পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন সরকার একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ২০০১ সালে সরকার পরিবর্তন হলে সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আর ফলোআপ করা হয়নি। এমনকি সেই সিদ্ধান্তের কপিও কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না।
মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ৩০তম বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, তৎকালীন পররাষ্ট্র সচিব ছিলেন শফি সামি এবং যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন তারিক করিম। প্রয়োজনে কমিটির পক্ষ থেকে তাদের ডেকে এ বিষয়ে মতামত নেওয়া যেতে পারে।
বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন জানান, প্রতিটি সফরের সময় যুক্তরাষ্ট্রে পলাতক বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিশেল জে সিসন (আগস্ট মাসে) বাংলাদেশ সফরে এলে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। তবে রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি সবসময় আইনি প্রক্রিয়াধীন বলে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) এড়িয়ে যাচ্ছে।
কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান কমিটির পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া দুজন কংগ্রেসম্যানকে বিস্তারিত তথ্য সরবরাহপূর্বক খুনিকে দেশে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে তাদের সহযোগিতার পরামর্শ দেন।
জানা যায়, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক ভারত সফরের ওপর রিপোর্ট উপস্থাপন করা হয়। কমিটি দেশে এবং বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রাখার লক্ষ্যে গঠনমূলক ও ইতিবাচক প্রবন্ধ এবং অনুচ্ছেদ প্রচারের সুপারিশ করে।
বৈঠকে ভূটানে বাংলাদেশের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূতের কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপনের পাশাপাশি দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারের পরামর্শ দেওয়া হয়।
কমিটি সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, নুরুল ইসলাম নাহিদ, গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স, মো. আব্দুল মজিদ খান, মো. হাবিবে মিল্লাত, নাহিম রাজ্জাক ও কাজী নাবিল আহমেদ অংশ নেন।
বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, ভুটানে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত, মন্ত্রণালয় এবং সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।