নতুন পে স্কেল ঘোষণার জন্য জাতীয় বেতন কমিশন গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। ইতিমধ্যে বেতন কমিশন বিভিন্ন সুপারিশও গঠন করেছে। তবে পে স্কেল নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার সিদ্ধান্ত নেবে না। নির্বাচিত সরকারের জন্য ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে পে স্কেলের সিদ্ধান্ত।
অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, নতুন পে স্কেলের সিদ্ধান্ত আগামী সরকার নেবে। উপদেষ্টার এ ঘোষণায় বুক ভেঙেছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। আশাহত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পরবর্তী পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।
গতকাল রবিবার (৯ নভেম্বর) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক এবং অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
এদিকে উপদেষ্টার বক্তব্যের বিরোধিতা করেছেন সরকারি চাকরিজীবীদের অনেকে। তারা চাইছেন, বর্তমান সরকারই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিক। ইতঃপূর্বে ১৫ ডিসেম্বরের নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণার জন্য আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন কর্মচারীরা। এখন নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে পে স্কেল কার্যকরের দাবিতে পদক্ষেপ নেবেন তারা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে এমপ্লয়িজ লীগের (বিআরএল) সভাপতি আক্তারুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা আমাদের দাবি রাখব, অন্তর্বর্তী সরকারই নতুন পে স্কেল ঘোষণা করুক। পরবর্তী সরকারের কাছে এ সিদ্ধান্ত গেলে সেটি দীর্ঘায়িত হবে। ১১ বছর ধরে কর্মচারীরা যে অপেক্ষা করেছে, সেটি অপেক্ষাই থেকে যাবে; দুঃখ-কষ্টও বাড়বে।’
বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে আরো কয়েকটি কর্মচারী ফেডারেশন ও সমিতির নেতারা। সরকারের এমন ঘোষণার পর নিজেদের সদস্যদের নিয়ে সভা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সেক্রেটারিয়েট সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আব্দুল খালেক।
পে স্কেল বিলম্বিত হতে পারে বলে কালের কণ্ঠকে জানিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আইনুল ইসলাম। তিনি জানান, পে কমিশনের এই উদ্যোগটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব আগামী নির্বাচিত সরকারের ওপর ঠেলে দিতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমার মতামত হলো এই প্রস্তাব বর্তমান সরকারের পক্ষে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। নতুন যে সরকার আসবে তার ওপর এটার চাপ পড়বে।’
এর আগে পে স্কেল ঘোষণা নিয়ে শঙ্কার কথা জানানো হয়। কর্মচারীদের মধ্যে সংখ্যা ছিল, পাশাপাশি বিভিন্ন বিশ্লেষকেরাও বলেছিলেন নতুন পে স্কেল নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের সরকারের কাছেই গড়াতে পারে। তাদের মতে, এই সরকার কমিশন গঠন করেছে, কমিশন সুপারিশ করবে কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য নির্বাচিত সরকারের কাছেই দায়িত্ব হস্তান্তর করা হবে।
আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ইতিমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নির্বাচনী প্রার্থী ঘোষণা শুরু করেছে। ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে নির্বাচিত সরকারই পে স্কেল নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
জাতীয় বেতন কমিশন আগামী ডিসেম্বর, ২০২৫ মাসের মধ্যে তাদের চূড়ান্ত সুপারিশ সরকারের কাছে জমা দিতে চাইছে। সূত্র বলছে, তাদের সুপারিশ বাস্তবায়ন করবে নির্বাচিত সরকার।

