১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ১২:৩৯:২৬ পূর্বাহ্ন
২৩ ঘণ্টা ধরে অনশনে জবির পাঁচ শিক্ষার্থী, অসুস্থ ২ জন
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৭-০৯-২০২৫
২৩ ঘণ্টা ধরে অনশনে জবির পাঁচ শিক্ষার্থী, অসুস্থ ২ জন

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচন রূপরেখা ঘোষণা ও সম্পূরক বৃত্তিসহ তিন দফা দাবিতে ২৩ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অনশন চালিয়ে যাচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত পাঁচ শিক্ষার্থী। ইতোমধ্যে দুই শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। 


বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১টা ১০ মিনিট পর্যন্ত এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচে তিন দফা দাবিতে অনশন চালিয়ে যেতে দেখা যায় পাঁচ শিক্ষার্থীকে। এর আগে গতকাল দুপুর ২টা থেকে তিন দফা দাবিতে অনশন শুরু করেন তারা।


এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের অনশনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে খোঁজ-খবর নিতে দেখা যায়। 


ইতোমধ্যে অনশনে অংশ নেওয়া দুই শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তারা হলেন- ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ফয়সাল মুরাদ ও ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ফেরদৌস শেখ। তাদের পেটে ব্যথা, প্রেসার কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে। 


অনশনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের বোটানি বিভাগের একেএম রাকিব, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ফয়সাল মুরাদ, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ফেরদৌস শেখ ও একই শিক্ষাবর্ষের ইতিহাসের শাহিন মিয়া এবং ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অপু মুন্সি। 


অনশনে অংশ নেওয়া জবি শাখা বাংলাদেশ গনতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) সদস্য সচিব শাহিন মিয়া বলেন, আমাদের প্রশাসন পূর্বের ন্যায় একই বাহানা করে যাচ্ছে। আমাদের প্রশাসন হচ্ছে, হবে এ বক্তব্য থেকে বের হতে পারেনি। আমরা আর কোনো তালবাহানা শুনে ঘরে ফিরে যাব না। আমাদের দাবি অবশ্যই অবশ্যই মেনে নিতে হবে, না হলে এই প্রশাসনের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে চলে যেতে হবে।


অনশনে অংশ নেওয়া জবি শাখা বাংলাদেশ গনতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহ্বায়ক ফয়সাল মুরাদ বলেন, ২১ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আমরা অনশনে বসে আছি কিন্তু প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না। ইতোমধ্যে আমিসহ আমাদের একজন সহযোদ্ধা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। 


অনশন কর্মসূচির বিষয়ে জবি ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি একেএম রাকিব বলেন, আমরা এতদিন অবস্থানসহ বেশ কিছু কর্মসূচি করেছি, তাতে প্রশাসন কর্ণপাত করেনি। তাই অনশন দিতে বাধ‍্য হয়েছি। এছাড়া আমাদের উপায় ছিলো না। এই নখদন্তহীন প্রশাসন হয়তো আমাদের দাবি মেনে নিবে নয়তো তাদের নিজেদের রাস্তা মাপতে হবে। 


তিনি আরও বলেন, আমরা শুধু আজ ২০/২২ ঘণ্টা নয় যতক্ষণ শরীরে শেষ রক্তবিন্দু আছে ততক্ষণ অনশন চালিয়ে যাব। এখন আমরা চার-পাঁচজন আছি কিন্তু এ সংখ্যা সকাল থেকে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ক্লাস-পরীক্ষা শেষ করে সবাই আসছে এবং অনেকে এসে সংহতি প্রকাশ করছে আমাদের সঙ্গে। যতক্ষণ না পর্যন্ত আমাদের তিন দফা দাবি আদায় হবে ততক্ষণ পর্যন্ত নিয়ে অনশন চলবে। এর ফলে যদি আমাদের কারো মৃত্যু হয় তাতেও আমাদের আপত্তি নেই কিন্তু এর সম্পূর্ণ দায়ভার অধর্ব বিশ্ববিদ্যালয় প্রসঙ্গে নিতে হবে। 


শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবিগুলো- ১. শিক্ষার্থীদের সম্পূরক বৃত্তি কবে থেকে কার্যকর হবে তা স্পষ্ট করতে হবে। ২. বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। ৩. ক্যাফেটেরিয়ায় ভুর্তকি প্রদান করে স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করা এবং কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে হবে।


শেয়ার করুন