-০৯-২০২৫
নেপালে বিক্ষোভের মুখেও সোশাল মিডিয়া বন্ধ রাখায় অটল প্রধানমন্ত্রী

নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি দেশজুড়ে সহিংস বিক্ষোভ এবং ১৯ জনের মৃত্যুর পরও ২৬টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অন্যান্য অ্যাপের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা মন্ত্রী প্রদীপ পাউডেল সোশাল মিডিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিলেও ওলি বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল এবং তা পুনর্বিবেচনা করা যাবে না। কয়েকটি সূত্র এক মন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে।

ওলি এই অটল অবস্থান জানান দিলেন এমন সময়ে, যখন নেপালি কংগ্রেস কার্যালয়ের বৈঠকেও দ্রুত সোশাল মিডিয়া পুনরায় চালু করার আহ্বান জানানো হচ্ছে।


বৈঠকে উপস্থিত একজন মন্ত্রী জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।

সূত্রের ভাষ্য, রমেশ বলেন, “অনেক প্রাণহানি হয়েছে। নৈতিক দায় নিয়ে আমি পদত্যাগ করেছি। দল ইতোমধ্যেই সোশাল মিডিয়া পুনরায় চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমি এ বিষয়ে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”

সূত্র জানায়, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা মন্ত্রী পাউডেলও বৈঠকে সোশাল মিডিয়া পুনরায় চালুর পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেন।


তবে মন্ত্রিসভায় কোনও সিদ্ধান্ত না হওয়ায় নেপালি কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট শের বাহাদুর দেউবা প্রধানমন্ত্রী ওলির সঙ্গে বৈঠক করতে বালুওয়াতারে যাচ্ছেন।

গত শুক্রবার থেকে নেপালে ফেইসবুক, ইউটিউব, এক্সসহ ২৬টি নিবন্ধনবিহীন প্ল্যাটফর্ম বন্ধ রয়েছে, যা ব্যবহারকারীদের মধ্যে ক্ষোভ ও বিভ্রান্তি তৈরি করেছে।

পার্লামেন্টের কাছে কাঁটাতারের বেড়া ভেঙে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর রাবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস, পানি ছিটানো কামান ও লাঠিচার্জ চালায়।


ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, কাঠমান্ডুর সংসদ ভবন, প্রেসিডেন্টের বাসভবন ও প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। একই ধরনের বিক্ষোভ দেশের অন্যান্য জেলাতেও হয়েছে।

সহিংসতার ঘটনায় দ্রুত ও স্বচ্ছ তদন্তের দাবি জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির মানবাধিকার কার্যালয়ের মুখপাত্র রবিনা শামদাসানি এক বিবৃতিতে বলেন, “নেপালে বিক্ষোভকারী হত্যাকাণ্ড ও আহত হওয়ার ঘটনায় আমরা স্তম্ভিত। দ্রুত ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।”

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও তদন্ত দাবি করেছে এবং জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের ওপর সরাসরি গুলি চালানো হয়েছে।

নেপাল এর আগেও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। চলতি বছরের জুলাইয়ে প্রতারণা ও অর্থপাচারের অভিযোগে টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপ বন্ধ করা হয়েছিল।

আর গত বছর অগাস্টে নয় মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে নেপালি নিয়মকানুন মানতে রাজি হওয়ায় টিকটকের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।

শেয়ার করুন