সিরিয়া থেকে জ্বালানি চুরি করছে মার্কিন সেনারা। জাতিসংঘের কাছে এমনটাই অভিযোগ জানিয়েছে দামেস্ক। এমনকি সিরিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের বহু বছরের দখলদারিত্বের কারণে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির তেল ও গ্যাস খাতে ১০৭ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে।
সোমবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জাতিসংঘ মহাসচিব ও জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতির কাছে লেখা অভিন্ন চিঠিতে এ অভিযোগ জানানো হয়েছে।
বলা হয়েছে, মার্কিন সেনারা যেমন তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলো থেকে জ্বালানি চুরি করছে, তেমনি তাদের ছত্রছায়ায় সিরিয়ায় তৎপর সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোও তেল-গ্যাস চুরি করে বিদেশে পাচার করছে। গ্লোবাল টাইমস। দেশটির তেল ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুসারে, তেল, গ্যাস এবং খনিজসম্পদ চুরির ফলে এই গুরুত্বপূর্ণ খাতটির সরাসরি ক্ষতির পরিমাণ ২৪.২ বিলিয়ন ডলার। আমেরিকার মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস (এসডিএফ) মিলিশিয়া উত্তর-পূর্ব সিরিয়ায় উপস্থিত আমেরিকান বাহিনীর পৃষ্ঠপোষকতায় এ চুরির ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, সিরিয়ার তেল, গ্যাস এবং খনিজসম্পদ আহরণ, চোরাচালান এবং অবৈধ বাণিজ্যের ফলে এই বছরের প্রথমার্ধের শেষ পর্র্যন্ত এই ক্ষতির আনুমানিক মূল্য ১৮.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছিল। এখনো সিরিয়ার তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ অবৈধ বাণিজ্য অব্যাহত রেখেছে এসডিএফ মিলিশিয়ারা। এর আগেও বিভিন্ন প্রতিবেদনে সিরিয়া বলেছে, মার্কিন বাহিনী এবং তাদের মিত্র এসডিএফ জঙ্গিরা প্রায় প্রতিদিনই দেশটির বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল পাচার করে আসছে। শুধু তাই নয়, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর সিরিয়ার তেল, গ্যাস এবং খনিজসম্পদ উত্তোলনের পর পরিবহণের নাশকতা এবং চুরির কারণেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশটি।
মার্কিন সরকার ও তার সহযোগীরা সিরিয়ায় তৎপর আইএস জঙ্গিদের নির্মূল করার অজুহাতে ২০১৪ সালে ইরাকে সেনা মোতায়েন করে। অথচ এই কাজে জাতিসংঘের অনুমোদন বা দামস্কের অনুমতি নেওয়া হয়নি। এ কারণেই নিজ ভ‚খণ্ডে মার্কিন উপস্থিতিকে তার আইনের সম্পূর্ণ লঙ্ঘন বলে মনে করে দামেস্ক। অতীতে অনেকবারই সিরিয়ায় মার্কিন সেনা উপস্থিতির নিন্দা জানিয়ে তাদের প্রত্যাহারের আর্জি তোলে সিরিয়া। তবে পেন্টাগনের দাবি, ওই অঞ্চলের তেলক্ষেত্রগুলোকে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে রক্ষা করার লক্ষ্যেই সেখানে সেনা মোতায়েন করেছে যুক্তরাষ্ট্র।