১৮ মে ২০২৪, শনিবার, ০৮:২৮:৪৯ অপরাহ্ন
পরিধি কমে অর্ধেক তবুও বাড়ল ব্যয়
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-০৫-২০২৪
পরিধি কমে অর্ধেক তবুও বাড়ল ব্যয়

ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো (এনএসডব্লিউ) প্রকল্পের পরিধি কমিয়ে ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। শুরুতে ৫৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের আওতায় একটি সফটওয়্যারে আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত ১৭টি মডিউল ডেভেলপ করার কথা ছিল।

পরে দুদফা প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় ২৪ কোটি টাকা বাড়ানো হলেও কমানো হয়েছে ৮টি মডিউল। এমন প্রেক্ষাপটে প্রকল্পটি ব্যবসা সহজীকরণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে কিনা তা নিয়ে আমদানি-রপ্তানিকারকদের মনে প্রশ্ন উঠেছে।

একইসঙ্গে মডিউল কমানো হলেও ব্যয় বাড়ছে কেন তা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভেতরে-বাইরে সর্বত্র জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে।

আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে গতিশীলতা আনতে এবং ব্যবসা সহজীকরণ সূচকে উন্নতির লক্ষ্যে ২০১৭ সালে এনএসডব্লিউ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। প্রাথমিকভাবে এর প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ৫৮৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক ৫২৯ কোটি টাকা এবং সরকারি খাতে ৫৫ কোটি টাকা অর্থায়ন করার কথা রয়েছে।

এ প্রকল্পের মূল্য উদ্দেশ্য ছিল আমদানি-রপ্তানি আবেদন গ্রহণ, প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানিকারকদের সেবা সহজ করা। এর পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যে খরচ ও সময় সাশ্রয় এবং পণ্য খালাসে দীর্ঘসূত্রতা হ্রাস করা।

প্রকল্পটি ২০২০ সালে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ৪৪ লাখ টাকা ব্যয় কমিয়ে প্রথম দফায় ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়। পরে দ্বিতীয় দফায় প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৬ সাল পর্যন্ত এবং খরচ ২৪ কোটি টাকা বাড়িয়ে ৬০৯ কোটি টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হয়।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, এ প্রকল্পের আওতায় একটি সফটওয়্যারে ১৭টি মডিউল তৈরির কথা ছিল। ২০২১ সালে সরকারি অর্থের অপচয়ের কথা বিবেচনায় নিয়ে সেখান থেকে ৮টি মডিউল প্রস্তুত না করার সিদ্ধান্ত নেয় এনবিআর!

এগুলো হচ্ছ-আমদানি পণ্যের মেনিফেস্টো জমা মডিউল, ডিক্লারেশন মডিউল, ভ্যালুয়েশন মডিউল, অথরাইজড ইকোনমিক অপারেট মডিউল, কাস্টমস ল্যাবরেটরি টেস্টিং মডিউল, কায়িক পরীক্ষা মডিউল, কেস ম্যানেজমেন্ট মডিউল ও ব্যাংক গ্যারান্টি মডিউল। অর্থাৎ প্রকল্প গ্রহণের সময় আমদানি পণ্যের শুল্কায়নসংক্রান্ত সব কার্যক্রম এনএস ডব্লিউ সফটওয়্যারে করার পরিকল্পনা রেখে প্রকল্পের খরচ ও সময় অনুমোদন দেওয়া হয়।

পরে সেগুলো বাদ দেওয়া হয়। এসব কাজ বর্তমানে কাস্টমসের অ্যাসাইকুডা সফটওয়্যারের মাধ্যমে করা হচ্ছে। এ কারণে উল্লিখিত মডিউলগুলো প্রস্তুত করা হচ্ছে না। বর্তমানে প্রকল্পের আওতায় কল সেন্টার মডিউল, স্টেক হোল্ডার রেজিস্ট্রেশন মডিউল, পোর্টাল মডিউল, সিএলপি মডিউল, বিজনেস ইন্টেলিজেন্স/ডাটা অ্যানালাইসিস মডিউল, পেমেন্ট মডিউল প্রস্তুত করা হচ্ছে। অর্থাৎ যেখানে মডিউল কমার কারণে খরচ কমার কথা, সেখানে মডিউল কমিয়ে খরচ বাড়ানো হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দুদফা মেয়াদ বাড়িয়ে প্রকল্পের পরিধি অর্ধেকে নামিয়ে আনার পেছনে কাস্টমসের প্রভাবশালী এক সদস্যের অদৃশ্য হাত রয়েছে। কারণ এনএসডব্লিউ প্রকল্পের সব মডিউল বাস্তবায়ন করা হলে অ্যাসাইকুডা সিস্টেম প্রয়োজনীয়তা হারাত। বর্তমানে সিস্টেম আপগ্রেডেশন ও মেইনটেন্যান্স বাবদ প্রতিবছর মোটা অঙ্কের অর্থ ব্যয় হয়।

শেয়ার করুন