নাটোরের অদম্য মেধাবী ছাত্রী রোকসানা আক্তার মীম ও মোহনা আক্তার মুন এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েও পরিবারের আর্থিক অনটনের কারণে রয়েছে চরম হতাশায়। পরিবারের অভাব অনটনের কথা চিন্তা করে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েও তাদের মনে নেই কোনো আনন্দ।
সদর উপজেলার ছাতনী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী মুন। তার বাবা জহুরুল ইসলাম দ্বিতীয় বিয়ে করে অন্যত্র থাকেন। তাই সে তার মায়ের সঙ্গে বসবাস করে পন্ডিতগ্রাম বটতলা মোড়ের মামা আব্দুল আজিজ খলিফার বাড়িতে।
মামার বাড়ির এক কোনায় পুরাতন ভাংগা টিনের জোরাতালি দিয়ে কোনো মতে গড়ে তোলা ছোট্ট একটি ঘরে মা মর্জিনা খাতুনের সঙ্গেই তার বসবাস। সেই ঘরে ভাংগা একটি চৌকি ও পড়ার টেবিল ছাড়া নেই আর কোনো আসবাবপত্র। মা নিজে কাজ করে মেয়ের লেখাপড়ার যতটা সম্ভব খরচ যোগান দেন। মুন নিজে প্রাইভেট পড়িয়ে কিছুটা টাকা যোগার করে। আর বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সহযোগিতায় এতদূর আসলেও এখন কিভাবে পড়ালেখা চালাবে তা নিয়ে ভীষণ চিন্তিত তার মা ও মামা। মুন ভবিষ্যতে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখে- সেই স্বপ্ন কি স্বপ্নই থেকে যাবে তা নিয়ে চিন্তাতেই দিন কাটছে তাদের।
অপর দিকে আগদিঘা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী রোকসানা আক্তার মীমের বাবা আব্দুল কুদ্দুস গাজী দূরারোগ্য রোগে আক্রান্ত। তিনি কোনো কাজ-কর্ম করতে পারেন না। তিন বোনের মধ্যে মীম বড়। মা জরিনা বেগম বিভিন্ন কাজ করে মেয়েকে এতদূর নিয়ে আসলেও এখন আর পারছেন না। তাই টাকার অভাবে মেধাবী মীমকে তার মা-বাবা বিয়ে দিয়ে দিতে চান। মীম চায় পড়াশোনা চালিয়ে যেতে। বড় হয়ে ডাক্তার হয়ে তাদের মতো গরীব অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে।
মীম বলেন, এলাকার বাচ্চাদের প্রাইভেট পড়িয়ে সেই টাকা দিয়ে বই, খাতা ও কলম কিনেছি। ইচ্ছে থাকলেও কখনো ভালো পোশাক পড়িনি। মা তো ঠিক মতো খাবারই যোগার করতে পারেন না। এখন বাহিরে পাঠিয়ে উচ্চ শিক্ষা দেওয়ার সাধ্য তার পরিবারের নেই।
মুন ও মীম তাদের শিক্ষা জীবন অব্যহত রাখতে চায়। তাই সমাজের কোনো হৃদয়বান ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তাদের পাশে দাঁড়ালেই শিক্ষাজীবন অব্যহত থাকতে পারে।